শিক্ষক দিবসে ছোটদের নিয়ে বড়দের ক্লাসে ব্যাপক উৎসাহ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৪ সেপ্ঢেম্বর৷৷ ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ড. সর্বোপল্লী রাধাকৃষ্ণানের জন্মদিনটি শিক্ষক দিবস হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়৷ এবছর ৫৮ বছরে পদার্পন করেছে শিক্ষক দিবস৷ শিক্ষকদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে এবং কর্মজীবনে শিক্ষকতা অঙ্গীকার গ্রহণ করতে শিক্ষক দিবসের আগের দিন অর্থাৎ বুধবার রাজধানী আগরতলা শহর সহ রাজ্যের বিভিন্ন সুকলে বড় ক্লাসের ছাত্ররা ছোট ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস নিয়ে শিক্ষকতার প্রতি যথার্থ সম্মান প্রদর্শন করেছে৷


ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ড. সর্বোপল্লী রাধাকৃষ্ণান ছিলেন একাধারে দার্শনিক, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, মানবতাবাদী ব্যক্তিত্ব এবং রাষ্ট্রপ্রধান৷ এতসব পরিচয় থাকা সত্ত্বেও তিনি তার জন্মদিবসটিকে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করতেই ইচ্ছুক প্রকাশ করেছিলেন৷ ১৯৬২ সালে তার গুণগ্রাহীরা যখন তার জন্মদিবস পালন করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন, তখনই তিনি তার মতামত ব্যক্ত করে জন্মদিবসটিকে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন৷ সেই থেকে ৫ই সেপ্ঢেম্বর ড. সর্বোপল্লী রাধাকৃষ্ণানের জন্মদিবসটি শিক্ষক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে৷ শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের হৃদয়ে তিনি চিরজীবী রয়েছেন৷ এবছর ৫৮তম শিক্ষক দিবসেও ড. সর্বোপল্লী রাধাকৃষ্ণানকে নিয়ে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনার অন্ত নেই৷


বিশেষ করে ক্ষয়িষ্ণু সমাজ ব্যবস্থায় শিক্ষকরাও যেখানে আক্রান্ত কিংবা শিক্ষা ব্যবস্থা যেখানে বাণিজ্যিক ব্যবস্থায় পরিগণিত হচ্ছে সেখানে শিক্ষক দিবসই ওইসব মতভেদ দূর করে শিক্ষক ও ছাত্র সমাজকে একই সূত্রে গাঁথার মূলমন্ত্র উচ্চারণ করতে সাহায্য করছে৷ বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষকতার পেশায় আসতে চাইছে না৷ প্রত্যেকেই উচ্চাকাঙ্ক্ষায় ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী কিংবা গবেষক হতে চাইছে৷ তাতে শিক্ষকতায় অনেক ক্ষেত্রেই ঘাটতি পরিলক্ষিত হচ্ছে৷ শিক্ষক দিবস সেই মেধাবী ছাত্রছাত্রীদেরকেও শিক্ষকতায় আকৃষ্ট করতে অনন্য ভূমিকা পালন করবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ সে কারণেই শিক্ষক দিবসের আগের দিনে প্রায় প্রতিটি বিদ্যালয়েই বড় ক্লাসের ছাত্রছাত্রীরা ছোট ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান করে শিক্ষকতার পেশাকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে৷ তারাও ভবিষ্যতে শিক্ষকতার পেশায় যুক্ত হওয়ার অঙ্গীকার গ্রহণ করছে৷ রাজধানী আগরতলা শহরের বিভিন্ন সুকলে এই চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে৷


শিশুর ব্যক্তিসত্ত্বা গঠনে বড় ভূমিকান পালন করছেন শিক্ষকরা৷ দার্শনিক রাধাকৃষ্ণ চেয়েছিলেন সকল মানুষই যাতে এক একজন পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে উঠতে পারেন, সকলের মধ্যেই যাতে একটি বিশ্ব দৃষ্টি তৈরি হয়, কোন প্রকার ক্ষুদ্রতা, নিচতা, সকীর্ণতা যেন মানুষকে আশ্রয় না করে৷ তাহলেই প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠা সম্ভব হবে৷ শিক্ষক দিবসের প্রাক্কালে এটাই হোক সকলের প্রত্যাশা৷