কলকাতা, ২০ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : নাগরিকপঞ্জি নিয়ে অযথা আতঙ্কিত হবেন না। রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । একইসঙ্গে দিল্লি থেকে ফিরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘অসমের নাগরিকপঞ্জি কংগ্রেসের আমলে শুরু হয়েছিল।’
কলকাতায় ফিরেই এদিন নবান্নে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেখান থেকে বেরোবার মুখে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বাংলায় উস্কানিমূলক মন্তব্য প্রচার করা হচ্ছে । কিন্তু বাংলার সকল মানুষ নিশ্চিত থাকুন, এখানে কোনও এনআরসি হবে না । বাংলায় এনআরসি করতে দেব না ৷ আপনাদের গায়ে হাতে দিতে গেলে মমতার গায়ে আগে হাত দিতে হবে।’
রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনা করতে দিল্লি সফরে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন মুখ্যমন্ত্রী । প্রধানমন্ত্রীকে রাজ্যে দেউচা পাঁচামি কয়লাখনির উদ্বোধনে আমন্ত্রণ জানান মমতা । প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে আসার পর মমতা বলেছিলেন, ‘এনআরসি অসমের বিষয় ।’
দিল্লি সফরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও দেখা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি নিয়ে কথা হয়নি । অসমে ১৯ লক্ষ মানুষ বাদ পড়েছেন । তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বাংলা, হিন্দিভাষী ও গোর্খারা । ভারতীয়দের যেন সুযোগ দেওয়া হয়| ’
শুক্রবার রাজ্যে ফিরে বিমানবন্দরে মমতা বলেন, কংগ্রেস-সিপিএম অপ্রচার করবে । অসম চুক্তি হয়েছিল যখন অগপ ক্ষমতায় ছিল । কংগ্রেসের আমলে এনআরসি হয়েছিল । বাংলায় প্রশ্ন আসে না। হবে না হবে না ।
একইসঙ্গে মমতা আরও বলেন, ‘এনআরসির জন্য বলতে গেলাম । বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের হাতে পড়ে । তাই বলে এলাম দিল্লি গিয়ে।’
পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকায় নাম তোলা ও ডিজিটাল রেশন কার্ড নিয়ে গুজব ছড়িয়েছে । সেই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বস্ত করেন, বাংলায় কোনওভাবেই এনআরসি চালু হবে না ।
এনআরসি নিয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর এতটা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠার কারণ হল, রাজ্যে প্রথম এনআরসি আতঙ্কে আত্মহত্যা করেছেন উত্তরবঙ্গের এক যুবক । শুক্রবার সকালে ময়নাগুড়ি রেলগেটের কাছে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় স্থানীয় বাসিন্দা অন্নদা রায়ের দেহ । তাঁর পরিবারের অভিযোগ, এনআরসি নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছিলেন তিনি । আরও একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে । এছাড়াও নানা জায়গায় এনআরসি আতঙ্কে রাস্তায় নেমে পড়ছে মানুষ ।
এই খবর মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছতেই তিনি এদিন মৃত ব্যক্তিদের পরিবারের জন্যে দু লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেন । তাঁর কথায়, ‘বিজেপি আসলে রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্যেই এনআরসির কথা প্রচার করছে । শুনে রাখুন, আপনাদের কারও গায়ে হাত দিতে হলে আগে আমার গায়ে হাত দিতে হবে। বাংলা ছেড়ে কাউকে যেতে হবে না’। তাঁর সংযোজন, ‘আমি বলছি চিন্তা করার কোনও কারণ নেই, আমার ওপর বিশ্বাস রাখুন’।