নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৪ জুলাই ৷৷ সারা ভারত মেধা অন্বেষণ পরীক্ষায় গত ৩ বছরে ত্রিপুরার কোনও ছাত্র ছাত্রী সাফল্য অর্জন করতে পারেনি৷ কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ সংক্ষরিত আসন ত্রিপুরার ছাত্র ছাত্রীরা সুযোগ নিতে পারেনি৷ তাই, রাজ্য সরকার ৭৫ হাজার ছাত্র ছাত্রীকে ওই পরীক্ষায় যোগ্যতা অর্জনে যোগ্য করে তোলার উদ্যোগ নিতে চলেছে৷ তাই, উচ্চ বুনিয়াদী স্তরে বিজ্ঞানের পৃথক শাখা খুলতে চলেছে রাজ্য সরকার৷ সম্ভবত, আগামীকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য পেশ করবে শিক্ষা দপ্তর৷
সূত্রের খবর, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে পাঠরত সরকারি, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত, কেন্দ্রীয় এবং বেসরকারি বিদ্যালয়ের ৪০০ ছাত্র ছাত্রীদের বিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ে বৃত্তি প্রদান করবে রাজ্য সরকার৷ এই লক্ষ্যেই বিজ্ঞানের পৃথক শাখা খুলতে চলেছে রাজ্য সরকার৷ সূত্রের দাবি, রাজ্যের ছাত্র ছাত্রীদের বিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ে আকর্ষণ খুবই কম৷ ফলে, বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা তারা নিতে ব্যর্থ হন৷ সূত্রের কথায়, এবছর একাদশ শ্রেণীতে ৩২,২২৩ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়েছেন৷ তাদের মধ্যে জীববিজ্ঞানে ৩৬৯০ জন এবং ভৌত বিজ্ঞানে ৩১১৪ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়েছেন৷
প্রসঙ্গত, সারা ভারত মেধা অন্বেষণ পরীক্ষায় কেন্দ্রীয় সরকার ত্রিপুরাকে নির্দিষ্ট সংক্ষরিত আসন বরাদ্দ করেছে৷ দুর্ভাগ্যবশত গত ৩ বছরে ত্রিপুরার ছাত্রছাত্রীরা সেই সুযোগ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন৷ সূত্রের দাবি, ২০১৬ সালে ১২০০ ছাত্রছাত্রী ওই পরীক্ষায় আবেদন করেছিলেন৷ তাদের মধ্যে ৯৩৩জন পরীক্ষা দিয়েছেন এবং তাদের মধ্যে ১০৬ জন প্রথম ধাপে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন৷ কিন্তু, দ্বিতীয় ধাঁপে গিয়ে কেউ উত্তীর্ণ হতে পারেননি৷ একই ভাবে ২০১৭ সালে ১৪২৭ জন ছাত্রছাত্রী আবেদন জানিয়েছিলেন৷ তাদের মধ্যে ১২১৮ পরীক্ষা দিয়েছিলেন এবং প্রথম ধাঁপে ১০৩ জন উত্তীর্ণ হলেও তারা কেউই দ্বিতীয় ধাঁপে উত্তীর্ণ হতে পারেননি৷ তেমনি ২০১৮ সালে ১১১০ জন আবেদন জানিয়েছিলেন এবং তাদের মধ্যে ৯১৭ জন পরীক্ষায় বসেছিলেন৷ প্রথম ১৭৭ জন উত্তীর্ণ হলেও দ্বিতীয় ধাঁপে ১ জনও বাছাই হননি৷ স্বাভাবিক ভাবেই গত ৩ বছরের কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ সংরক্ষিত আসনগুলি খালি পড়ে রয়েছে৷
সূত্রের দাবি, বিজ্ঞানের পৃথক শাখা খোলা হলে ছাত্রছাত্রীদের পৃথক ভাবে যত্ন নেওয়া সম্ভব হবে৷ এর জন্য আলাদাভাবে বাজেটে অর্থ বরাদ্দ করা হবে৷ সূত্রের খবর, বিজ্ঞানের পৃথক শাখা খুলতে গিয়ে ৪ জন বিশেষ শিক্ষক সাথে মূলায়নের আধিকারীক, ২ জন এলডি ক্লার্ক, একজন অফিস সুপার এবং একজন একাউন্টেন্ট নিয়োগ করা হবে৷ প্রতি বছর ডিসেম্বরে নবম শ্রেণীতে বিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ে মেধা অন্বেষণ পরীক্ষা পৃথক ভাবে নেওয়া হবে৷
সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার সরকারি, অনুদানপ্রাপ্ত, কেন্দ্রীয় এবং বেসরকারি সুকলের ৭৫ হাজার ছাত্রছাত্রীদের মেধা অন্বেষণ পরীক্ষায় যোগ্যতা অর্জনে যোগ্য করে তোলার লক্ষ্যমাত্রা নেবে৷ তাদের মধ্যে বিজ্ঞান এবং গণিত বিষয়ের ২০০ জন করে ছাত্রছাত্রী ওই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে৷ সরকারি এবং সরকারি অনূুদান প্রাপ্ত সুকলগুলিতে পরীক্ষার ফি ধার্য করা হবে ৫০ টাকা এবং বেসরকারি সুকলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য ফি ধার্য্য করা হবে ১০০ টাকা৷ সূত্রের খবর, অষ্টম শ্রেণীতে প্রাপ্ত নম্বর কাটফ মার্কস হিসেবে বিবেচিত হবে না এবং ওই পরীক্ষা সম্পূর্ণই এমসিকিউ পদ্ধতিতে নেওয়া হবে৷ পরবর্তী সময়ে ৪০০ ছাত্রছাত্রীকে মেধা বৃত্তি প্রদান করা হবে৷
তারা দেড় বছর প্রতি মাসে ৫০০ টাকা মেধা বৃত্তি পাবেন৷ সূত্রের কথায়, সরকারি এবং সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত বিদ্যালয়গুলি থেকে ৬০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী বাছাই করা হবে৷ বাকি বেসরকারি বিদ্যালযের ছাত্রছাত্রীরা সুযোগ পাবেন৷ প্রসঙ্গত, সর্বোচ্চ নম্বর অর্জনকারী ১০০ জন ছাত্রছাত্রীকে পৃথক ভাবে পুরসৃকত করা হবে৷ পাশাপাশি কোনও বিদ্যালয়ের ৫ বা তার বেশি সংখ্যক ছাত্রছাত্রী মেধা তালিকায় বাঁছাই হলে ওই বিদ্যালয়কে পৃথক ভাবে পুরস্কার দেওয়া হবে৷ সূত্রের দাবি, ওই বিদ্যালয় ১ লক্ষ টাকা পুরস্কার পাবে৷ সম্ভবত, আগামীকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য পেশ করবে শিক্ষা দপ্তর৷