শরণার্থীদের বিনামূল্যে সামগ্রী ও টাকা না দিলে খাদ্য গুদাম লুটের হুমকি নেতাদের

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৪ অক্টোবর৷৷ উত্তর ত্রিপুরায় শরণার্থী শিবিরে পুনরায় রেশন চালু না করা হলে পথ অবরোধ এবং সরকারি খাদ্য গুদাম লুট করার হুমকি দিয়েছে তিনটি শরণার্থী সংগঠন৷ আজ বৃহস্পতিবার উত্তর ত্রিপুরার জেলাশাসককে লেখা চিঠিতে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ ব্যাপারে তাদের সিদ্ধান্তের কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন৷ তাদের দাবি, শরণার্থী প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ার আগে বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী প্রদান বন্ধ করে দেওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল৷ কারণ, অনাহারে শরণার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন৷


অক্টোবর থেকে ত্রিপুরার ৭-টি শরণার্থী শিবিরে বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী প্রদান বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ কারণ, চুক্তি অনুযায়ী অক্টোবর থেকে মিজোরামে ফিরে যেতে হবে শরণার্থীদের৷ সে মোতাবেক ৩ অক্টোবর থেকে রিয়াং শরণার্থীদের মিজোরামে প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷ ধীরলয়ে হলেও প্রায় প্রতিদিন রিয়াং শরণার্থীরা মিজোরামে ফিরে যাচ্ছেন৷ কিন্তু শরণার্থীদের সংগঠন এই প্রক্রিয়াকে ভেস্তে দিতে উঠে-পড়ে লেগেছে৷


সম্প্রতি আগরতলায় শরণার্থী প্রত্যাবর্তন নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে৷ ওই বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগের বিশেষ সচিব ডা. এপি মহেশ্বরী শরণার্থী নেতৃবৃন্দদের সাফ জানিয়েছেন, মিজোরামে ফিরে না গেলে তাদের কোনও সহায়তা দেওয়া হবে না৷ এমন-কি তাদের কোনও দাবি মানবে না কেন্দ্রীয় সরকার৷


স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রের এই কঠোর অবস্থানে রিয়াং শরণার্থী নেতারা ভীষণ অসন্তষ্ট হয়েছেন৷ কারণ, গত কয়েকদিন ধরেই কাঞ্চনপুর এবং পানিসাগরে শরণার্থী শিবিরগুলিতে রিয়াং শরণার্থীদের তারা মিজোরামে ফিরে না যাওয়ার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে৷ আজ এমবিআইবিএম, বিটিডিএস এবং এমবিডিপিএফ (এইচও) নাইসিংপাড়াস্থিত এই তিনটি শরণার্থী সংগঠন উত্তর ত্রিপুরার জেলাশাসককে শরণার্থী শিবিরে বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী ও নগদ অর্থ প্রদানের অনুরোধ জানিয়েছে৷


জেলাশাসককে লেখা যৌথ স্বাক্ষরিত চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, রেশন সামগ্রী বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল৷ সংগঠনের দাবি, ৩ অক্টোবর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে শরণার্থী প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া৷ কিন্তু রেশনের অভাবে খালি পেটে শরণার্থী প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া চালানো উচিত হবে না৷ কারণ, খাদ্যের অভাবে রিয়াং শরণার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন৷ সংগঠনের আরও দাবি, প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে রিয়াং শরণার্থী শিবিরগুলিতে বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী ও নগদ টাকা প্রদান চালু রাখা উচিত৷


জেলাশাসককে সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা হুমকি দিয়েছেন, অবিলম্বে শরণার্থীদের রেশন সামগ্রী দেওয়া শুরু না হলে তারা পথ অবরোধ করার পাশাপাশি সরকারি খাদ্য গুদামেও লুটপাট করবেন৷ এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্ন হলে তারা দায়ী থাকবেন না৷