BRAKING NEWS

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন রাষ্ট্রপুরুষ ও অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৭ জুন৷৷ বন্দেমাতরম এই সঙ্গীতের মধ্যেই সম্পর্ণ ভারতবর্ষ লুকিয়ে রয়েছে৷ এই সঙ্গীত দেশের জাতীয় গান৷ যা প্রত্যেক ভারতবাসীর বুকে শিহরণ তৈরি করে৷ আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ২ নং হলে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর কর্তৃক সাহিত্য সমাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিবস উপলক্ষে আয়োজিত শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে একথাগুলি বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তিনি বলেন, ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সফল প্রাবন্ধিক ও সাহিত্যিক৷ তিনি ছিলেন একাধারে রাষ্ট্রপুরুষ এবং অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক৷

ভারতবর্ষে যে সকল মনীষী, রাষ্ট্রনেতারা জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি তাদের মধ্যে অন্যতম৷ বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেব আরও বলেন, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ৩৪টি উপন্যাস রয়েছে৷ এতবড় মনীষীর জন্মদিবস বিগত রাজ্য সরকারের আমলে সরকারি উদ্যোগে করা হয়নি বলে তিনি উমা প্রকাশ করেন৷ তিনি আজকে থেকে সরকারি উদ্যোগে বঙ্কিমচন্দ্রের জন্মদিবস পালন শুরু হওয়ার জন্য তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তরের ভূয়সী প্রশংসা করেন৷ তিনি বলেন, এই দিবসটি পালনের মাধ্যমে রাজ্যে জনগণের কাছে প্রখর রাষ্ট্রবাদী চিন্তাধারার বার্তা পৌঁছাবে৷ মানুষের মধ্যে দেশ, রাজ্য ও জাতিকে নিয়ে ভাবনার বিকাশ ঘটবে৷ যা মানুষের মনকে আরও বেশি উদারতা ও বিশালতা প্রদান করবে৷
শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা কেউই পাশ্চাত্য সংসৃকতির বিরোধী নই৷ আমাদেরকে সেই সংসৃকতির ভালো দিকগুলি গ্রহণ করতে হবে৷

আমাদের বিজ্ঞানের আধুনিক পরিষেবাগুলির সাথে সাথে দেশের প্রকৃত মনীষীদের রচনাও পড়তে ও জানতে হবে৷ তখনই আমরা সত্যিকারের রাষ্ট্রবাদী হিসেবে পরিচিত হবো৷ তিনি আরও বলেন, এতোদিন শচীন দেববর্মণ, রাহুল দেববর্মণ যারা এই রাজ্যের সন্তান তাদের প্রকৃত মর্যাদা দেওয়া হয়নি৷ বর্তমান সরকার পুরোনোদের সেই ভুলকে অতীত করে রাষ্ট্র ও রাজ্যহিতে কাজ করে যাবে৷ এছাড়াও তিনি উপস্থিত সকলকে দেশের বিভিন্ন মনীষীদের লেখাগুলি পড়ার জন্যও অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে আহ্বান করেন৷
অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক তথা ভারত সরকারের সংসৃকতি মন্ত্রকের বরিষ্ঠ গবেষক ড. দেবাশিস মুখার্জি বলেন, বঙ্কিমচন্দ্রের আদর্শ অনুসরণ করে ভারত একদিন জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লাভ করবে৷ বন্দেমাতরম গানের জাতীয়তা এখনও অলান৷ তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমরা দেশের ঐতিহ্য, সংহতি নিয়ে চিন্তিত৷ এর থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদের প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ থাকা৷ আর এর থেকে পরিত্রাণের জন্য বঙ্কিমচন্দ্রের আদর্শ থেকে আর ভালো কিছু হতে পারে না৷


অনুষ্ঠানের বিশেষ বক্তা রাজ্যের বিশিষ্ট লেখক ড. জগদীশ গণচৌধুরী বলেন, বঙ্কিমচন্দ্র চে-াপাধ্যায়ের ব্যক্তিত্বের ২টি দিক রয়েছে৷ তিনি ছিলেন উচ্চপদস্থ রাজপুরুষ এবং সঙ্গে সঙ্গে ছিলেন উঁচুমানের সাহিত্যিক৷ কিন্তু স্বাধীনতা লাভের পর উনার সাহিত্যক’তির অপব্যাখ্যা করা হয়েছে৷ কিন্তু জাতীয় ঐক্যের জন্য আজও বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের চর্চা অত্যন্ত জরুরি৷ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখতে গিয়ে তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তরের সচিব এম এল দে বলেন, এ বছর থেকে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিবস পালনের পাশাপাশি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, স্বামী বিবেকানন্দ, গুরুনানক এবং মহাত্মা গান্ধীর জন্মজয়ন্তীও সরকারিভাবে পালন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ এদিনের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজ্য সাংসৃকতিক উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুুভাষ দেব এবং উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তরের অধিকর্তা রতন বিশ্বাস৷


অনুষ্ঠানের শুরুতে উপস্থিত সকল অতিথিবর্গ বঙ্কিমচন্দ্র চে-াপাধ্যায়ের প্রতিক’তিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন৷ অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবনের উপর নাটক ’মনে রেখো’ প্রদর্শিত হয়৷ ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গান্ধর্ব সাংসৃকতিক শাখার শিল্পীরা অনুষ্ঠান শেষে বন্দেমাতরম সঙ্গীতটি পরিবেশন করেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *