নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩০ জুলাই৷৷ ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়ত নির্বাচনে রাজ্যে মঙ্গলবার সাতটি বুথে পুনরায় ভোট হয়েছে৷ ৭৬ শতাংশ ভোট পড়েছে আজ৷ এই খবর দিয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সচিব প্রসেনজিত ভট্টাচার্য৷ তাঁর কথায়, কুমারঘাট ব্লকে ছয়টি এবং কদমতলা ব্লকে একটি বুথে আজ পুনরায় ভোট সম্পন্ন হয়েছে৷ তিনি জানান, আগামীকাল সকাল আটটা থেকে ভোটের গণনা শুরু হবে৷
গত ২৭ জুলাই ত্রিপুরায় ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে কুমারঘাট ও কদমতলা ব্লকের সাতটি বুথে ব্যালট পেপারে ত্রুটি ধরা পড়েছিল৷ মুদ্রণজনিত ত্রুটির কারণে ওই সাতটি বুথে ভোট বাতিল করেছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন৷ ফলে, আজ ওই সাতটি বুথে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সচিব জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আজ ওই সতটি বুথে ভোট হয়েছে৷ কোথাও কোনও গণ্ডগোলের খবর আপাতত মিলেনি৷ তিনি জানান, আজ ওই সাতটি বুথে ৭৬ শতাংশ ভোট পড়েছে৷
এদিকে, আগামীকাল সকাল আটটা থেকে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোট গণনা শুরু হবে৷ প্রসেনজিতবাবুর কথায়, সারা ত্রিপুরায় ৩১টি কেন্দ্রে গণনা শুরু হবে৷ তাঁর দাবি, গণনাকে ঘিরে কড়া নিরপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকে তীক্ষ্ন নজর রাখবেন নিরাপত্তা কর্মীরা৷
আজ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সচিব গণনায় নিরাপত্তা নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন৷ মূলত, বিরোধীরা আজ রাজ্য পুলিশের কাছে গণনায় নিরাপত্তা সুনিশ্চিতের দাবিতে ডেপুটেশন দিয়েছেন৷ এ-বিষয়ে প্রসেনজিতবাবুর বক্তব্য, রাজনৈতিক দলগুলি নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নানান দাবি উত্থাপন করে থাকে৷ কিন্তু, গণনায় নিরাপত্তা নিয়ে কোনও আপস করবে না রাজ্য নির্বাচন কমিশন৷ ফলে, বিরোধীদের গণনায় নিরাপত্তা নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে বলেছেন তিনি৷
এদিকে, আগামীকাল গণনাকে ঘিরে সংশ্লিষ্ট ব্লক এলাকায় আজ রাত ৯-টা থেকে আগামীকাল গণনা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বলবৎ করেছে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন৷ প্রশাসনের নির্দেশিকা মোতাবেক গণনা কেন্দ্রের চারপাশের ২০০ মিটার এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকবে৷ ফলে, ওই এলাকায় কোনও ব্যক্তি কোন ধরনের আগ্ণেয়াস্ত্র, লোহার রড, লাঠি, দা, স্টিক-সহ কোনও ধরনের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করতে পারবেন না৷ শুধু তা-ই নয়, পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির একসাথে চলাফেরা ও জমায়েতের উপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে৷ এছাড়া, দুয়ের বেশি গাড়ি এক সাথে চলাচলে এবং বাইকের পেছনে কেউ বসার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন গণনা কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন৷
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরায় ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতে ৯৯৪টি আসনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ২,৪৩৮জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন৷ মূলত, ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে গ্রাম পঞ্চায়েতে ৬,১১১টি, পঞ্চায়েত সমিতিতে ৪১৯টি এবং জেলা পরিষদে ১১৬টি আসন রয়েছে৷ তার মধ্যে গ্রাম পঞ্চায়েতে ৮৩৩টি, পঞ্চায়েত সমিতিতে ৮২টি এবং জেলা পরিষদের ৭৯টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে৷ এদিকে, শাসক দল বিজেপি ৮৫.৪ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে৷