নিজস্ব প্রতিনিধি, উদয়পুর, ১৬ জুলাই ৷৷ বহিঃরাজ্যের কলেজে ভর্তি হওয়ার আশায় গিয়ে কফিন বন্দি হয়ে নিজ ঘরে ফেরার অপেক্ষায় মেধাবী ছাত্রী নিকিতা সেনগুপ্ত ওরফে রিয়া৷ কলকাতালর সল্টলেকে বাইক দূর্ঘটনায় প্রাণ হারায় উদয়পুরের ছাত্রী রিয়া৷ অভিযোগ উঠেছে দূর্ঘটনাগ্রস্ত রিয়াকে পরপর তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলেও চিকিৎসকরা রিয়ার অবস্থা সংকটজনক হওয়ায় চিকিৎসা করতে রাজি হয়নি৷ পরে সরকারী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ ততক্ষণে রিয়ার জীবনদীপ নিভে যায়৷
শান্তি নিকেতন থেকে ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পর আজ মঙ্গলবার কলকাতা স্থিত টেকনো ইন্ডিয়াতে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল রিয়ার৷ কলকাতায় বেলেঘাটা এলাকায় চার বান্ধবী একসাথে ভাড়া থাকতো৷ মঙ্গলবার রাত আনুমানিক চারটায় রিয়ার বান্ধবী তোরা দাস রিয়াকে বলে ওর ক্ষুধা পেয়েছে৷ তখন ওরা দুজন দুই বন্ধু শুভম দাস ও শানু সিনহাকে খবর দেয়৷ শুভমের বাড়ি আগরতলার ধলেশ্বর এলাকার৷ শানুর বাড়ি বিহার৷ শুভম ও শানুর বাইকে রিয়া ও তোরা উঠেছিল৷ নিউ টাউন এলাকার ইউনি কেইক-
এর দোকানে তোরা দাস টিফিন করে৷ রিয়া শুভমের বাইকে ছিলো৷ শুভম প্রচন্ড গতিতে বাইক চালাচ্ছিলো৷ নিউ টাউন এলাকায় নতুন ফ্ল্যাট তৈরীর জন্য রাস্তায় স্পিড ব্রেকারে সজোরে ব্রেক কষলে শুভমের বাইক থেকে রিয়া ছিটকে পরে যায় ও গুরুতর আহত হয়৷ আহত অবস্থায় তিন চারটে বেসরকারি নার্সিং হোমে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে রোগীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সেখান থেকে ফেরৎ দেওয়ায় অবস্থা আরো খারাপ হয়, পরবর্তীতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে রিয়া৷
এখানে উল্লেখ থাকে যে রিয়ার বাবা রাজীব সেন মেয়ে রিয়াকে কলকাতাস্থিত টেকনো ইন্ডিয়াতে ভর্তি করাবেন বলে ভাড়া বাড়িতে রিয়াকে নিয়ে গত চার দিনে অনেক আসবাবপত্র কিনেছেন৷ আজ মঙ্গলবার রিয়ার ভর্তি হওয়ার কথা ছিল৷ পরিবারের আত্মীয় স্বজন রিয়ার মৃত্যুর খবর শুনেই কলকাতার বেলেঘাটায় ছুটে গিয়ে মৃতদেহ আনার প্রস্তুতি নিলেও নিউ টাউন থানা, লাল বাজার থানা ও বেলেঘাটা থানার ত্রয়ী জটিলতার কারণে রিয়ার ময়নাতদন্ত আজ হয়নি৷ আগামীকাল ময়নাতদন্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে৷
উদয়পুর জগন্নাথ দীঘির পূর্ব পাড়ের বাসিন্দা রিয়া সেনগুপ্ত৷ পিতা রাজীব সেনগুপ্ত ৷ মঙ্গলবার কলকাতা সল্টলেক বাইপাসে বাইক দুর্ঘটনায় মারা যান বলে খবর আসে পরিবারের লোকজনের নিকট৷ রিয়ার মৃত্যুর খবর পাওয়ার সাথে আজ সকালে উদয়পুর জগন্নাথ দীঘির বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে৷ উদয়পুর থানা কর্ণারে কনফেকশনারির নিজস্ব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে৷ পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে রিয়া মেধাবী ছাত্রী ছিল৷ সল্টলেকের রাস্তায় স্পিড ব্রেকারে গতি নিয়ন্ত্রনে সজোরে ব্রেক কষতে গিয়েই নাকি এ বিপত্তি ঘটে৷
তবে রাজ্যের বাইরে হওয়ায় রিয়ার তাৎখনিক চিকিৎসায় জটিলতা দেখা দেয় এবং বিলম্ব হয়৷ সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করা গেলে রিয়াকে হয়তো বাঁচানো যেত এমনটাই অভিযোগ মৃতার পরিবারের৷ রিয়ার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে৷ আগামীকালও রিয়ার মৃতদেহ কফিন বন্দি হয়ে আনা যাবে কিনা আত্মীয় স্বজনরা সন্দেহ করেছেন৷ কারণ নিউ টাউন থানা, লাল বাজার থানা ও বেলেঘাটা থানার ত্রয়ী আইনি জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে বলে খবর৷