BRAKING NEWS

রোগ সারাই না হওয়ায় কবিরাজকে তুলে নিয়ে গণপ্রহার কল্যাণপুরে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩০ জুলাই৷৷ আধুনিক বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের যুগে ওঝা, বৈদ্য, কবিরাজদের দিন ফুরিয়ে গেছে৷ কিন্তু এখনও গ্রামে গঞ্জে একাংশ মানুষ কুসংস্কারে আচ্ছন্ন হয়ে ওঝা, বৈদ্য কবিরাজের দ্বারস্থ হচ্ছেন৷ কিন্তু রোগব্যাধি দূর না হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায়ই নানা স্থানে নানা অঘটন ঘটে চলেছে৷ অনেক ক্ষেত্রে আইন হাতে তুলে নিয়ে ওঝা বৈদ্য কবিরাজ কিংবা ডাইনি আখ্যায়িত করে বেদম প্রহার এমনকি অনেক ক্ষেত্রে জীবনহানির মতো ঘটনাও সংগঠিত করা হচ্ছে৷ এধরনেরই এক ঘটনার সাক্ষি রইলো খোয়াই জেলার কল্যাণপুর থানা এলাকার ঘিলাতলি গ্রাম পঞ্চায়েতের সত্যগুরু পাড়া৷


ওই এলাকার বাবুল গৌর নামে এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরেই কবিরাজ হিসেবে এলাকায় পরিচিত৷ আবার অনেকে তাকে ওঝা, বৈদ্য বলেও মনে করেন৷ সেই সুবাদে নানা কারণে মানুষ তার কাছে যান৷ কিন্তু সুফল কতটুকু মিলে তানিয়ে সন্দেহ রয়েই গেছে৷ এরই ফলশ্রুতিতে বাবুল গৌরকে সোমবার রাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গণপ্রহারে গুরুতরভাবে জখম করেন কিছু লোকজন৷ শুধু তাই নয়, তার মাথার চুল সেঁটে দিয়ে এলাকা প্রদর্শনও করা হয়েছে৷ তারপর অসহায় কবিরাজ বাবুল গৌর কোনক্রমে বাড়িতে ফিরে এলে ওইসব উত্তেজিত লোকজনরা পুনরায় বাড়িতে এসে মারধর করে৷ তাতে গুরুতরভাবে জখম হয় বাবুল গৌর৷


ঘটনার খবর পেয়ে কল্যাণপুর থানার পুলিশ তার বাড়িতে ছুটে যায়৷ সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাবুল গৌরকে উদ্ধার করে কল্যাণপুর থানায় নিয়ে আসে পুলিশ৷ তার শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি ঘটায় কল্যাণপুর হাসপাতাল থেকে জিবি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে৷ এ ব্যাপারে আক্রান্ত বাবুল গৌরের পুত্র বিশ্বজিত গৌর কল্যাণপুর থানায় অভিযুক্ত কয়েকজনের নামধান উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছে৷ পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে৷ তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তারের সংবাদ নেই৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকার শুভবুদ্ধি সম্পন্ন একাংশ মানুষের মধ্যেও তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে৷ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠেছে৷

উল্লেখ্য, রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে চলেছে৷ গ্রাম ত্রিপুরার একাংশ মানুষজনদের মধ্যে অশিক্ষা কু-শিক্ষা ও কুসংস্কার এইসব বেআইনি কাজকর্মে উৎসাহ যোগাচ্ছে৷ এজন্য প্রয়োজন মানুষের মধ্যে আধুনিক বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও চিকিৎসা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা৷ ওঝা বৈদ্যদের কাছে না গিয়ে হাসপাতালে কিংবা চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসার জন্য আসার মানসিকতায় তাদেরকে তৈরি করতে হবে৷ অন্যথায় বিজ্ঞান ও চিকিৎসার গতি যতই উন্নত হোক না কেন তাদেরকে কুসংস্কারমুক্ত করা যাবে না৷ এজন্য সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্লাব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সমাজসেবীদের এগিয়ে আসা জরুরি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *