BRAKING NEWS

শীর্ষ আদালতে জোর ধাক্কা খেলেন রাজীব কুমার, ‘রক্ষাকবচ’ সরিয়ে নিল সুপ্রিম কোর্ট

নয়াদিল্লি, ১৭ মে (হি.স.) : সুপ্রিম কোর্টে বড়সড় ধাক্কা খেলেন কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। রাজীব কুমারের উপর থেকে ‘রক্ষাকবচ’ সরিয়ে নিল শীর্ষ আদালত। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের অবসরকালীন বেঞ্চের সদস্য বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার জানিয়েছেন, সিবিআই রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে। এ ক্ষেত্রে সাত দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন করতে পারবেন আইপিএস রাজীব কুমার।

মূলত সারদা সহ বিভিন্ন চিটফান্ড সংস্থা সম্পর্কিত তদন্তে কলকাতার প্রাক্তন নগরপাল অসহযোগিতা করছেন বলে আদালতে অভিযোগ করে সিবিআই৷ তদন্তের স্বার্থে তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরা৷ সারদা সহ অন্যান্য ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার দুর্নীতির তদন্তের উদ্দেশ্যে ২০১৩ সালে সিট গঠন করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার৷ এই সিটের দায়িত্বে ছিলেন তৎকালীন বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের প্রধান রাজীব কুমার। ২০১৪-য় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ভুয়ো অর্থলগ্নি সমস্থার তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে।২০১৮ সালে সিবিআই অভিযোগ করে, তদন্ত সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ লোপাট অথবা নষ্ট করা হয়েছে৷ যার দায় বর্তায় সিটের প্রধান আইপিএস রাজীব কুমারের উপরই৷ এই সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চিঠিও দেয় সিবিআই।

অভিযোগ, বারবার চিঠি পেয়েও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজিরা দেননি রাজীব৷তদন্তের স্বার্থে এবছরের ৩ ফেব্রুয়ারি রাজীব কুমারের সরকারি বাসভবনে পৌঁছয় সিবিআই-এর ৪০-সদস্যের একটি দল। কিন্তু কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকদের কাছে প্রয়োজনীয় অনুমতি না থাকায় তাদের কলকাতার নগরপালের সরকারি বাড়িতে প্রবেশে বাধা দেয় পুলিশ৷ মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সিবিআইকে ব্যবহারের অভিযোগ তুলে ধর্নায় বসেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷সেই সময় কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে সিবিআই৷ কোর্ট জানায় তখনকার মত মতো গ্রেফতার করা না গেলেও শিলংয়ে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে রাজীব কুমারকে৷ এরপরই ফেব্রুয়ারি মাসে টানা পাঁচদিন চলে সেই জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব৷ এর পরেও তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় দেশের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা।

উত্তরে আদালত প্রশ্ন তোলে, হেফাজতে নিয়ে কেন জেরা করতে চায় সিবিআই? এ ব্যাপারে আদালতে যথোপযুক্ত প্রমাণ দিতে হবে সিবিআইকে। সেই প্রমাণে আদালত সন্তুষ্ট হলে তবেই রাজীব কুমারের গ্রেফতারের নির্দেশ নিয়ে ভাববে আদালত।শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের অবসরকালীন বেঞ্চের সদস্য বিচারপতি সঞ্জীব খান্না নির্দেশ দেন, তদন্তের স্বার্থে গ্রেফতার করা যাবে আইপিএস রাজীব কুমারকে৷ এর আগে আদালতের দেওয়া গ্রেফতারের উপর অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হচ্ছে৷  কিন্তু রাজীব কুমারকেও সুযোগ দেওয়া হয়েছে৷ আগমী সাতদিনের মধ্যে তাঁকে সুপ্রিম কোর্টেই আগাম জামিনের আবেদন করতে হবে৷ ফলে ওই সময়কালে তাঁকে গ্রেফতার করা সম্ভব নয়৷ বিচারপতি জানিয়েছেন এরপর, আইন মেনেই পদক্ষেপ করতে পারবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা৷ আপাতত কমিশনের নির্দেশ দিল্লিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে হাজিরা দিয়েছেন রাজীব কুমার৷ গত বুধবার রাতে নির্দেশ জারি করে সিআইডি-র অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেলের পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *