নিজস্ব প্রতিনিধি, চুড়াইবাড়ি, ৩ নভেম্বর৷৷ ফের প্রমাণ হল সর্ষের মধ্যেই রয়েছে ভূত৷ বাগমা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিমল দেববর্মাকে অপসারণের

রেশ কাটেনি৷ এরই মধ্যে গাঁজাকান্ডে মদত যোগানোর অভিযোগে শুক্রবার রাতে সাসপেন্ড করা হয়েছে চুড়াইবাড়ি থানার এসআই শুক্রমণি দেববর্মাকে৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়ার বাস্তব রূপ দিতে গিয়ে একাংশ পুলিশ কর্তা গোপনে নেশা পাচারকারীদের সঙ্গে হাত মেলানোয় গোটা প্রশাসনকে কালিমালিপ্ত হতে হচ্ছে৷
চুড়াইবাড়ি পুলিশ সম্পর্কে স্থানীয় জনগণের নানা অভিযোগ দীর্ঘদিনের৷ অনেক সময় তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে সে সব চাপা পড়ে যেত৷ কিন্তু, শুক্রবার সংশ্লিষ্ট থানায় উদ্ধারকৃত ২৫ লক্ষ টাকার লরি বোঝাই গাঁজাকান্ডে ভাগ বসাতে গিয়ে শাস্তির খাঁড়া নেমে এসেছে এসআই শুক্রমণি দেববর্মার ওপর৷
ধর্মনগরের এসডিপিও জ্যোতিষ্মান দাসচৌধুরী জানান, শুক্রবার রাতেই প্রাথমিক তদন্তে গাঁজাকান্ডে শুক্রমণিকে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে৷ অভিযোগের ভিত্তিতে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করেন পুলিশ সুপার ভানুপদ চক্রবর্তী৷ তবে বিষয় সম্পর্কে থানার ওসি কাজল রুদ্রপালের কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি৷
গতকাল শুক্রবার দুপুরে চুড়াইবাড়ি থানার এসআই শুক্রমণি দেববর্মা ডব্লিওবি-৫৯-এ-৫৩৪১ নম্বরের ১২ চাকার একটি লরি আটক করে তাতে তল্লাশি করে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকার গাঁজা উদ্ধার করে৷ এর সঙ্গে লরির চালক ও সহচালককে আটক করা হয়েছিল৷ কিন্তু, মোটা টাকার বিনিময়ে ধৃতদের তিনি ছেড়ে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠে৷ এমনকি ৩৫ লক্ষ টাকার গাঁজাগুলিকে ২৫ লক্ষ টাকার বর্ণনা করে দশ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ফন্দিও করেছিলেন শুক্রমণি৷ এ খবর এক সময় ভাইরাল হয়ে যায়৷ যাবতীয় অভিযোগের ভিত্তিতে এসআই শুক্রমণি দেববর্মাকে অনির্দিষ্টকালীন সময়ের জন্য সাসপেন্ড করেন পুলিশ সুপার৷ থানার অন্য এক এসআই সাধন মজুমদারও এ ধরনের অসাধু কান্ডে পরোক্ষ মদত যোগাচ্ছেন বলে তাঁর বিরুদ্ধেও অভিযোগের আঙুল উঠতে শুরু হয়েছে৷ এদিকে, গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকার সচেতন মহলে নানা জল্পনার সৃষ্টি করেছে৷ স্থানীয়রা পুলিশের ভূমিকার কড়া ভাষায় ধিক্কার জানিয়েছেন৷
প্রসঙ্গত, চুড়াইবাড়ি থানার পুলিশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ উঠেছে, সেখানে কর্মরত পুলিশ আধিকারীক ও কর্মীরা নেশা কারবারীদের সাথে গোপন সখ্যতার ভিত্তিতে বহিঃরাজ্য থেকে নেশা সামগ্রী আমদানী এবং ত্রিপুরা থেকে বহিঃরাজ্যে নেশা সামগ্রী রপ্তানীতে মদত যোগিয়ে আসছে৷ আজ তা প্রমাণিত হয়েছে৷

