নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৩ আগস্ট৷৷ ত্রিপুরা ভূমিকম্প প্রবল জোনে অবস্থিত৷ তাই, প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবিলায় প্রতিটি নাগরিককে প্রশিক্ষিত করতে হবে৷ এই পরামর্শ দিয়েছেন ত্রিপুরার রাজস্বমন্ত্রী নরেন্দ্রচন্দ্র দেববর্মা৷ ত্রিপুরার প্রাকৃতিক দুযর্োগ মোকাবিলার পরিচালন ব্যবস্থাকে উন্নত করার লক্ষ্যে আজ প্রজ্ঞাভবনে একদিনের কর্মশালার আয়োজন করা হয়৷ কর্মশালার আয়োজক ছিল রাজ্য সরকারের রাজস্ব দফতর৷ কর্মশালায় শহর এলাকায় বন্যা মোকাবিলার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়৷ কর্মশালার উদ্বোধন করে রাজস্বমন্ত্রী নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা এই পরামর্শ দিয়েছেন৷
তাঁর কথায়, আমাদের রাজ্য ভূমিকম্প, বন্যা-সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগের সাক্ষী রয়েছে৷ অতীতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুযর্োগের ফলে রাজ্যের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে৷ প্রাকৃতিক দুযর্োগের ফলে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির থেকে রক্ষা পাওয়ার উদ্দেশ্যে সকলকেই সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি৷ এজন্য এ-ধরনের কর্মশালা আরও বেশি করে আয়োজন করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন রাজস্বমন্ত্রী নরেন্দ্রচন্দ্র দেববর্মা৷
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুযর্োগ মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে সকলের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে৷ রাজ্যের প্রত্যেক নাগরিককে প্রাকৃতিক দুযর্োগ মোকাবিলায় তৈরি থাকার জন্য প্রশিক্ষিত করতে হবে৷ তবেই জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা করা যেতে পারে৷ পাশাপাশি রাজ্যের ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্টকে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে শক্তিশালী করার উপরও গুরুত্ব দিতে হবে৷ আজকের এই কর্মশালায় রাজ্যের ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানকে কীভাবে আরও উন্নীত করা যায় সে বিষয়ে টেকনিক্যাল সেশনে এনডিআরএফ, নর্থ-ইস্ট স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার, এনআইডিএম প্রভৃতি সংস্থা থেকে আগত রিসোর্স পারসনগণ আলোচনা করবেন৷ ফলে রাজ্যের ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্ট আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন রাজস্বমন্ত্রী নরেন্দ্রচন্দ্র দেববর্মা৷
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির ভাষণে নর্থ-ইস্ট স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের অধিকর্তা পিএলএম রাজ বলেন, বন্যা, ভূমিধস, ভূমিকম্পের মতো ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুযর্োগের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়৷ এই ক্ষয়ক্ষতি কমানোর উদ্দেশ্যে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়নের ওপর জোর দিতে হবে৷ এছাড়াও মহাকাশ প্রযুক্তিকে (স্পেস টেকনোলজি) আরও উন্নতীকরণ করতে হবে৷
অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণে রাজস্ব দফতরের প্রধানসচিব বরুণকুমার সাহু বলেন, আজকের এই কর্মশালা আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হল রাজ্যের ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানকে উন্নত করা৷ তিনি জানান, রাজ্যের প্রতিটি মহকুমায় প্রাকৃতিক দুযর্োগ মোকাবিলা করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম রয়েছে৷ প্রাকৃতিক দুযর্োগ মোকাবিলার কাজে যুক্ত বিভিন্ন দফতরের আধিকারিক, কর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবীদের প্রশিক্ষিত করার জন্য গকুলনগরে নোডাল ট্রেনিং ইন্সটটিটিউট রয়েছে৷ রাজ্য সরকারও রাজ্যের ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্টকে শক্তিশালী করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে৷
অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশন্যাল ইনস্টিটিউট অব ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্টের প্রফেসর চন্দন ঘোষ৷ আজকের এই কর্মশালায় এছাড়া উপস্থিত ছিলেন রাজ্য পুলিশের ভারপ্রাপ্ত মহানির্দেশক রাজীব সিং, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকগণ, পুলিশকর্মী, এনএসএস, এনসিসি-সহ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার স্বেচ্ছাসেবীগণ৷ কর্মশালা উপলক্ষ্যে প্রজ্ঞাভবনে প্রাকৃতিক দুযর্োগ মোকাবিলার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জমের ওপর প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়৷ অনুষ্ঠান শুরুর আগে রাজস্বমন্ত্রী নরেন্দ্রচন্দ্র দেববর্মা-সহ অন্যান্য অতিথিগণ সেগুলি ঘুরে দেখেন৷