নয়াদিল্লি, ২২ অক্টোবর (হি.স.): অবশেষে আইএনএক্স মিডিয়া দুর্নীতি কাণ্ডে সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলায় জামিন পেলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। কিন্তু বন্দিদশা কাটছে না তাঁর। বিচারপতি আর ভানুমতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়েছেন, অন্য কোনও মামলায় হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজন না হলে চিদাম্বরমকে মুক্তি দেওয়া উচিত। আদালত তাকে এক লাখ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দিয়েছেন। পাশাপাশি আদালত চিদাম্বরমকে তদন্তে সহযোগিতা করার নির্দেশও দিয়েছে। আদালতের নির্দেশ, চিদম্বরম দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। তদন্তকারী অফিসাররা যখন ডাকবেন, তখনই তাঁদের সামনে হাজিরা দিতে হবে প্রাক্তন অর্থ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে| আদালতের অনুমতিতে জেল থেকেই গ্রেফতার করে চিদম্বরমকে নিয়ে যাওয়া হয় ইডি হেফাজতে। এ দিন জামিনের পর ইডি হেফাজতেই থাকতে হবে তাঁকে।
পাশাপাশি প্রবীণ কংগ্রেস নেতাকে বাড়ির রান্না করা খাবার, আলাদা সেল, পশ্চিমী কায়দার শৌচাগার, চশমা ও ওষুধ দেওয়ার অনুমতিও দেয় আদালত। আদালত এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছে, এই রায় শুধুমাত্র সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলারই। অন্য মামলা যেমন চলছে তেমন চলবে।
শুনানি চলাকালীন সিবিআই চিদাম্বরমের জামিনের বিরোধিতা করে। অন্যদিকে, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে মিথ্যা বলে চিদাম্বরম জামিনের আহ্বান জানিয়েছিলেন। সিবিআইয়ের পক্ষে সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা জানিয়েছেন, চিদাম্বরম ও তার ছেলে কার্তি চিদাম্বরম এবং কোম্পানি সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। মেহতা আরও জানান, পি চিদম্বরম যে সাক্ষীকে বয়ান দিতে প্রভাবিত করছে তার নাম সিবিআই প্রকাশ করবে না তবে মুখবন্ধ খামে তাঁর নাম আদালতে দেওয়া হবে। উনি বলেন যে সাক্ষী ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় নয়, বরং অন্য কেউ। সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা আশংকা প্রকাশ করে জানান, সাক্ষীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের প্রভাবিত করা হচ্ছে।
তুষার মেহেতা চিদাম্বরমের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, “মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের জিজ্ঞাসা করা না করা পর্যন্ত তাকে জামিন দেওয়া উচিত নয়”। তাঁর কথায়, “সিবিআই কেবল আইএনএক্স চুক্তিই তদন্ত করছে না, বরং চিদাম্বরম অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রচার বোর্ডকে অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর এবং তাঁর পুত্র কার্তি চিদাম্বরমের ভূমিকা নিয়েও তদন্ত চালাচ্ছে|”
চিদাম্বরমের পক্ষের উকিল কপিল সিব্বল জানিয়েছেন, সিবিআই তার অভিযোগপত্রে চিদাম্বরমকে দোষী বলার অভিযোগকে বিচারের সময় তার প্রমাণ হওয়া উচিত। টু-জি কেলেঙ্কারী মামলায় গুরুতর অভিযোগ ছিল এবং তার ফল কী হয়েছে তা সবাই জানে| সিব্বল জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের ১৫ মে থেকে আজ অবধি চিদম্বরমকে কোনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। চিদাম্বরমকে একবারই প্রশ্ন করা হয়েছিল। সিব্বল দাবি করেন, চিদম্বরমের পালিয়ে যাওয়া নিয়ে সিবিআইয়ের অভিযোগ ভুল। সিব্বল অভিযোগ করে জানান, “সিবিআই দুই বছরেরও বেশি সময়ে আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেনি”|
গত ৪ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট চিদম্বরমের জামিনের আবেদনের শুনানি শেষে সিবিআইকে নোটিশ দেয়। ৩০ সেপ্টেম্বর দিল্লি হাইকোর্ট চিদাম্বরমের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল|