BRAKING NEWS

সাত দশকে শহুরে জনস্ফীতির নিরিখে ভারতকে টেক্কা দিয়েছে চিন

কলকাতা, ১৬ আগস্ট (হি. স.): ‘লহ এ নগর’— কবির আকুতির ভাষা যাই হোক আমজনতা কিন্তু নগরমুখীই। দাও ফিরে সে অরণ্য— মুখে যে যাই বলি, গ্রামে থাকার আগ্রহ নেই আমাদের কারও। 

রাষ্ট্রসঙ্ঘের এক সমীক্ষায় ফুটে উঠেছে এ রকম ছবি। শিল্পায়নের সাথে সাথে বেড়েছে নগরায়ন। এতে দেখা যাচ্ছে, ১৯৮০-র মধ্যেই জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ফ্রান্স প্রভৃতি দেশে মাত্রা পেয়েছিল নগরায়ন। চিনের শহুরে জনসংখ্যা চার দশকে বেড়েছে তিন গুন। 

সমীক্ষায় প্রকাশ, ১৯৫০ সালে ব্রিটেন, জার্মানি ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি ছিল শহুরে জনসংখ্যা— যথাক্রমে ৭৯, ৬৮ ও  ৬৪ শতাংশ। ১৯৮০-তে এই তিন দেশে সংশ্লিষ্ট শতাংশ দাঁড়ায় যথাক্রমে ৭৮, ৭৩ ও  ৭৪ শতাংশ। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, ওই তিন দশকে ব্রিটেনে শহুরে জনসংখ্যার শতাংশ সামান্য কমেছে। কিন্তু ২০১৯-এ এই তিন দেশে সংশ্লিষ্ট শতাংশ দাঁড়ায় যথাক্রমে ৮৪, ৭৭ ও ৮২ শতাংশ। 

১৯৫০, ১৯৮০ ও ২০১৯-এ জাপানের জনসংখ্যার যথাক্রমে শহুরের শতাংশ ৫৩, ৭৬ ও ৯২ শতাংশ। রাশিয়ার ৪৪, ৭০ ও ৭৫ শতাংশ। ফ্রান্সের ৫৫, ৭৩ ও ৮১ শতাংশ। লাতিন আমেরিকার ব্রাজিলের ক্ষেত্রে ৩৬, ৩৫ ও ৮৭ শতাংশ।

ভারত ও চিনের ক্ষেত্রে এই শতাংশের হার যথাক্রমে ১৭, ২৩ ও ৩৪ শতাংশ এবং ১২, ১৯ ও ৬০ শতাংশ। এই তালিকায় দেখা যাচ্ছে ভারত, ব্রাজিল ও চিনে শহুরে জনসংখ্যা বেড়েছে তুলনামূলক বেশি| গত ৭০ বছরে এই বৃদ্ধির হার যথাক্রমে দ্বিগুন, প্রায় আড়াইগুন ও পাঁচগুন|

শিক্ষাবিদ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য তথা পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন বিদ্যুৎমন্ত্রী শঙ্কর সেনের মতে, “মহানগরের অর্থ হল গুচ্ছায়িত মানুষ, বাসস্থল ও পরিবহন ব্যবস্থা- ফল জটিল নাগরিক ইকো-ব্যবস্থা। চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ-সুবিধা দুই-ই আছে যার মুখোমুখি হতে হবে সার্বিকভাবে। শহরগুলি হল সৃজন, নব-প্রবর্তন ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং কৃষ্টি-বিকাশের কেন্দ্রস্থল, ফলে এখানে সাধারণত: জিডিপি-র ২০-শতাংশ মতন উৎপাদন করা সম্ভব।

অন্যদিকে, ‘সুন্দর জীবন’-এর আশায় অন্য স্থান থেকে (বিশেষত: গ্রামগুলি থেকে) পাড়ি জমানো মানুষের নিম্নমানের শিক্ষা, জীবন-যাত্রা, দারিদ্র্য ও কর্মহীনতা হল দুঃখজনক বাস্তব। আর সারা বিশ্বে  শহরগুলি ‘শোষণ’ করে উৎপন্ন শক্তির প্রায় ৭০-শতাংশ। রক্ষিত উন্নয়নের মডেল সৃষ্টি করতে হলে এখান থেকেই শুরু করতে হবে।“

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *