নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ ডিসেম্বর৷৷ শক্তিশালী অর্থনৈতিক স্বয়ংসম্পূর্ণ সমাজ ও জাতি গঠনে নারী জাতিকে যথোপযুক্ত সম্মান দিতে হবে৷ নারিীদের ভয়মুক্ত ও নির্যাতনমুক্ত করতে পারলেই শ্রেষ্ট সমাজ গঠন সম্ভব৷ শ্রেষ্ঠ সমাজ গঠনের মাধ্যমেই শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে উঠবে৷ প্রতিটি পরিবারকে নেশামুক্ত ও নারী নির্যাতন মুক্ত রাখার শপথ নিতে হবে৷ আজ কমলপুরের দুর্গাচৌমুহনীতে ত্রিপুরাসুন্দরী পূজা ও ত্রিপুরেশ্বরী পূজা ও মেলা কমিটির উদ্যোগে দুর্গাচৌমুহনী বাজারে তিন দিনব্যাপীত্রি ত্রিপুরাসুন্দরী পূজা ও মেলার আজ উদ্বোদন করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমারদেব৷ মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বিজেপি-আইপিএফটি সরকারের গৃহীত বিভিন্ন ইতিবাচক কর্মসূচি ও সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করেন৷ তিনি বলেন, স্বচ্ছ নিয়োগনীতির চাহিদা ছিলো সরকারের কাছে, সরকার তা বাস্তবায়ন করে নতুন নিয়োগনীতি এনেছে৷ বর্তমানে যোগ্যতাসম্পন্নরা তাদের মেধার ভিত্তিতে চাকরি পাচ্ছেন৷ গত সাড়ে আট মাসে এই শতাংশের হার অনেক বেড়েছে৷ অর্থাৎ রাজ্যে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে৷ কোনও ব্যক্তি অপরাধ বা অন্যায়
করলে তার শাস্তির ব্যবস্তা করতে বর্তমান সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ৷ তিনি বলেন, মহিলা নির্যাতনের সংখ্যা শতকরা ৪০ শতাংশ ও নাবালিকা ধর্ষণের সংখ্যা গড়ে ১০ শতাংশ হ্রাদ পেয়েছে রাজ্যে৷ সরকারেরলক্ষ্য তিন বছরের মধ্যে ত্রিপুরাকে শ্রেষ্ঠ রাজ্যে পরিণত করা৷ তারজন্য নারী নির্যাতনমুক্ত ও নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়ে তুলতে হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি উল্লেখ করেন ইতিমধ্যে ২০০ এর বেশি নেশাকারবারী ও অবৈধ নেশা বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিকে জেলে যেতে হয়েছে৷ তিনি বলেন, পূর্বতন সরকারের আমলে ত্রিপুরার যুব সমাজ ফেন্সিডিল, হেরোইন, ব্রাউন সুগার, গাঁজার অবৈধ বাণিজ্য ও ব্যবহারে কুলষিত হয়েছে৷ বর্তমান সরকারের আমলে এখনও পর্যন্ত ষাট হাজার কিলো গাঁজা উদ্দার করা হয়েছে৷ তিনি আরও বলেন, রাজ্যে অনেকেই রাবার চাষের সঙ্গে যুক্ত৷ রাবার বিক্রি করে প্রতি কেজিতে তারা বর্তমানে ৯০-১০০ টাকা পান৷ তিনি উল্লেখ করেন বিভিন্ন টায়ার কোম্পানীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিলো৷ তারা এসেছিলেন৷ তাদের সঙ্গে রাজ্যের রাবার সরাসরি ক্রয়ের ব্যপারে আলোচনা হয়েছিল৷ তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করা হবে রাবারের নূ্যনতম ক্রয়মূল্য যেন ১৫০ টাকা প্রতি কেজি করা হয়৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এতে করে রাজ্যের কেটা বিরাট অংশের মানুষ উপকৃত হবেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে ত্রিপুরা হবে সেই রাজ্য যার সঙ্গে জলপথে বাংলাদেশের সম্পর্ক স্তাপন হবে৷ বাংলাদেশের আশুগঞ্জ বন্দর থেকে জলপথে সামগ্রী সোনামুড়া দিয়ে ত্রিপুরা তথা ভারতে ঢুকবে৷ তিনি বলেন, ত্রিপুরা সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চলে লজিস্টিক হাবে পরিণত হবে৷ রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের সামনে বহুমুখী ব্যবসা, শিল্পের দ্বারা উন্মোচিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে৷ ইতিমধ্যে প্রায় চার হাজারের মতো যুবক-যুবতি স্বরোজগারে যুক্ত হয়েছেন৷ এছাড়া শিঘা দপ্তর, টিএসআর, মহাকরণ সহ বিভিন্ন দপ্তরে লোক নিয়োগ করা হবে৷ তিনি বলেন, শুধুমাত্র চাকরি দিলেই বেকার সমস্যার সমাধান হবে না৷ তাই স্বরোজগার, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সাহায্য নিয়ে ক্ষুদ্র শিল্প, সমবায় ব্যবসা ইত্যাদির উদ্যোগ নিতে হবে৷ রাজ্য সরকার এই পরিবেশ তৈরি করবে৷ এতে করে ঘরে ঘরে রোজগারের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হবে৷ এদিনের ত্রিপুরাসুন্দরী মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব, বিধায়ক আশিস সাহা, দুর্গাচৌমুহনী ও সালেমা ব্লকের বিএসি চেয়ারম্যানগণ৷
2018-12-09

