ঢাকা, ৫ জুলাই (হি.স.) : রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের সহযোগিতায় এগিয়ে এল কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না (সিপিসি)।শুক্রবার বিকালে স্থানীয় দিয়াওউনতাই রাষ্ট্রীয় গেস্ট হাউসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতকালে চিনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাবশালী নেতা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সং তাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্বাস দেন যে, সমঝোতার ভিত্তিতে দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মায়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করবে সিপিসি ।
সিপিসি নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য লেখক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের একথা জানিয়ে জানিয়েছেন যে, সং তাও বলেছেন, সমঝোতার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে আমরা অং সান সুচিসহ মায়ানমারের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে ব্যাপক উন্নয়নের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে সং তাও আরও আশ্বস্ত করেন যে বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় চিনের সমর্থন অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে বর্তমানে অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে এবং বাংলাদেশে উন্নয়ন অভিযাত্রায় আমরা আমাদের সমর্থন অব্যাহত রাখবো। সিপিসি নেতা বাংলাদেশের অত্যন্ত বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের উল্লেখ করে একে ‘বিশ্বে দুর্লভ’ বলে বর্ণনা করেন।
এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিগত অর্থবছরে ৮ দশমিক ১ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। অপরদিকে, চলতি অর্থবছরে ৮ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। সিপিসি ও বাংলাদেশ আওয়ামি লিগের মধ্যকার সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে সং তাও আশা প্রকাশ করেন। কেবলমাত্র উচ্চপর্যায়ে নয়, বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামি লিগ প্রতিনিধি দল চিন সফর করবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এই সফরের মাধ্যমে দুইটি দলের মধ্যকার বন্ধন আরও দৃঢ় হবে। শিগগিরই একটি সিপিসি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করবে।
এদিনের বৈঠকের শুরুতেই সিপিসি নেতা চিন সফরের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। চিনকে বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামি লিগ ও সিপিপি’র মধ্যে গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। তিনি ১৯৯৩ সালে বিরোধী দলের নেতা হিসেবে চিনে তাঁর প্রথম সফরকে স্মরণ করে বলেন, সফরের পর থেকেই উভয় পক্ষের মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি মজবুত হয়। আমরা সব সময় চেষ্টা করব যাতে আমাদের মধ্যে ভাল সম্পর্ক বজায় থাকে।
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্প বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান, পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক ও চিনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম ফজলুল করিম উপস্থিত ছিলেন। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সভায় যোগদানের পর শেখ হাসিনা এখন চিনে শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন।