পরিকাঠামো থেকে শুরু করে বৃত্তি, সমস্যার পাহাড় ব্রজেন্দ্রনগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে

নিজস্ব প্রতিনিধি, চুড়াইবাড়ি, ২০ সেপ্ঢেম্বর৷৷ নানা সমস্যায় জর্জরিত ব্রজেন্দ্রনগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়৷বিদ্যালয়টিতে রয়েছে শিক্ষক স্বল্পতা,ছাত্র ছাত্রীদের ডেস্কের অভাব,৪ বছর যাবৎ স্টাইপেন্ড থেকে বঞ্চিত ছাত্র ছাত্রীরা৷ রয়েছে মিড ডে মিলের নানা অভিযোগ৷ এমনকি শিক্ষক সুকলে আসলেও ক্লাসে যান না এমন গুরুতর অভিযোগ৷এসকল নানা সমস্যা ও অভিযোগে জর্জরিত উত্তরের অতি পুরনো ঐতিহ্যবাহী বজেন্দ্রনগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়৷এই উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অভিযোগ ও সমস্যার অন্ত নেই৷কচিকাঁচা ছাত্র-ছাত্রীদের শুরু করে ক্লাস টুয়েলভের ছাত্র ছাত্রীদের অভিযোগ সুকলে শিক্ষকরা আসলেও সঠিক সময় ক্লাসে যান না৷


বিশেষ করে ক্লাস ইলিভেনের ছাত্র ছাত্রী অভিযোগ করে বলে, রাত পোহালেই তাদের ইংরেজি পরীক্ষা কিন্তু তাদের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক অমরেন্দ্র কুমার মহন্ত অধিকাংশ সময় সুকল কামাই করেন৷ শুধু তাই নয় সুকলে আসলেও স্টাফ রুম ও ক্যান্টিনেই সুকলের সময়টা কাটিয়ে দেন৷কোন ধরনের ক্লাস নেন না ছাত্র- ছাত্রীদের৷ আর রাত পোয়ালেই তাদের ইংরেজি বিভাগের পরীক্ষা কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা অনেকটাই হতাশাগ্রস্থ৷এমনকি বজেন্দ্রনগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বড়জোর চতুর্থ-পঞ্চম পিরিয়ড হয় থাকে,ষষ্ঠ পিরিয়ড আজকে অব্দি হয়নি বলেও ছাত্র- ছাত্রীদের অভিযোগ৷ছাত্রছাত্রীরা সুকলের প্রধান শিক্ষক অমিত কিলিকদারের দিকেও অভিযোগের আঙুল তুলে৷প্রধান শিক্ষক মহোদয় অমিত বাবু বেলা পৌনে বারোটার আগে সুকলে পৌঁছেননা৷ ছাত্র-ছাত্রীদের আর অভিযোগ, সুকলে নেই পর্যাপ্ত পরিমাণে বসার ব্রেঞ্চ৷আদি যুগের মত মেঝেতে বসেই পাঠদান করতে হয় তাদের৷ রয়েছে শিক্ষক স্বল্পতাও৷ নেই সুকলের বাউন্ডারি,ফলে বাইরের বখাটে যুবকরা গাড়ি বাইক নিয়ে সুকলে প্রবেশ করে আর তাতে বেশ কয়েকবার ছাত্রদের দুর্ঘটনাও হয়েছে৷ছাত্র ছাত্রীরা আরো অভিযোগ করে বলে,মিড ডে মিলে তাদের তেমন ভালো খাওয়ানো হয়না৷


মিড ডে মিলের যে ডাইনিং হল রয়েছে সেই বিল্ডিংটি নির্মাণের পর থেকেই বন্ধ৷কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো এ সকল অভিযোগ নিয়ে সংবাদ মাধ্যম সুকলে গেলে মিড ডে মিলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক মিলন কুমার মালাকার প্রথমবারের মতো এই ডাইনিং হলটি খুলে দেন ও ছাত্র-ছাত্রীরা ডাইনিং হলে বসে মিড ডে মিল খাওয়ার সুযোগ পায়৷ কচিকাঁচা ছাত্রছাত্রীরা অভিযোগ করে বলে রোদ বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে খোলা আকাশের নিচেই খাওয়ানো হয় তাদের৷কিন্তু মিড ডে মিল খাওয়ার জন্য যে ডাইনিং হলটি বানানো হয়েছে সেটি সর্বদাই বন্ধ অবস্থায় থাকে৷পাশাপাশি রয়েছে পানীয় জলেরও সমস্যা৷ক্লাস ইলেভেন টুয়েলভের ছাত্র ছাত্রীরা জানায় যে,ক্লাস নাইন থেকে আজকে অব্দি অর্থাৎ ৪ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও কোন ধরনের স্টাইফেন পায়নি ছাত্রছাত্রীরা৷ সে ব্যাপারে ছাত্রছাত্রীরা প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞেস করলে প্রধান শিক্ষক ছাত্রদেরকে ব্যাংকে একাউন্ট চেক করার কথা বলেন৷ব্যাংকে ছাত্রছাত্রীরা তাদের অ্যাকাউন্ট চেক করলে স্টাইফেনের কোন টাকা একাউন্টে ঢুকে নি তাই তারা দীর্ঘদিন থেকে ক্ষোভে ফুঁসছে৷এসকল বিষয় নিয়ে বজেন্দ্র নগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমিত কিলিকদারকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, বজেন্দ্র নগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৭০৩ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে৷ তারমধ্যে ৩৫৩ জন ছাত্র এবং ৩৫০ জন ছাত্রী৷শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র ১৫ জন৷


তার মধ্যে অনেকে নাকি বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ছুটিতেই থাকেন৷তবে অকপটে স্বীকার করেন ছাত্ররা স্টাইপেন থেকে বঞ্চিত ও সুকলে ব্রেঞ্চের অভাব রয়েছে৷পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীরা ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক অমরেন্দ্র কুমার মহন্তের নামে যে অভিযোগ করেছে সেই বিষয়টুকু তিনি দেখবেন বলেও সংবাদ মাধ্যমকে আশ্বস্ত করেন৷তবে তিনি সুকলে ব্রেঞ্চের সমস্যা,বাউন্ডারির সমস্যা নিয়ে ডিস্ট্রিক এডুকেশন অফিসার রিপন চক্রবর্তী মহাশয়ের কাছে অনেকবার লিখিতভাবে জানিয়েছেন কিন্তু উর্দতন কর্তৃপক্ষ বজেন্দ্র নগর সুকলের দিকে নজর দিচ্ছে না বলেও প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য৷ প্রধান শিক্ষক আরও বললেন,উনার সুকলে ২ জন ক্লার্ক রয়েছেন৷ যে দুজন ক্লার্ক রয়েছেন উনারা অনভিজ্ঞ তাই ক্লার্কের কাজটুকু প্রধান শিক্ষক মহাশয়কে করতে হয় বলেও জানান৷ তবে মিড ডে মিলের ড্রাইনিং হলের ব্যাপারটা নিয়ে তিনি ছাত্র ছাত্রীদের অভিযোগ মানতে নারাজ৷তবে বজেন্দ্রনগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক শিক্ষিকারা কতটুকু ছাত্রদের পাঠ দান করে থাকেন তা সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ধরা পড়ল৷আমরা সকলেই জানি জাতির মেরুদন্ড শিক্ষাঙ্গন৷সুকল থেকে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার মাস্টার বৈজ্ঞানিক সকলেই পাঠদান করে তৈরি হন৷কিন্তু রাজ্যের বজেন্দ্রনগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা এ কেমন প্রদান করছেন তা ভাবার বিষয়৷ ছাত্রছাত্রীরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নাম বলছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷শিক্ষামন্ত্রীর নাম ওদের জানা নেই৷ জানেনা কোন জেলায় বাস করে৷আর তাতে একপ্রকার পরিষ্কার হয়ে গেল যে শিক্ষক বাবুরা সুকলে এসে স্টাফ রুম আর কেন্টিনে সুকলের সময়টা কাটিয়ে দিন ক্লাসে না গিয়ে৷


অপরদিকে মিড ডে মিলের চালে পোকা ধরে নষ্ট হয়ে গিয়েছে৷মিড ডে মিলের ইনচার্জ শিক্ষক মিলন কুমার মালাকারের রেজিস্টারের রয়েছে ১১১২ কেজি চাল কিন্তু স্টোরে দেখা গেল ১৩০০ কেজির উপরে চাল৷ তাহলে কোথা থেকে আসলো এত চালের ফারাক৷তাহলে কি খাতায় রেজিস্টারে চাল ব্যয়ের হিসাব ঠিকঠাক করে নিলেও স্টোর থেকে চাল ব্যয় করতে ভুলে গিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক,প্রশ্ণ নানা মহলে৷রাজ্যে নতুন বিজিপি আইপিএফটি জোট সরকার রাজ্যকে এক নতুন দিশায় নিয়ে যাওয়ার চিন্তা ধারা নিয়ে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন৷ রাজ্যের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী অক্লান্ত পরিশ্রম করে শিক্ষাঙ্গনকে আরও উন্নত করতে চাইছেন৷কিন্তু পূর্বের লাল বাড়ির ঘনিষ্ঠ হগব মার্কা শিক্ষকদের কারনে আজও শিক্ষাঙ্গনে ঘুঘুর বাসা৷ছোট ছোট কচিকাঁচা ছাত্র-ছাত্রীদের মিড ডে মিলের খাদ্য
সামগ্রী এভাবে খাতায় পত্রের হিসাব দেখাচ্ছেন আর বাস্তবে ছাত্র-ছাত্রীদের মিড ডে মিল না খাইয়া বাকা পথে ব্যয় করছেন৷


বজেন্দ্র নগর উচ্চ মাধ্যমিক সুকলের ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে এলাকার স্থানীয় অভিভাবকরা জোরালো দাবি তুলেছেন যে, রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর যেন বজেন্দ্রনগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দিকে একটু দৃষ্টি দেন৷নতুবা নবপ্রজন্মের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকে ঝুঁকছে৷ পাশাপাশি স্থানীয় অভিভাবক ও জনগণ রাজ্যের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করছে৷