নয়াদিল্লি, ২৫ মে (হি.স.): আদর্শ মেনে জোট করতে হয়। নাহলে কোনও লাভ হয় না। কারণ, সৎ ব্যক্তিদেরই বেছে নেয় দেশ। তাই অহঙ্কার না করে জনাদেশ মানুন। শনিবার সংসদের সেন্ট্রাল হলে এনডিএ-এর সাংসদদের সভায় দ্বিতীয়বারের জন্য এনডিএ-র নেতা নির্বাচিত হয়ে একথা বলেন নরেন্দ্র মোদী । পাশাপাশি এদিন সেন্ট্রাল হলে উপস্থিত সাংসদদের প্রতি তাঁর উপদেশ, কখনও অহংকারকে প্রশ্রয় দেবেন না। ভিআইপি কালচারে অভ্যস্ত হয়ে উঠবেন না।
সদ্য শেষ হওয়া র লোকসভা নির্বাচনে দেশের ৫৪২টি আসনের মধ্যে ৩০৩টি আসন একাই দখল করে বিজেপি। এনডিএ জোট পেয়েছে ৩৫৩টি আসন | ২৩ মে মহাবিজয়ের পর প্রত্যেকেরই নজর এখন প্রধানমন্ত্রী পদে নরেন্দ্র মোদীর মহাভিষেকের দিকে। তার আগে শনিবার সংসদের সেন্ট্রাল হলে হাজির ছিল বিজেপি সহ এনডিএ-র সব শরিক দল। দ্বিতীয়বারের পর জন্য বিপুল ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসার পর শনিবার সংসদের সেন্ট্রাল হলে মিলিত হন এনডিএ-এর সাংসদরা। এই বৈঠকে সর্বসম্মতি ক্রমে নরেন্দ্র মোদীর নাম জোটের নেতা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তিনিই হবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী | এদিন সভার প্রথমে সংসদীয় দলনেতা হিসেবে তাঁর নাম প্রস্তাব করেন শিরোমণি অকালি দলের প্রধান প্রকাশ সিং বাদল। তাঁর এই প্রস্তাব সমর্থন করেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডি(ইউ) প্রধান নীতীশ কুমার, শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে ও লোক জনশক্তি পার্টির সুপ্রিমো রামবিলাস পাসোয়ান-সহ অন্যরা।
এরপর এনডিএ সাংসদদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রথমেই সামনে রাখা সংবিধানকে প্রণাম করেন মোদী । তাঁকে দলনেতা নির্বাচিত করার জন্য এনডিএ সাংসদদের ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি অভিনন্দন জানান প্রথমবার নির্বাচিত হওয়া সাংসদদেরও। তারপর বিজেপি ও এনডিএ-র এই জয়ের জন্য ধন্যবাদ জানান কর্মী-সমর্থকদের। বলেন, “এনডিএ-র সাংসদরা আমাকে নেতা নির্বাচিত করেছেন। সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত হওয়ার জন্য আমি গর্বিত ও কৃতজ্ঞ। এখান থেকেই নতুন ভারতের যাত্রা শুরু হল। এবার ভারতের লোকসভা নির্বাচন দেখে অবাক হয়েছে গোটা বিশ্ব। আসলে তারা দেখেছে ভারতের গণতন্ত্র এখন অনেক বেশি শক্তিশালী। এর পুরো কৃতিত্বই নির্বাচন কমিশনের। ক্ষমতা বা প্রলোভন কোনওটাই ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারেনি। আমরা জনগণের সেবা করেছি তাই তাঁরা আমাদের আর্শীবাদ করেছেন। এই বিপুল জনসমর্থন আমার দায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।”
বিরোধীদের কটাক্ষ করে তিনি আরও বলেন, “আদর্শ মেনে জোট করতে হয়। নাহলে কোনও লাভ হয় না। কারণ, সৎ ব্যক্তিদেরই বেছে নেয় দেশ। গণতন্ত্রে সবার উপরে রয়েছে মানুষ। বিশ্বাস হারালে তারা ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়। তাই অহঙ্কার না করে জনাদেশ মানুন।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ভোট আমার কাছে তীর্থযাত্রার মতো। ভোট ভিক্ষা করতে নয় তীর্থযাত্রা করতে দেশ ঘুরেছি আমি। কোনও বিশেষ সম্প্রদায় নয় আমাদের জেতায় সব ধর্মের সাধারণ মানুষ। গত পাঁচ বছরে দেশ গড়ার কাজ করেছে এনডিএ। নারীর ক্ষমতায়নের উপরে সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছে। তার ফলস্বরূপ এবার সংসদে সবচেয়ে বেশি মহিলা সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। এতদিন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভোটের জন্য ব্যবহার করা হত। কিন্তু, এনডিএ সেই ধারণা বদলে দিয়েছে। বিরোধীরা কুৎসা করলেও এবার ভোট হয়েছে প্রতিষ্ঠানের পক্ষে।”
শনিবার সেন্ট্রাল হলে এনডিএ সাংসদদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তাঁদের ভিআইপি কালচার থেকে দূরে থাকার পরামর্শও দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, “অহঙ্কার করা ছাড়ুন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ছাড়ুন ভিআইপি কালচারও। বিপুল জনাদেশে দায়িত্ব বাড়ে। এটা মাথায় রেখে কাজ করুন।”