নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৩ মে৷৷ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের প্রবণতা দেখে হয়তো হৃদকম্পন শুরু হয়ে গিয়েছে শাসক জোট শরিক আইপিএফটি-র৷ কারণ, নির্বাচনের আগে বহু অনুনয়-বিনয় সত্বেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে আসেননি এন সি দেববর্মারা৷ কিন্তু, আজ লোকসভা নির্বাচনে ত্রিপুরায় দুই আসনেই চুড়ান্ত ভরাডুবি হতে চলেছে আইপিএফটি-র, তা একপ্রকার নিশ্চিত৷ দুপুর একটা পর্য্যন্ত গণনায় দুই আসনে আইপিএফটি সাকূল্যে ৬৩ হাজার ৬৯৭ ভোট পেয়েছে৷ শাসক জোট শরিক হয়েও ত্রিপুরায় এখন পর্যন্ত ফলাফলে আইপিএফটি চতুর্থ স্থানে রয়েছে৷ অন্যদিকে, বিজেপি বিরাট ব্যবধানে দুই আসনেই জয়ের পথে এগিয়ে চলেছে৷ স্বাভাবিকভাবেই, শরিক দলের অনুরোধ এবং পরামর্শ উপেক্ষা করে আখেরে ক্ষতিই হয়েছে, আইপিএফটি তা বুঝেই ইতিমধ্যে দলীয় শীর্ষ নেতারা পরবর্তী রণকৌশল নিয়ে আলোচনা শুরু করে দিয়েছেন৷
সূত্রের খবর, আইপিএফটি সভাপতি এন সি দেববর্মা দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে ডেকেছেন৷ কারণ, জোটধর্ম মানেনি তাই, বিজেপি লোকসভা নির্বাচনের প্রক্রিয়া সমাপ্ত হওয়ার পর ত্রিপুরাতে আইপিএফটি-র সাথে জোট বজায় রাখবে কিনা, তা দলের শীর্ষ নেতাদের চিন্তায় ফেলেছে৷ বিজেপির এক নেতার কথায়, নির্বাচনের আগে বহুবার আইপিএফটি নেতাদের বোঝানো হয়েছে এককভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে আসার জন্য৷ তাঁদের এডিসি নির্বাচনে ভরপুর সহায়তা দেওয়া হবে বলেও বিজেপির পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু, তাঁরা লোকসভা নির্বাচনে একটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্তে অনঢ় রয়েছে৷ তাই, বিজেপিও ত্রিপুরায় এককভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে৷
ফলাফল সম্পর্কে আইপিএফটি সভাপতি তথা পূর্ব আসনে প্রার্থী এন সি দেববর্মার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, চূড়ান্ত ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত ফলাফল নিয়ে কোন প্রতিক্রিয়া দেওয়া সম্ভব নয়৷ তাতে মনে হয়েছে, আইপিএফটি এখনই ত্রিপুরায় শরিক সম্পর্কে কোন জটিলতা হোক চাইছে না৷ বরং, কৌশলে জোট শরিক হিসেবেই মেয়াদ পূর্ণ করতে চাইছেন এনসি দেববর্মারা৷
একথা বলার অপেক্ষা রাখে না, ত্রিপুরায় সরকার টিকিয়ে রাখতে বিজেপির কোন দলের সমর্থনের প্রয়োজন হবে না৷ এককভাবে বিজেপি সরকার টিকিয়ে রাখতে সক্ষম৷ সেক্ষেত্রে, লোকসভা নির্বাচনে প্রস্তাবে সায় না দিয়ে আইপিএফটি রাজ্যে শরিক দলের সম্পর্কে যে উষ্ণতা তৈরি করেছে, তা সহজে ঠান্ডা হবে বলে মনে হচ্ছে না৷ কারণ, ত্রিপুরায় জোট শরিকের পৃথকভাবে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাজ্যে এবং গোটা দেশে বিজেপিকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে৷ ফলে, ত্রিপুরায় শাসক জোটের ভবিষ্যত কি হতে পারে, তা এখনই অনুমান করা যাচ্ছে না৷