নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৬ জুলাই৷৷ রাজ্যের পরিকাঠামো উন্নয়নে স্থানীয়দের অগ্রাধিকারে গুরুত্ব দিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তাঁর মতে, ত্রিপুরার উন্নয়ন সম্ভব হবে স্থানীয়দের সমৃদ্ধির মাধ্যমে৷ তাই, তাঁদের প্রতি বিশেষ নজর দিতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷
শুক্রবার সচিবালয়ে ত্রিপুরা ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড বোর্ডের প্রথম সভা মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের পৌরোহিত্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ প্রসঙ্গত, পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে উন্নয়নের জন্য দ্যা ত্রিপুরা ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড বোর্ড অ্যাক্ট ২০১৮ অনুযায়ী ত্রিপুরা ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড বোর্ড গঠন করা হয়েছিল৷ ১৪ সদস্য বিশিষ্ট এই বোর্ডের চেয়ারম্যান হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এবং ভাইস চেয়ারম্যান উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা৷
আজকের সভায় বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, পরিকাঠামো ক্ষেত্রে উন্নয়নমূলক কাজ রূপায়ণে বিভিন্ন সামগ্রী সরবরাহ ও নির্মাণ কাজে স্থানীয়দের অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়টি দেখতে হবে৷ তা-হলে পরিকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি স্থানীয়দের জন্য কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে, তিনি মনে করেন৷ মুখ্যমন্ত্রীর মতে, স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন কাজে সামগ্রী সরবরাহের ব্যবস্থা হলে ত্রিপুরাতেই এইসব সামগ্রীর উৎপাদন শুরু হবে৷ এতে পরিবহণ খরচ যেমন কম হবে, ঘটবে শিল্পের প্রসারও৷ তাঁর দাবি, স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন সামগ্রী সরবরাহ পদ্ধতি দেখে বহির্রাজ্য থেকে উদ্যোগপতিরা এখানে শিল্প স্থাপনে আগ্রহী হবেন৷
এদিনের সভায় ত্রিপুরা ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা বলেন, রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নের জন্য পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে উন্নয়ন করতে হবে৷ এদিকে আজ সভায় মুখ্যসচিব ইউ ভেঙ্কটেশ্বরলুও আলোচনায় অংশ নেন৷ আলোচনার সময় অতিরিক্ত মুখ্যসচিব মনোজ কুমার রাজ্যে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে উন্নয়নের জন্য যে আর্থিক যোগান প্রয়োজন ত্রিপুরা ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড বোর্ড কীভাবে তার সংস্থান করতে পারে সে সম্পর্কে সভায় আলোকপাত করেন৷
আজকের সভায় ত্রিপুরা ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড বোর্ড অ্যাক্ট ২০১৮-এর বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে৷ কৃষি সম্পর্কিত পরিকাঠামো, বিল্ডিং, পানীয় জল, শিক্ষা, মৎস্য, স্বাস্থ্য, তথ্য প্রযুক্তি, যোগাযোগ ব্যবস্থা, জলসেচ, জলবন্দর, স্থলবন্দর, বিদ্যুৎ, পর্যটন, পরিবহণ ইত্যাদি ২৩টি তালিকাভুক্ত বিষয়ে পরিকাঠামো উন্নয়নে বোর্ড কাজ করবে বলে সভায় জানানো হয়েছে৷ এর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র চিহিণত করে কাজ করবে বোর্ড, এই বিষয়টিও আলোচনায় উঠে এসেছে৷
এছাড়াও এদিনের সভায় বোর্ডের প্রাথমিক কাজকর্ম পরিচালনার জন্য একটি টেকনিক্যাল কমিটি এবং একটি ফিনান্স কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ ত্রিপুরা ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড বোর্ড কোন কোন ক্ষেত্র থেকে আর্থিক সংস্থান করবে এই সম্পর্কেও এদিনের সভায় আলোচনা হয়েছে৷ সাথে বোর্ডের কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কেও আলোকপাত করা হয়েছে৷ সভায় প্রাথমিকভাবে গ্রামীণ ও শহর এলাকায় বিভিন্ন অর্ধসমাপ্ত কাজগুলি সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে৷ সিদ্ধান্ত হয়েছে, আর্থিক সংকুলানের উপর নির্ভর করে নতুন প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়া হবে৷