ব্রু নেতাদের চক্রান্তে সংকটে শরণার্থী প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ নভেম্বর৷৷ কাঞ্চনপুরের বিভিন্ন শিবিরে আশ্রিত রিয়াং শরণার্থীদের জীবনযাপন দূর্বিসহ করে তুলেছে তাদেরই সংগঠনের নেতৃত্বরা৷ বিনামূল্যে রেশন ও নগদ টাকার দাবীকে সামনে রেখে আন্দোলনে নামিয়ে রাস্তায় বসিয়ে সহজ সরল শরণার্থীদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে সংগঠনের নেতত্বরা৷ ওই নেতাদের ষড়যন্ত্রের শিকার হলেন চারজন৷ শিশু, মহিলাসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে চারদিনে৷ খাদ্যের অভাবের তকমা দিয়ে আন্দোলনে গতি আনার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে ওই নেতারা৷ রবিবার মৃত্যু হয়েছে এক বছরের একটি শিশুর এবং ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধার৷


আন্দোলনরত রিয়াং শরণার্থী পরিবারের চারজনের মৃত্যু হয়েছে৷ রবিবার একজন শিশু এবং একজন বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে৷ মোট চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর মিলেছে৷ চারদিন অতিক্রান্ত হয়েছে রিয়াং শরণার্থীদের রাস্তা অবরোধ আন্দোলন৷ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দশদা-আনন্দবাজার সড়কে অবরোধ সংঘটিত করছেন রিয়াং শরণার্থীরা৷ বিনামূল্যে রেশন ও নগদ টাকার দাবীতে এই অবরোধ আন্দোলন সংগঠিত করা হচ্ছে৷ খাদ্যাভাবের দরুণ ওই চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে রিয়াং শরণার্থীদের সংগঠনের তরফ থেকে৷ যদিও প্রশাসনের তরফ থেকে এই ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি৷


সংবাদে প্রকাশ, গত তিনদিনের মতো রবিবারও সকালে নারী পুরুষ মিলে রাস্তা অবরোধ আন্দোলনে সামিল হন৷ এই আন্দোলন চলাকালীন সময়ে এক শিশু ও এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে৷ খাদ্যের অভাবে তাদের মৃত্যু বলে দাবি করা হয়েছে৷ মৃত শিশুর নাম অক্সা মসলই৷ বয়স এক বছর৷ বাবার নাম মুণিরাম মলসই৷ মণিরামের রেশন কার্ড নং ৫২(২)৷ নাইসিংপাড়া ব্লক নং জি৷ অন্যদিকে, বৃদ্ধ মহিলার নাম বস্তিরুম রিয়াং৷ বয়স ৬৫ বছর৷ স্বামী প্রয়াত কোমা রিয়াং৷ নাইসিংপাড়ার রেশনকার্ড নং ১৬৯৷ এদিন, সকালে তাদের মৃত্যু হয়েছে৷ পরে তাদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷


শরণার্থীদের রাস্তা অবরোধ থাকায় গছীরাম, আনন্দবাজার প্রভৃতি এলাকার স্থানীয় সাধারণ মানুষদের জনজীবন মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়েছে৷ দৈনিক চাহিদার বাজারজাত দ্রব্যের দাম যতই বাড়ছে ততই সাধারণ মানুষদের দুর্ভোগ বাড়ছে৷ এখনো রেশন নিয়ে জট না কাটায় এই পথ অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে শরণার্থীরা৷ উত্তর জেলা শাসক, উত্তর ত্রিপুরা পুলিশ সুপার, কাঞ্চনপুর মহকুমা শাসকের মধ্যে কাঞ্চনপুর রেভিনিউ ডাকবাংলায় বৈঠক হয়৷ সেই বৈঠকে শরনার্থী নেতাদের আমন্ত্রণ জানালে তারা অংশ নেয়৷ পরে আলোচনা শেষে আধিকারিকেরা ধর্মনগর ফিরে যান৷ এলাকার বিধায়ক প্রেম কুমার রিয়াং পরিদর্শন করেন অবরোধস্থল৷ বিধায়ক জানান তার পিতাও শরণার্থী শিবিরে একসময় ছিলেন৷ তাই শরণার্থীদের সমস্যা সম্পর্কে তিনি জানেন৷ দ্রুত রেশন প্রদানের দাবি জানিয়েছেন তিনি৷

অন্যদিকে ওয়াইবিএ, বিএসসিও, বিএসএম সহ বেশ কয়েকটি সংস্থার পক্ষ থেকে ২৫ কুন্টাল চাল, সবজি, ডাল, লবণ ইত্যাদি প্রদান করা হয়৷ তবে, আন্দোলনরত শরণার্থীরা জানিয়েছেন, প্রশাসন থেকে আশ্বাস না পেলে তারা খাবার গ্রহণ করবে না এবং অবরোধ আন্দোলন চালিয়ে যাবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *