নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৯ আগস্ট৷৷ শনিবার গভীর রাতে রাজধানীর জ্যাকশন গেইট সংলগ্ণ এলাকা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় বেসরকারি ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বোধিষত্ব দাসের দেহ উদ্ধার হয়৷ গভীর রাতে দমকল বাহিনীর কর্মীরা আশঙ্কা জনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে জিবি হাসপাতালে নিয়ে যায়৷ এই ঘটনার পর রাতের অন্ধকারে আগরতলা শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ণ দেখা দেয় জনমনে৷ তারপরই পুলিশের কুম্ভ নিদ্রা ভঙ্গ হয়৷ ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে এই হত্যার চেষ্টার ঘটনার সাথে জড়িত শহরের কালিকা জুয়েলারির মালিকের ছোট ছেলে সুমিত চৌধুরী ও সোয়েব মিঞার নাম৷ কাল বিলম্ব না করে পুলিশ দুইজনকে আটক করে৷
তাদেরকে পুলিশ রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে পুলিশ জানতে পারে এই ঘটনার সাথে যুক্ত রয়েছে ট্রাফিক ইন্সপেক্টার সুকান্ত বিশ্বাস৷ যথারীতি মঙ্গলবার তাকে গ্রেপ্তার করে পশ্চিম আগরতলা থানার পুলিশ৷ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে পুলিশ জানতে পারে এই ঘটনার সাথে জড়িত রয়েছে সুমিত বনিক নামে আরও একজন৷ তাকেও পশ্চিম আগরতলা থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে৷ ৭ আগস্ট ধৃত ট্রাফিক ইন্সপেক্টার সুকান্ত বিশ্বাস ও সুমিত বনিককে আদালতে সোপর্দ করলে পুলিশ তাদেরকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেয়৷ তিন দিনের পুলিশ রিমান্ড শেষে তাদেরকে শুক্রবার পুনরায় আদালতে সোপর্দ করা হয়৷ আদালত এইদিন উভয় পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শোনার পর ধৃত গুণধর ট্রাফিক ইন্সপেক্টার সুকান্ত বিশ্বাস ও সুমিত বনিককে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত জেল হাপাজতের নির্দেশ দেয়৷ সরকার পক্ষের আইনজীবী বিদ্যুৎ সূত্রধর সংবাদ প্রতিনিধিদের এই সংবাদ জানান৷তবে শহরের বুকে বেসরকারি ব্যাঙ্ক ম্যানেজারকে হত্যার চেষ্টার ঘটনার দায়ে ট্রাফিক ইন্সপেক্টার সুকান্ত বিশ্বাস গ্রেপ্তার হওয়ার পর বিভিন্ন মহলে চাঞ্চল্য ছড়ায়৷
বাম আমলে নিজেকে লাল বাড়ির ঘনিষ্ঠ পরিচয় দিয়ে আগরতলা শহরে নিজের ছড়ি ঘুরিয়েছিলেন এই গুণধর ট্রাফিক ইন্সপেক্টার৷ সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে গুণধর সুকান্ত বিশ্বাস রাতারাতি নিজের খোলস পাল্টে ফেলেন বলে খবর৷ বাম আমল থেকেও সুকান্ত বিশ্বাসের দাপট কয়েকগুণ বেড়ে যায় নয়া সরকার ক্ষমতায় আসার পর৷ কারন অর্থ ও ক্ষমতালোভী সুকান্ত বিশ্বাস নয়া সরকারের নেতা মন্ত্রীদের পছন্দের পাত্র হয়ে উঠার জন্য কোন ত্রুটি রাখেন নি৷ কিন্তু কথায় আছে রাখে হরি মারে কে৷ গুণধর সুকান্ত বিশ্বাসের ক্ষেত্রেও তাই হল৷ আগরতলা শহরে থেকে ছড়ি ঘুরিয়ে নিজের ক্ষমতা জাহির করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত নিজেই ছড়ি হয়ে যান৷ আগরতলা শহর থেকে বদলি হতে হয় ধর্মনগরে৷
কালক্রমে গুণধর সুকান্ত কোটি পতি হওয়ার স্বপ্ণ দেখতে শুরু করে বলে খবর৷ আরও খবর এই গুণধর ট্রাফিক ইন্সপেক্টার সুকান্ত বিশ্বাস নেশারকারবারের সাথে জরিয়ে গিয়েছিল৷ আর সেই নেশারকারবারের আর্থিক লেনদেনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বুকে বেসরকারি ব্যাঙ্ক ম্যানেজারকে হত্যার চেষ্টার সাথে জরিয়ে যায় গুণধর সুকান্ত৷ যতটুকু খবর একাংশ পুলিশ কর্মী সুকান্ত বিশ্বাসকে বাঁচানোর জন্য প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে৷ তবে পুলিশ এখনো তদন্ত জারি রেখেছে৷ ১৯ আগস্ট জেল হেপাজত শেষে ট্রাফিক ইন্সপেক্টার সুকান্ত বিশ্বাস ও সুমিত বনিককে পুনরায় আদালতে সোপর্দ করা হবে৷