নয়াদিল্লি, ১৭ ডিসেম্বর (হি.স.) : শিখ বিরোধী হিংসায় সাজা প্রাপ্ত সজ্জন কুমারের প্রসঙ্গে তুলে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নিন্দায় সরব হলেন শিরোমণি অকালি দলের নেত্রী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরসিমরত কউর বাদল। আদালতের রায় নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে, পাল্টা তোপ পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিং-এর।
সোমবার শিখ বিরোধী হিংসায় দোষী সাব্যস্ত কংগ্রেস নেতা সজ্জন কুমারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে দিল্লি হাইকোর্ট। আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে হরসিমরত কউর বাদল বলেন, ‘শিরোমণি অকালি দলের সুপারিশ ১৯৮৪ শিখ বিরোধী দাঙ্গার তদন্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিশেষ তদন্তকারী দল সিট গঠন করেছিলেন ২০১৫তে। এর জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। এটি ঐতিহাসিক রায়। অবশেষে বিচারের চাকা চলতে শুরু করল। আজ সজ্জন কুমারের সাজা হয়েছে। কাল জগদীশ টাইটেলার। তারপর কমল নাথ। সব শেষে গান্ধী পরিবার। একে একে সবার সাজা হবে। বিগত ৩৪ বছর ধরে সজ্জন কুমার, টাইটেলার, কমল নাথকে বাঁচানোর সমস্ত রকমের চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে কংগ্রেস এবং গান্ধী পরিবার। এমনকি পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিং শিখদের হত্যাকারীদের ক্লিন চিট দিয়েছিলেন। অবশেষে আদালতে রায় কংগ্রেসের এই গোপন অভিসন্ধি প্রকাশ্যে এল। এখন কি বলবেন রাহুল গান্ধী এবং ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিং।’
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর প্রসঙ্গ তুলে ধরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরসিমরত কউর বাদল বলেন, ‘জাতীয় চ্যানেলে যখন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী বলেছিলেন, হত্যার বদলা হত্যা। মহীরূহে পতন হলে ভূমি কেপে উঠে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মুখে এমন কথা শুনে আমরা সেই সময় আতঙ্কিত ছিলাম। বহু নিরীহ মানুষকে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়েছিল। সেইদিনের কথা মনে পড়লে আজও আমি শিউড়ে উঠি। কংগ্রেস নেতারা পুলিশদের সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে ঢুকে সাধারণ মানুষদের উপর অত্যাচার চালিয়েছিল। শিশুরা কাঁদছে, চারিদিকে হাহাকার, আর্তনাদ। যা আজও বিভীষিকাময় স্মৃতি হয়ে রয়েছে।’
শিরোমণি অকালি দলের নেতা বিক্রম সিং মাজিটিয়া বলেন, ক্রিশ্চিয় মাইকেলের ক্ষেত্রে যেমন কংগ্রেসের আইনজীবীরা তার পক্ষে সওয়াল করেছিল। ঠিক তেমনই ভাবে সজ্জন কুমারের পক্ষে মামলা লড়েছে কপিল সিব্বলের ছেলে অমিত সিব্বল। ট্যুইটারে একই দাবিতে সরব হয়েছেন আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী। তিনি লেখেন, ১৯৮৪ শিখ বিরোধী দাঙ্গার মামলা দোষীদের সাজার জন্য নিরলস ভাবে পরিশ্রম করে গিয়েছেন বর্ষীয়ান আইনজীবী এইচ এস ফুলকা। খুবই লজ্জাজনক বিষয় খুনীদের রক্ষা করার জন্য সমস্ত রকমে চেষ্টা করে গিয়েছে কংগ্রেস। এদেরকে কংগ্রেসের তরফ থেকে পদও দেওয়া হয়েছিল। এই বিষয়ে কংগ্রেসের উচিত নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করা। এখন কংগ্রেস অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী দফতর থেকে এই মামলার রায়কে স্বাগত জানিয়ে জানানো হয়েছে, স্বাধীন ভারতের নিঃকৃষ্টতম দঙ্গায় দোষীরা অবশেষে সাজা পেল। আদালতের এই রায়কে স্বাগত। এই দাঙ্গার সঙ্গে কংগ্রেস এবং গান্ধী পরিবারের কোনও সম্পর্ক নেই। আদালতের রায় নিয়ে শিরোমণি অকালি দল রাজনীতি করছে। নিজেদের রাজনৈতিক প্রভু বিজেপির নির্দেশেই এমন কাজ করছে তারা।