BRAKING NEWS

দিল্লি থেকে গ্রেফতার ভারতী ঘোষের দেহরক্ষী

নয়াদিল্লি, ২২ ডিসেম্বর (হি.স.) : আত্মগোপন করেও হল না শেষরক্ষা। দিল্লি থেকে সিআইডি’র জালে ধরা পড়লেন পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের দেহরক্ষী সুজিত মণ্ডল। শনিবার সকালে দিল্লির মালব্যনগরের কাছে হ্যামিল্টন হোটেল থেকে সুজিতকে গ্রেফতার করে সিআইডি-র গোয়েন্দারা।
সিআইডি সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরে দিল্লিতে আত্মগোপন করে ছিলেন সুজিত। নিজের ভোল সম্পূর্ণ বদলে ফেলেছিলেন। রীতিমতো বড় দাড়ি রেখেছিলেন। তারপরেও সিআইডি’র নজর এড়ায়নি। এদিন সকালে দিল্লির মালব্যনগরের কাছে হ্যামিল্টন হোটেল থেকে সুজিতকে গ্রেফতার করে সিআইডি-র গোয়েন্দারা। সিআইডি সূত্রে খবর, ভবানীভবনে এনে জেরা করা হবে সুজিতকে। মাসকয়েক আগে হাতের নাগালে পেয়েও সিআইডির হাত থেকে ফস্কে গিয়েছিল ভারতীর দেহরক্ষী সুজিত। সেবার সুজিতের ফোন ট্র্যাক করে দেখা যায় দিল্লির লোকমান্য তিলক থানায় রয়েছে সে। এরপর ভবানী ভবন থেকে দিল্লিতে ফোন করে জানানো হয় সুজিতকে আটকে রাখার জন্য। এদিকে সিআইডি দিল্লি পৌঁছে দেখে থানা থেকে হাওয়া সুজিত। যদিও দ্বিতীয়বার আর পালাতে পারল না সুজিত। সিআইডির জালে ধরা পড়ল ভারতীর অন্যতম সহচরী সুজিত। তবে এই মুহূর্তে ভারতী কোথায় রয়েছে সে বিষয়ে কোনও তথ্য নেই সিআইডির কাছে। সিআইডির অনুমান, সুজিতকে জিজ্ঞাসাবাদা করেই ভারতী ঘোষের সম্পর্কে জানা যাবে।
উল্লেখ্য, জালিয়াতির অভিযোগে দীর্ঘ দিন ধরেই ফেরার রাজ্য পুলিশের একদা আইপিএস ভারতী ঘোষ। ইতিমধ্যেই মেদিনীপুরের বাড়ি, বাঁশদ্রোণী ও মাদুরদহের ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা মূল্যের জমির কাগজ, হার্ড ডিস্ক, পেন ড্রাইভ, সোনার গয়না, প্রায় ৫ কোটি টাকা ক্যাশ ও ৫৭ টি বিদেশী দামী মদের বোতল উদ্ধার করে সিআইডি। গ্রফতার করা হয় ভারতীর স্বামী এমভু রাজুকেও। এরই মাঝে সুপ্রিম কোর্ট থেকে ভারতী অর্ডার পেয়েছেন তাঁকে গ্রেফতার করা যাবে না। পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিক মামলায় নাম রয়েছে ভারতী ঘোষের। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ দুটি মামলার চার্জশিটে ভারতীকে ফেরার বলে উল্লেখ করেছেন। আর দূরে থেকে অডিও বার্তার মাধ্যমে ভারতী ঘোষ একের পর এক বোমা ফাটিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি চিঠি লিখে ভারতী ঘোষ জানান, তিনি পদত্যাগ করতে চান। তার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ আনে রাজ্য সরকার। বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। ভারতী ঘোষের মেদিনীপুরের বাড়ি, তাঁর বাঁশদ্রোণী ও মাদুরদহের ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা মূল্যের জমির কাগজ, হার্ড ডিস্ক, পেন ড্রাইভ, সোনার গয়না, প্রায় ৫ কোটি টাকা ক্যাশ ও ৫৭ টি বিদেশী দামী মদের বোতল উদ্ধার করে সিআইডি। এই প্রসঙ্গে ভারতী ঘোষ জানান, তাঁর না থাকার সুবাদে ইচ্ছা করেই তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়েছে। কিন্তু ধীরে ধীরে সব জলের মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে। জালিয়াতি অভিযোগ ওঠার পর ভারতীকে গ্রেফতার করতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেনি সিআইডি। তারপর থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন ভারতী ঘোষ ও তাঁর দেশরক্ষী সুজিত মণ্ডল। মাঝে মাঝে অবশ্য হাওয়ায় ভেসে আসত ভারতীর অডিও বার্তা। তবে ভারতীর খোঁজ না মিললেও দীর্ঘ দিন নিখোঁজ থাকার পর অবশেষে সিআইডির জালে ভারতীর দেহরক্ষী সুজিত মণ্ডল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সিআইডি শনিবার সাকালে দিল্লি থেকে সুজিতকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানা গিয়েছে। যদিও এখনও অধরা প্রাক্তন আইপিএস ভারতী ঘোষ। শীঘ্রই তাঁকে গ্রেফতার করা হবে বলে আশাবাদী তদন্তকারীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *