BRAKING NEWS

সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় : বাংলাদেশ

ঢাকা ২১ আগস্ট (হি. স.) : জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা ও বিশেষ স্বায়ত্তশাসন দেওয়া ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল  ‘ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ।   বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহিঃপ্রচার বিভাগের সহকারি সচিব মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ মনে করে, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশ নীতিগতভাবে সবসময়ই আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় বিশ্বাসী। একইসঙ্গে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা এই অঞ্চলের সব দেশের জন্য অগ্রাধিকার।

সম্প্রতি ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, জম্মু-কাশ্মীরের উন্নয়নের জন্যই ৩৭০ ধারা বিলোপ করা হয়েছে। ৩৭০ ধারা হলো ভারতীয় সংবিধানের একটি অস্থায়ী বিধান (‘টেম্পোরারি প্রভিশন’)। এই ধারার আওতায় জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা ও বিশেষ স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হয়েছিল। ৩৭০ ধারা সংবিধানে অন্তর্ভূক্ত হয়েছিল ১৯৪৯ সালের ১৭ অক্টোবর। এই ধারার আওতায় জম্মু-কাশ্মীরকে ভারতীয় সংবিধানের আওতামুক্ত রাখা হয় (অনুচ্ছেদ ১ ব্যতিরেকে) এবং ওই রাজ্যকে নিজস্ব সংবিধানের খসড়া তৈরির অনুমতি দেওয়া হয়। ৩৭০ ধারা অনুযায়ী প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, অর্থ এবং যোগাযোগ ছাড়া অন্য কোনও বিষয়ে জম্মু কাশ্মিরে হস্তক্ষেপের অধিকার ছিল না কেন্দ্রীয় সরকারের। এমনকি, কোনও আইন প্রণয়নেরও অধিকার ছিল না কেন্দ্র বা সংসদেরও। আইন প্রণয়ন করতে হলে জম্মু-কাশ্মির রাজ্যের সম্মতি নিতে হতো। গত ৫ আগস্ট সেই ৩৭০ নম্বর ধারা বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের ঢাকা সফরের পরপরই এই বিবৃতি প্রকাশ করলো বাংলাদেশ। সোমবার রাতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রাহ্মনিয়াম জয়শঙ্কর বাংলাদেশ সফরে আসেন। সকালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে দেখা করেন। এ সময় অক্টোবরে দ্বিপক্ষীয় সফরে ভারতে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চিঠি তুলে দেন। আজ বুধবার সকালে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন তিনি। এর পরই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানান এবং তার শুভেচ্ছাও মোদীর নিকট পৌঁছে দেওয়ার জন্য বলেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিগত পাঁচ বছরে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক একটি নতুন উচ্চতায় আসীন হয়েছে। তিনি বলেন, এ সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা এবং সহযোগিতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে জয়শংকর বলেন, দু’দেশের জনগণের মধ্যে পরস্পরের দেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রটিকে সহজ করার বিষয়ে বিশ্বাসী ভারত। জয়শংকর এ সময় বাংলাদেশের জ্বালানি ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে তার দেশের আগ্রহ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, দু’দেশের মধ্যে জলবিদ্যুৎ খাতে কার্যকর সহযোগিতার সম্ভাবনা রয়েছে, যেহেতু এর খরচও কম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত তাদের ব্যবসা এবং বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, মোংলা এবং পায়রা বন্দর ব্যবহার করতে পারে। দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রসমূহ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, রেল, সড়ক এবং আকাশ পথে যোগাযোগের  ক্ষেত্রে অনেক রুট ইতিমধ্যে উন্মুক্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে চমৎকার সহযোগিতা বিদ্যমান রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *