নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ অক্টোবর৷৷ শুরু হল রিয়াং প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া ৷ দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে ত্রিপুরার বিভিন্ন শিবিরে আশ্রিত রিয়াং শরণার্থীদের মধ্যে ৪৬ পরিবারের ২৩৩ জন মিজোরামে আজ ফিরে গেছেন৷ তাদের এই প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া নিয়ে এদিন (বৃহস্পতিবার) সকাল ৯-টা পর্যন্ত সংশয় ছিল৷ তবে সকাল ১১টা থেকে তারা মিজোরামের উদ্দেশে রয়ওনা হন৷ মিজোরামের লুংলেই জেলায় নিজেদের গ্রামে ফিরে গিয়েছেন তাঁরা৷

প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালে জাতিদাঙ্গার শিকার হয়ে মিজোরাম থেকে রিয়াংরা ত্রিপুরায় আশ্রয় নেন৷ কাঞ্চনপুর এবং পানিসাগর মহকুমার ছয়টি শিবিরে তারা এতকাল ধরে শরণার্থীর জীবনযাপন করছিলেন৷ ইতিপূর্বে একাধিকবার রিয়াং শরণার্থীদের মিজোরামে প্রত্যাবর্তনের প্রক্রিয়া নেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু প্রতিবারই প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া ভেস্তে গিয়েছে৷ মূলত, ব্রু নেতাদের বিভিন্ন দাবি পূরণের অজুহাতে রিয়াং শরণার্থী প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া বারবার ভেস্তে গিয়েছে৷ কিন্তু এখন কেন্দ্রীয় সরকার তাদের প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া নিয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে৷ মিজোরামে ফিরে না গেলে ত্রিপুরায় আশ্রিত রিয়াং শরণার্থীদের রেশন বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ তবে, মিজোরামে ফিরে গেলে তাদের অন্ন এবং বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷
কেন্দ্রীয় প্রতিশ্রুতি মোতাবেক জমি, এককালীন ৫ লক্ষ টাকা এবং দু বছরের জন্য বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হবে ওই রিয়াং শরণার্থীদের৷ কিন্তু, তাতেও সংশয় দেখা দিয়েছিল রিয়াং শরণার্থী প্রত্যাবর্তনে৷ এরই মধ্যে মিজোরাম সরকার রিয়াং শরণার্থীদের শনাক্তকরণ প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করে৷ কিন্তু, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পর্যাপ্ত জমির ব্যবস্থা করা হচ্ছে না, এই অভিযোগে ব্রু নেতারা মিজোরামে ফিরে যেতে চাইছিলেন না৷
তবে, নির্দেশিকা মোতাবেক প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷ ১ অক্টোবর থেকে প্রত্যাবর্তন শুরু হওয়ার নির্দেশিকা থাকলেও আজ ৩ তারিখ থেকে তা শুরু হয়েছে৷ তাদের মিজোরামে ফিরে নিয়ে যেতে ওই রাজ্যের সরকার পরিবহণ ব্যবস্থাও করেছে৷ গতকাল রাতেই তাদের জন্য প্রয়োজনীয় গাড়ির বন্দোবস্ত করে রেখেছিল মিজোরাম সরকার৷
আজ হাজাছড়া শিবির থেকে ৩৬ পরিবারের ১৮৩জন, নাইসিংপাড়া শিবির থেকে ৪ পরিবারের ২৩জন এবং কাজকাও শিবির থেকে ৬ পরিবারের ২৭ জন রিয়াং শরণার্থী মিজোরামে ফিরে গেছেন৷ মোট ২৩৩ জন মিজোরামে ফিরেছেন৷ এই প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়ায় মিজোরাম সরকারেরর আধিকারিক-সহ উপস্থিত ছিলেন উত্তর ত্রিপুরার জেলাশাসক রেভেল হেমেন্দ্র কুমার, উত্তর ত্রিপুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এফ ডার্লং, কাঞ্চনপুরের মহকুমাশাসক অভেদানন্দ বৈদ্য, কাঞ্চনপুরের এসডিপিও বিক্রমজিৎ শুক্লদাস প্রমুখ৷ এদিকে, উত্তর ত্রিপুরা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৫ অক্টোবর আরেক দফায় রিয়াং শরণার্থী প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুরু হবে৷ তবে, ওইদিন কতজন মিজোরামে ফিরে যাবেন তা এখনও স্থির হয়নি৷

