নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৫ সেপ্ঢেম্বর৷৷ রাজ্যের শিক্ষক কর্মচারী ও পেনশনার্সরা সপ্তম বেতন কমিশন কোনও ভাবেই পাবেন না৷ তাই, রাজ্য সরকার ভার্মা কমিটি গঠন করেছে৷ বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে এই দাবি করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল রায়৷ তাঁর কথায়, কেন্দ্রীয় সরকার সপ্তম বেতন কমিশনের কাঠামো তৈরি করে রেখেছে৷ তা দেখে রাজ্যেও সপ্তম বেতন কমিশন লাগু করা যেতো৷ কিন্তু, অর্থের সংস্থান সম্ভব নয় তাই, ভার্মা কমিটি গঠন করে রাজ্য সরকার গোজামিল দিতে চাইছে৷ এদিকে, পেট্রোল – ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি এবং ডলারের তুলনায় টাকার রেকর্ড পতন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেছেন গোপালবাবু৷
গোাপালবাবুর বক্তব্য, বিধানসভা নির্বাচনের আগে মন্ত্রিসভা গঠনের পরদিনই সপ্তম বেতন কমিশন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো বিজেপি৷ সেই মোতাবেক ইতিমধ্যেই রাজ্যের শিক্ষক কর্মচারী ও পেনশনার্সরা সপ্তম বেতন কমিশনের সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু, প্রতিনিয়ত রাজ্য সরকার সপ্তম বেতন কমিশনের জন্য গঠিত ভার্মা কমিটির মেয়াদ বাড়িয়ে চলেছে৷ তাঁর কটাক্ষ, তালবাহানার জন্যই রাজ্য সরকার ভার্মা কমিটি গঠন করেছে৷ কারণ, অর্থ দপ্তরের করণীকরাই সপ্তম বেতন কমিশনের জন্য হিসেবে নিকেশ করতে সক্ষম৷ তার জন্য আলাদাভাবে কোনও কমিটি গঠন করার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করেন না গোপাল রায়৷ তাঁর দাবি, বাজেটে ৯০৪ কোটি টাকা কর্মচারীদের অতিরিক্ত বরাদ্দ রেখেছে রাজ্য সরকার৷ অথচ, সপ্তম বেতন কমিশন মোতাবেক সুযোগ সুবিধা দিতে গেলে প্রয়োজন ১২ হাজার কোটি টাকা৷ তাই তাঁর বিশ্বাস, রাজ্য সরকার সপ্তম বেতন কমিশন লাগু করবে না৷ কারণ, সপ্তম বেতন কমিশনের কাঁঠামো কেন্দ্রীয় সরকার তৈরি করে রেখেছে৷ সেই কাঁঠামোর অনুকরণে রাজ্যেও সপ্তম বেতন কমিশন লাগু করা যেতে পারে৷ কিন্তু, অর্থের সংস্থান সম্ভব নয় তাই ভার্মা কমিটি গঠন করে সপ্তম বেতন কমিশন নিয়ে তালবাহানা করছে রাজ্য সরকার৷ তাঁর দাবি, সপ্তম বেতন কমিশন দেওয়া সম্ভব না হলে প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতির রাজ্যের সমস্ত শিক্ষক কর্মচারী ও পেনশনার্সদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত৷
এদিকে, পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন গোপাল রায়৷ তাঁর বক্তব্য, লোকসভা নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, পেট্রোল – ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধিতে যাঁরা লাগাম টানতে পারেন না তাঁদের ক্ষমতায় বসে থাকার কোনও অধিকার নেই৷ অথচ, এখন পেট্রোল-ডিজেলের মূল্য ইউপিএ আমলের তুলনায় অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ আগরতলায় পেট্রোল ৭৭৭৮ টাকায় এবং ডিজেল ৭০১৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে৷ তাঁর কটাক্ষ, খুব শীঘ্রই পেট্রোল লিটারে ১০০ টাকা ছাড়াবে৷ এদিন তিনি বলেন, পেট্রোল – ডিজেলের উপর কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যে হারে শুল্ক আদায় করছে তা মুকুব করে দিলেই দাম অনেকটাই কমবে৷ এদিকে, ডলারের তুলনায় টাকার মূল্যের ক্রমশ পতন হওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেছেন তিনি৷ তাঁর বক্তব্য, বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছিলেন, ডলারের তুলনায় টাকার মূল্য পতন হলে তার মারাত্মক প্রভাব ভারতীয় অর্থনীতিতে পড়বে৷ কিন্তু, এখন হয়তো বা সেকথা তিনি বেমালুম ভুলে গেছেন, কটাক্ষের সুরে বলেন গোপাল বাবু৷