করিমগঞ্জ (অসম), ২৫ জুলাই (হি.স.) : রাজ্যের বিভিন্ন কারাগার তথা ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি তিন মহিলা-সহ ৩০ জন বাংলাদেশি নাগরিককে বৃহস্পতিবার করিমগঞ্জ শহরের কালীবাড়ি সংলগ্ন ফেরি কাস্টমস ঘাট দিয়ে কুশিয়ারা নদী পার করে তাঁদের স্বদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এই সব বাংলাদেশি নাগরিককে তাঁদের স্বদেশে পাঠাতে অসম তথা কেন্দ্রীয় সরকার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্ৰহণ করেছিল।
বাংলাদেশি তিরিশজন নাগরিককে ভারতীয় সীমান্ত শাখার সহযোগিতায় অসম পুলিশের সীমান্ত শাখা আজ সকালের দিকে করিমগঞ্জ শহরে ফেরি কাস্টমস ঘাট দিয়ে কুশিয়ারা নদী পার করে বাংলাদেশের সিলেট জেলার জকিগঞ্জ কাস্টমস ঘাটে সে দেশের শীর্ষ সরকারি আধিকারিক এবং বিজিবি কর্তৃপক্ষের হাতে সমঝে দিয়েছেন ভারতীয় অফিসাররা। এঁদের বিএসএফ-এর ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে পাঁচজন করে ওপারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২২ জুলাই শিলচরে ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষা জেলার জেলাশাসক স্তরের বৈঠকে এঁদের নিজের দেশে প্ৰত্যৰ্পণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেদিন দু দেশের প্রশানিক বৈঠকে এছাড়াও বংলাদেশে বন্দি কতিপয় ভারতীয়কে এ-দেশে প্রত্যর্পণ নিয়েও সমঝোতা হয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী এই প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, আজ যে–সব বাংলাদেশি নাগরিককে পাঠানো হয়েছে তাঁদের গত তিন থেকে চার বছর আগে বিভিন্ন সময় কাছাড়, করিমগঞ্জ, শোণিতপুর, ধেমাজি, মরিগাঁও, হোজাই, নলবাড়ি, শিবসাগর, গোলাঘাট, কামরূপ মহানগর (গুয়াহাটি), বাকসা, কোকরাঝাড়, বঙাইগাঁও, ধুবড়ি, ধেমাজি, কারবি আংলং, ডিব্ৰুগড়, ওদালগুড়ি এবং মানকাচর জেলার নানা স্থান থেকে আটক করে হয়েছিল। পরবর্তীতে অসমের বিদেশি ট্রাইব্যুনালের বিচারে তাঁদের বাংলাদেশি বলে শনাক্ত করে শিলচর, কোকরাঝাড়, তেজপুর, বঙাইগাঁও ইত্যাদি জেলার কেন্দ্রীয় কারাগারের ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছিল। আজ প্রত্যর্পিত ৩০ জন বাংলাদেশের ২০টি জেলার বাসিন্দা।
বংলাদেশে আজ যাঁদের পাঠানো হয়েছে তাঁরা যথাক্রমে নুরুল আলম, আব্দুল কালাম আজাদ, নাহিদউল হক, বাবুল সরদার, মহম্মদ জাভেদ, আরিফুল হাকিম, মমিন আলম, মজাহর মোল্লা, সাদ্দাম হুসেন, জাহাঙ্গির আলম, ফজর আলি মোল্লা, আজিবর পেয়াদা, কাৰ্তিক চন্দ্ৰ শীল, ইউনুস আলি, নুর মহম্মদ গাজি, সুচিত্ৰা বিশ্বাস, সালেহা আখতার, আসমা বেগম, আব্দুল কুদ্দুস, নুরল আমিন, চাঁদ মিঞা, ইলিয়াস আলি, জাহাঙ্গির আলম, লক্ষণ চক্ৰবৰ্তী, জাহাঙ্গির আলম, আব্দুল কালাম মোল্লা, মহম্মদ আব্দুল্লা, আবদুল কাসিম, আবুল করিম, আশিস দাস।
এর আগে গত ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে যথাক্রমে ১০ এবং আটজন বাংলাদেশি নাগরিককে করিমগঞ্জের কুশিয়ারা এবং সুতারকান্দি সীমান্ত দিয়ে তাঁদের স্বদেশে পাঠানো হয়েছিল। তার পর চলতি বছরের ১৯ জনুয়ারি আরও ২১ জন, ৪ মে ২০ জন বাংলাদেশিকে করিমগঞ্জ জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছিল ভারত সরকার।