ইটানগর, ১০ জুলাই (হি.স.) : বন্যা, ভূমিধসের ফলে অরুণাচল প্রদেশের বিভিন্ন প্রান্ত অচল হয়ে পড়েছে। বহু এলাকা সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পশ্চিম কামেং জেলার অন্তর্গত নাগমন্দির এলাকায় নিখোঁজ হয়েছেন কয়েকজন বাসিন্দা। তাঁদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে ভারতীয় সেনা বাহিনী, রাজ্য পুলিশ, এসডিআরএফ এবং স্থানীয় মানুষ। ইতিমধ্যে ভালুকপুং-টেঙ্গা সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে দুর্যোগের মোকাবিলা করতে সংশ্লিষ্ট দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে তাঁর ট্যুইট হ্যান্ডেলে পর্যটকদের দুর্যোগ কবলিত এলাকায় না যাতায়াত করতে বারণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজধানীর প্রশাসন সূ্ত্রে জানা গেছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে সবচেয়ে বেশি পড়েছে রাজ্যের পশ্চিম কামেং জেলা। পাহাড়ি জলে সৃষ্ট বন্যা, পাহাড়ে ভাঙন ও ধসের ফলে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। ধস ও বন্যার জলের তোড়ে ভেসে গেছে কয়েকটি বসতবাড়ি ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। সূত্রটি জানিয়েছে, সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি পশ্চিম কামেং জেলার নাগমন্দির সংলগ্ন নতুন কাসপিনালা এলাকায়।
আকাশ ভাঙা মেঘ ও প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হচ্ছে গত কয়দিন ধরে। ফলে পাহাড় থেকে প্রবল বেগে ধেয়ে আসছে জলের ধারা। ফলে নিম্নাঞ্চলে কাপসি ও নাগমন্দিরের মধ্যবর্তী ১১ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি আরসিসি সেতু ভেঙে চুরমার হয়ে জলের তোড়ে ভেসে গেছে। এরই মধ্যে এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা নিখোঁজ হয়েছেন। তাঁদের উদ্ধার করতে সেনা, রাজ্য পুলিশ ও দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযান চালিয়েছেন। তবে কতজন নিখোঁজ, সে ব্যাপারে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।
রাজ্যে সৃষ্ট প্রাকৃতিক বিপর্যয় সম্পর্কে হিন্দুস্থান সমাচার-এর পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী খান্ডুর বক্তব্য চাওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের দরুন রাজ্যের বহু এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার ধস নেমে অসংখ্য রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। বিশেষ করে পশ্চিম কামেং জেলা বেশি প্রভাবিত হয়েছে। তাছাড়া সিয়াং নদী গতকাল থেকে আচমকাই রুদ্র রূপ ধারণ করেছে। জেলা প্ৰশাসন সাধারণ জনতার উদ্দেশে সতৰ্কবার্তা জারি করেছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অরুণাচল প্রদেশে যাতে কেউ না আসেন সে ব্যাপারেও সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। বিশেষ করে অসমের তেজপুরে অরুণাচল প্রদেশের প্রবেশপথে বিশেষ নজরদারি রাখা হয়েছে। তেজপুর, গুয়াহাটি বা অসম হয়ে পর্যটকদের যাতায়াতে বারণ করা হয়েছে। রাজ্যের বন্যা ও ভূমিধস সংক্রান্ত খবর কেন্দ্রকে জানানো হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। জানান, এ ব্যাপারে পর্যাপ্ত সাহায্যও চাওয়া হয়েছে কেন্দ্রের কাছে। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রাজ্যের সাংসদ কিরেন রিজিজু সর্বক্ষণ তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করছেন, জানান পেমা খান্ডু।