নয়াদিল্লি, ২৪ জানুয়ারি (হি.স.) : সিবিআই-এর পরবর্তী ডিরেক্টর পদে কে বসবে তার কোনও সিদ্ধান্তেই পৌঁছতে পারল না নিয়োগ কমিটি। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে নিয়োগ কমিটির বৈঠক ছিল। কিন্তু সেই বৈঠকে কোনও সিদ্ধান্ত পৌঁছতে পারেনি নিয়োগ কমিটির সদস্যরা। নিয়োগ কমিটির এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নরেন্দ্র মোদী, প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, মল্লিকার্জুন খারগে। সূত্রের খবর আগামী সপ্তাহে ফের বসবে নিয়োগ কমিটির বৈঠক। অন্যদিকে নাগেশ্বর রাও-এর নিয়োগের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলায় শুনানি থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি সিক্রি।

অলোক বর্মাকে সরিয়ে সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)-এর অন্তর্বর্তীকালীন ডিরেক্টর নিয়োগ করা হয়েছে এম নাগেশ্বর রাও-কে| সিবিআই-এর ডিরেক্টর পদে এম নাগেশ্বর রাও-এর নিয়োগের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিল ‘কমন কজ’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা| গত সোমবারই এম নাগেশ্বর রাও মামলার শুনানি থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ| এবার নাগেশ্বর রাও মামলার শুনানি থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি এ কে সিক্রি| সরে দাঁড়ানোর জন্য দু’টি কারণ দেখিয়েছেন বিচারপতি এ কে সিক্রি| প্রথমত-ব্যক্তিগত| দ্বিতীয়ত-এটা এই মামলার শুনানির সঠিক সময় নয়|
সিবিআই-এর ডিরেক্টর পদে এম নাগেশ্বর রাও-এর নিয়োগের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিল ‘কমন কজ’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা| গত সপ্তাহের ৱুধবার সেই আবেদন গ্রহণ করেছিল শীর্ষ আদালত| গত সোমবার সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি শুরু হয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে| কিন্তু, নাগেশ্বর রাও-এর নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যে পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল, তার শুনানিতে উপস্থিত না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ| ওই দিন প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, এ কে সিক্রির নেতৃত্বে এই পিটিশনের শুনানি হবে| কিন্তু, বৃহস্পতিবার বিচারপতি এ কে সিক্রিও এই জনস্বার্থ মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন|
জনস্বার্থ মামলাটি যাঁরা দায়ের করেছে সুপ্রিম কোর্টে, সেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘কমন কজ’-এর আইনজীবী দুষ্যন্ত দাভে বৃহস্পতিবার আদালতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিচারপতি এ কে সিক্রি সরে দাঁড়ানোয় মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে| এখন মনে হচ্ছে শীর্ষ আদালত মামলাটির শুনানি চাইছে না| অলোক বর্মাকে সরানোর ব্যাপারে আদালতকে যতটা সক্রিয় হতে দেখা গিয়েছে, নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে সেই সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে না|’ এরপরই বিচারপতি এ কে সিক্রি বলেন, ‘আপনারা আমাকে চেনেন, জানেন| আমার অবস্থাটা বুঝতেও পারছেন| মানছি, ওই জনস্বার্থ মামলায় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইসু্য রয়েছে| তা নিয়ে আলোচনা শুক্রবার হতে পারে| আমি এই শুনানিতে অংশ নিতে চাই না|’
উল্লেখ্য, সিবিআই-এর ডিরেক্টর পদ থেকে অলোক বর্মার অপসারণের পর নতুন সিবিআই ডিরেক্টর কে হবেন, তা ঠিক করতে বৃহস্পতিবারই উচ্চপর্যায়ের কমিটি বৈঠকে বসছে| সম্ভবত বৃহস্পতিবারই চূড়ান্ত হতে পারে দেশের নতুন সিবিআই ডিরেক্টর-এর নাম| প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ও অন্য আধিকারিকরা আলোচনা করে স্থির করবেন নতুন সিবিআই ডিরেক্টর-এর নাম| সন্ধ্যায় ছ’টা দিল্লিতে এই নিয়ে বৈঠকের সম্ভাবনা| সূত্রের খবর, নতুন সিবিআই অধিকর্তা হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন বাঙালি আইপিএস অফিসার রীনা মিত্র| প্রধানমন্ত্রী, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, লোকসভার বিরোধী দলনেতাকে নিয়ে তৈরি উচ্চপর্যায়ের কমিটির কাছে কর্মিবর্গ দফতর প্রাথমিকভাবে ১২ জনের নাম পাঠিয়েছে| তাঁদের মধ্যে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ ক্যাডারের বাঙালি আইপিএস অফিসার রীনা মিত্রর নাম| যদি, রীনাকে বাছা হয় তিনিই হবেন প্রথম মহিলা সিবিআই ডিরেক্টর|