BRAKING NEWS

মিথ্যা সবসময় স্বল্পায়ু, রাফালের ক্ষেত্রে তা মাত্র কয়েক মাস স্থায়ী ছিল : জেটলি

নয়াদিল্লি, ১৪ ডিসেম্বর (হি.স.) : ‘মিথ্যা সবসময় স্বল্পায়ু। রাফালের ক্ষেত্রে তা মাত্র কয়েক মাস স্থায়ী ছিল।শুক্রবার রাফাল মামলায় কেন্দ্র সরকারকে ক্লিনচিট দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট । সুপ্রিম কোর্টের ক্লিনচিট পেতেই বিষয়টি নিয়ে এবার বিরোধীদের পাল্টা নিশানা করে এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, ‘মিথ্যা সবসময় স্বল্পায়ু। রাফালের ক্ষেত্রে তা মাত্র কয়েক মাস স্থায়ী ছিল। তবে এতে মিথ্যাভাষণকারীদের গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পায়।’
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি সঞ্জয় কল ও বিচারপতি এমকে জোসেফের বেঞ্চ এদিন রায় ঘোষণার সময় বলেছে, ‘১২৬টির জায়গায় ৩৬টি যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে প্রশ্ন তোলাটা অনুচিত। আমরা সরকারকে ১২৬টি বিমান কিনতে জোর করতে পারি না। যুদ্ধবিমানের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা ঠিক নয়। গোটা প্রক্রিয়ায় বিশেষ কোনও খামতি ছিল না। তাই এই বিষয়ে আর কোনও তদন্তের প্রয়োজন নেই।’ এই সংক্রান্ত যাবতীয় জনস্বার্থ মামলা এদিন খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। শীর্ষ আদালতের রায় ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এ নিয়ে যৌথভাবে সাংবাদিক বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমন।
ওই সাংবাদিক সম্মেলনে জেটলি বলেন, ‘রাফাল চুক্তির মাধ্যমে একইসঙ্গে দেশের নিরাপত্তা এবং বাণিজ্যিক স্বার্থ সুরক্ষিত করেছে সরকার।’ তাঁর ব্যখ্যা, ‘এই চুক্তির মাধ্যমে ভারতের সামরিক ক্ষমতা আরও মজবুত হয়েছে। অন্যদিকে, রফার মাধ্যমে আরও সস্তায় বিমান এবং সাঁজোয়া বিমান হাতে পাচ্ছে ভারত। যার ফলে বাণিজ্যিকভাবে তা লাভজনক হয়েছে।’
যুদ্ধবিমানের কার্যক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন না তোলার জন্যও বিরোধীদের কাছে আবেদন করেছেন তিনি। এবিষয়ে এদিন নাম না করে ধরে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘মিথ্যা সবসময় স্বল্পায়ু। রাফালের ক্ষেত্রে তা মাত্র কয়েক মাস স্থায়ী ছিল। তবে এতে মিথ্যাভাষণকারীদের গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘ রাফাল চুক্তি নিয়ে সরকার যে পরিসংখ্যান পেশ করেছিল তা সম্পূর্ণ সঠিক। অন্যদিকে, রাহুল গান্ধীর দেওয়া পরিসংখ্যান যে ভুলে ভরা ছিল ইতোমধ্যেই তা প্রমাণ করে দিয়েছি। সত্য একটাই হয়। কিন্তু মিথ্যার নানা ভার্সান হয়। সে কারণে রাহুল গান্ধী নানা পরিসংখ্যান তুলে ধরেছিলেন।’
উল্লেখ্য, ফ্রান্সের কাছ থেকে রাফাল যুদ্ধবিমান কেনায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে একাধিকবার সরব হয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী | সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে তিনি অভিযোগ করেছেন, ইউপিএ শাসনকালে রাফাল যুদ্ধবিমান নিয়ে যে চুক্তি হয়েছিল তাতে প্রতিটির দাম পড়বে ৫৪০ কোটি টাকা। যেখানে এনডিএ সরকার এক একটি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি করেছে ১৬০০ কোটি টাকায়।
এরই মধ্যে রাফাল যুদ্ধবিমান কেনায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে শীর্ষ আদালতে দায়ের হয়েছিল একাধিক জনস্বার্থ মামলা| ফ্রান্সের সঙ্গে রাফাল কেনার জন্য ভারতের কয়েক হাজার কোটি ডলার অর্থমূল্যের চুক্তির তদন্ত চেয়ে প্রথম আবেদন করেছিলেন এম এল শর্মা নামে জনৈক আইনজীবী। তারপর বিনীত ধান্দা নামে আরেক আইনজীবী আদালতের তত্ত্বাবধানে তদন্তের দাবিতে পিটিশন দেন। ডিলের বিরুদ্ধে আবেদন করেন আপ নেতা সঞ্জয় সিংহও।
তিনটি পিটিশন দায়ের হওয়ার পরও দুই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিনহা ও অরুণ শৌরি, আইনজীবী-সমাজকর্মী প্রশান্ত ভূষণও সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়ে আবেদন জানান, ওই ডিলে বেনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিবিআইকে এফআইআর দায়ের করতে নির্দেশ দেওয়া হোক।
কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার অবশ্য যাবতীয় পিটিশনের বিরোধিতা করে ফ্রান্স থেকে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার ডিল সমর্থন করেছে, কী দামে বিমানগুলি কেনা হচ্ছে, তা জনসমক্ষে প্রকাশের দাবির বিরোধিতা করেছে। এদিন ওই মামলাতেই কেন্দ্র সরকারকে ক্লিনচিট দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ।
প্রসঙ্গত, রাফাল তৈরি করে ফরাসি বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থা দাসোঁ। এটি দুই ইঞ্জিনের মিডিয়াম মাল্টি রোল কমব্যাট এয়ারক্র্যাফ্ট। ভারতীয় বায়ুসেনার সাজসরঞ্জামের আধুনিকীকরণ ও ক্ষমতা বাড়ানোর প্রক্রিয়ার অঙ্গ হিসাবে ভারত ৩৬টি রাফাল কেনার চুক্তি করেছে। এর আনুমানিক খরচ ধরা হয়েছে ৫৮০০০ কোটি টাকা ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *