BRAKING NEWS

কৃষক মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ, প্রতিবাদ কেজরিওয়ালের, রাজনাথের সঙ্গে বৈঠক কৃষক নেতাদের

নয়াদিল্লি, ২ অক্টোবর (হি.স.) : কৃষি ঋণ মকুব, জ্বালানি তেলের ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি সহ একাধিক দাবিতে ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের কৃষক মিছিলের জেরে উত্তেজনা ছড়াল দিল্লি-গাজিয়াবাদ সীমান্তে। দিল্লির ঢোকার মুখে কৃষকদের মিছিলকে আটকে দেয় দিল্লি পুলিশ।

ক্ষোভে ক্ষিপ্ত কৃষকেরা যাতে কোনও ভাবে দিল্লি শহরের ভেতর না ঢুকতে পারে তার জন্য উত্তরপ্রদেশ থেকে দিল্লি ঢোকার সমস্ত রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। আগাম সতর্কতা হিসেবে পূর্ব দিল্লি এবং এবং উত্তর দিল্লিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। আগামী ৮ই অক্টোবর পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে বলে প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে একাধিক দাবিতে কৃষকেরা ট্রাক্টর, ট্রোলিতে করে এই ‘কিষাণ ক্রান্তি পদযাত্রা’ নামক মিছিলে যোগ দেয়। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে কৃষকরা এগিয়ে যেতে সফল হলেও দিল্লিতে ঢোকার মুখে বাধা দেয় দিল্লি পুলিশ। সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করে দিল্লি পুলিশ। বিশাল ব্যারিকেডে ব্যূহো রচনা করে এই মিছিল আটকাতে তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে তারা বিপুল পরিমাণ জল কামানও ব্যবহার করে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কৃষকদের উপর টিয়ার গ্যাসও ছোড়ে পুলিশ।

২৩ সেপ্টেম্বর হরিদ্বারে এই কৃষকেরা উত্তরাখন্ডের হরিদ্বারের একত্রিত হয়ে দিল্লিতে গান্ধী জয়ন্তীর দিন বিক্ষোভ করার সঙ্কল্প গ্রহণ করে। কৃষকদের ঋণ মকুব, বিদ্যুৎতে মাসুল কমানো,জ্বালানি তেলের দাম কমানো সহ একাধিক দাবিতে এই মিছিলের আয়োজন করা হয়। দিল্লি পুলিশের মিছিল আটকানোর প্রতিবাদে ভারতীয় কৃষাণ ইউনিয়নের সভাপতি নরেশ তিকাইত জানিয়েছেন, কেন আমাদের এখানে থামানো হল। শান্তিপূর্ণ ভাবে এই মিছিল এগিয়ে যাচ্ছিল। আমরা যদি আমাদের সমস্যার কথা প্রশাসনকে না জানাই তবে কাকে জানাবো? এই মিছিলকে সমর্থন জানিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, কৃষকদের কণ্ঠকে এইভাবে দমিয়ে রাখা যাবে না। দিল্লি সবার জন্য। কৃষকদের দিল্লিতে ঢুকতে দিতে হবে। যদি তাদের ঢুকতে না দেওয়া হয় তবে তা অন্যায়। আমরা কৃষক এবং তাদের দাবির পক্ষে রয়েছি।

কৃষকদের এই বিশাল বিক্ষোভ মিছিলের প্রেক্ষিতে বলতে গিয়ে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাবত জানিয়েছে, কৃষক নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। বৈঠকে কৃষকদের দাবিগুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ঐক্যমত্যে পৌছনো গিয়েছে। উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী লক্ষী নারায়ণ, সুরেশ রাণা এবং আমি গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলব। জেডিইউ নেতা কে সি তিয়াগি জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণ এবং নিরস্ত্র কৃষকেরা রাজঘাটের দিকে যাচ্ছিল। টিয়ার গ্যাস ছুড়ে, লাঠিচার্জ করে নির্মম ভাবে কৃষকদের উপর আক্রমণ করা হয়েছে। পুলিশি বর্বরতার তীব্র নিন্দা করছি। স্বভিমানি সৎকার সংগঠনের নেতা আর শেট্টি জানিয়েছেন, কৃষকরা জঙ্গি বা মাওবাদী নয়। তারা নিজেদের দাবি দাওয়া নিয়ে মিছিল করছিল। তাই তাদের কি এই মিছিলের অধিকারটুকু নেই। কৃষকদের প্রতি যদি অবিচার করা হয় তবে আমি তবে আমি মোদীজিকে সতর্ক করে দিয়ে বলছি তিনিও পরবর্তী নির্বাচনে পরাজিত হবেন।

উল্লেখনীয় এর আগে আগাম সতর্কতা হিসেবে উত্তর গাজিয়াবাদ জুড়ে পুলিশি প্রহরা বাড়ানো হয়েছিল। লালকুয়া ও প্রতাপবিহারে ৯ নম্বর জাতীয় সড়কে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *