নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা/ খোয়াই, ৪ মে৷৷ প্রলোভনের ফাঁদে পা দিয়ে রাজ্যের ৫০ জন প্রচুর টাকা খুঁইয়েছেন৷ এমনই একটি ঘটনায় খোয়াইয়ের রঞ্জিত নমঃ দাস নামে এক পুলিশ কনস্টেবলের ৮৫ হাজার টাকা লুট হয়েছে ৷ শনিবার একথা জানিয়েছেন ত্রিপুরার সাইবার ক্রাইম শাখার পুলিশ সুপার সরস্বতী আর ৷ তিনি জানান, ওই ঘটনায় দুই যুবককে আটক করেছে পুলিশ ৷ তাদের শনিবার খোয়াই সিজেএম আদালতে তেলা হয়৷ বিচারক ধৃতদের পাঁচদিনের রিমান্ডের নির্দেশ দিয়েছেন৷
পুলিশ সুপার আরও জানান, তারা প্রতারণার জাল ছড়িয়ে দেওয়ার সাথে যুক্ত৷ তিনি সতর্ক করে বলেন, ডিলমানি সিকিউরিটি প্রাইভেট লিমিটেড সংস্থা স্বাস্থ্য বিমার নামে মানুষের কাছ টাকা লুটে নিচ্ছে ৷ তাতে, এখন পর্যন্ত বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে ওই সংস্থা ১ কোটির টাকার অধীক লুট করেছে বলে প্রমাণ মিলেছে৷ সরস্বতী আর বলেন, খোয়াই থানায় গত মার্চ মাসে রঞ্জিত নমঃ দাস প্রতারণার মামলা করেন ৷ তাঁর কাছ থেকে স্বাস্থ্য বীমার নামে ৮৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন ৷ এই মামলায় তদন্তে নেমে সাইবার ক্রাইম শাখা আরো অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেয়েছে ৷ তাঁর কথায়, কৈলাসহর, ধর্মনগর, বিলোনীয়ায় মোন ৫০ জন প্রতারিত হয়েছেন বলে খবর মিলেছে ৷
সরস্বতী আর জানান, ডিলমানি সিকিউরিটি প্রাইভেট লিমিডেট টেলিফোনে স্বাস্থ্য বীমার নানা অফারের টোপ দিয়ে টাকা আদায় করে চলেছে ৷
মানুষও সহজ সরলভাবে তাদের প্রলোভনে পা দিচ্ছেন ৷ তিনি বলেন, তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে ওই সংস্থার বৈধ কোন অনুমোদন নেই ৷ তাছাড়া স্বাস্থ্য বীমা করার ক্ষেত্রে যা প্রয়োজনীয় সবই ভুয়ো তথ্য তারা গ্রাহকের কাছে উপস্থাপন করে থাকে৷ তিনি বলেন, খোয়াইয়ের রঞ্জিত নমঃ দাসের মামলায় তদন্তে নেমে পুলিশ ধলেশ্বর থেকে প্রীতম চৌধুরী এবং বিলাস সাহা নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে ৷ তারা গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতেন ৷ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং আরো অনেক তথ্য বেরিয়ে আসছে ৷ সরস্বতী আর বলেন, রাজ্যে ৫০ জনের কাছ থেকে ওই সংস্থা ১ কোটি টাকার অধিক সংগ্রহ করেছে ৷ তার মধ্যে রঞ্জিত নমঃ দাসের টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৷ বাকিদের টাকা আদৌ ফেরত পাওয়া সম্ভব হবে কিনা তা এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না ৷
তিনি বলেন, রাজ্যে নানাভাবে প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের বহু ঘটনা ঘটছে ৷ অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, প্রতারিত ব্যক্তি দেরীতে পুলিশের সাহায্য চান ৷ তাতে, প্রতারকদের জালে তুলা সম্ভব হয় না ৷ তাঁর কথায়, এটিএমের ওটিপি সংগ্রহ করে বহু মানুষের ব্যাঙ্ক একাউন্ট ফাঁকা করে দিয়েছে প্রতারকরা ৷ ওই টাকা ফেরত পাওয়া কোন সম্ভব নয় ৷ তিনি বলেন, শুধু সচেতনতার অভাবে মানুষ নিজেদের কষ্টার্জিত টাকা গচ্ছা দিচ্ছেন ৷ কখনই টেলিফোনে এটিএমের পিন কিংবা ওটিপি কাউকেই দেওয়া উচিৎ নয় ৷ তাছাড়া, কেউ যদি মোবাইল টাওয়ার কিংবা স্বাস্থ্য বীমার নামে প্রচুর টাকা প্রাপ্তির টোপ দিয়ে থাকে, তাহলে সেই প্রলোভনে পা না দিলেই সব সমস্যা এড়ানো সম্ভব ৷
আজ ত্রিপুরার সাইবার ক্রাইম শাখার পুলিশ সুপার সরস্বতী আর রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে আবেদন জানান, কোন ফোন কলের ফাঁদে পা দেবেন না ৷ অবাঞ্চিত কেউ আপনার ব্যাঙ্ক একাউন্ট সম্পর্কে জানতে সোজা বিষয়টি পুলিশকে জানান ৷ তাছাড়া, এটিএম কোড নম্বর কখনো কাউকে দেওয়া উচিৎ নয় ৷ তাঁর পরামর্শ, সচেতন হোন, প্রতারণার হাত থেকে নিজেকে বাচান৷