BRAKING NEWS

ঝাড়খণ্ডের পাকুড়িয়া থেকে আরও ১ জেএমবির জঙ্গি গ্রেফতার

কলকাতা, ৮ আগস্ট, (হি.স.): ঝাড়খণ্ডের পাকুড়িয়া থেকে আরও এক জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ বা জেএমবির জঙ্গিকে বুধবার গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিসের এসটিএফ । ধৃত জঙ্গির নাম দিলওয়ার হাসান ওরফে আলি হাসান ওরফে উমর । ধৃত জঙ্গি মালদার কালিয়াচকের বাসিন্দা । এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে এসটিএফের হাতে ১০ জন জেএমবি জঙ্গি ধরা পড়ল ।

এসটিএফ সূত্রে জানা গেছে, বুদ্ধগয়ায় বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিল মালদার কালিয়াচকের সুলতানগঞ্জের দিলওয়ার হোসেন ওরফে উমর । সে জেএমবির একটি মডিউলের মাথা । পুলিশি ধরপাকড় শুরু হওয়ার পর গা ঢাকা দিয়েছিল সে । গোপন সূত্রে তদন্তকারীরা খবর পান, উমর লুকিয়ে আছে ঝাড়খণ্ডে। সেইমতো তার উপর নজর রাখা হচ্ছিল । আজ দুপুর সোয়া ১২টা নাগাদ ঝাড়খণ্ডের পাকুরিয়ার সিধো কানহো মোড় থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় ।

এই বছরের ১৯ জানুয়ারি বড়সড় বিস্ফোরণের হাত থেকে রক্ষা পায় বুদ্ধগয়ার মহাবোধি মন্দির । ওইদিন মন্দির চত্বরে ৩টি শক্তিশালী বিস্ফোরণের ছক ছিল জঙ্গিদের । মন্দিরের কালচক্র ময়দানে একটি খাবারের দোকানে প্রথম বিস্ফোরকটি রাখা ছিল । তাতে আগুন ধরে যায় । তারপরই বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্র সামনে আসে। তল্লাশি চালিয়ে আরো দুটি বিস্ফোরক উদ্ধার হয় । সেই সময় মন্দিরে নিগমা পুজো চলছিল । বৌদ্ধ ধর্মগুরু দলাই লামাও ছিলেন মন্দিরে । পরে জানা যায়, জঙ্গিদের টার্গেট ছিলেন খোদ দালাই লামা ।

বুদ্ধগয়ায় বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্রের ঘটনায় এনআইএর পাশাপাশি পৃথক মামলা করে তদন্ত করছে এসটিএফ । গতকাল কর্নাটকের রামানগর থেকে ধরা পড়ে ওই ষড়যন্ত্রের মাস্টারমাইন্ড জাইদুল ইসলাম ওরফে বোমারু মিজান । সে ভারতে কাজ করছিল জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়ার প্রধান হিসেবে । যদিও ভারতে তার ছদ্মনাম কওসর । জামাতুল মুজাহিদিন প্রধান সালাউদ্দিন বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ মিজানকে দায়িত্ব দিয়েছিল সংগঠনের ভারতীয় শাখার । কর্নাটকের কোলারের একটি টেকনলজি ইন্সটিটিউটে চাকরি নিয়ে গোপনে চালিয়ে যাচ্ছিল সংগঠনের মডিউল তৈরির কাজ । কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি । এনআইএর হাতে ধরা পড়ে যায় ।

তার আগে শুক্রবার এনআইএ কেরালার মালাপ্পুরমের একটি বাঙালি শ্রমিক কলোনি থেকে গ্রেপ্তার করে ২ জনকে । বুদ্ধগয়া বোমা বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্রের মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয় । তাদের নাম আবদুল করিম (১৯) ওরফে ছোট্টা এবং মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে তুহিন। ছোট্টার বাড়ি মুর্শিদাবাদের ইলিজাবাদে। আর তুহিন বীরভূমের বাসিন্দা । তুহিন জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়ারর অন‍্যতম মাথা । সে বিস্ফোরক বানাতে ওস্তাদ । খোদ মিজান তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে বলে খবর । মিজান তুহিনের উপর নির্ভর করত অনেকটাই । একমাত্র সেই জানত মিজানের অবস্থান । তাকে জেরা করেই বোমারু মিজানের খোঁজ পায় এনআইএ । তারপরই গতকাল বেঙ্গালুরু থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরের রামানগর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মিজানকে ।

জানা যায়, ষড়যন্ত্রের জাল বোনা হয় হায়দরাবাদে। গতবছরের ৫ নভেম্বর হায়দরাবাদে আদিল, পয়গম্বর, কালু, আবদুল করিম (জুনিয়র), উমর, নুর বৈঠক করে। বৈঠকে ছিল জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়ারর নেতারা । এই বৈঠকেই হয়েছিল দলাই লামা হত্যার ছক । তারপর পয়গম্বর শেখ ও জামিরুল শেখ, নুর আলম মোমিনরা বাংলায় ফিরে আসে । মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে বোমারু মিজানের দেখানো কৌশলে বানানো হয় বিস্ফোরক । পয়গম্বরও জামিরুলকে গ্রেপ্তারের পর রীতিমতো বিস্ফোরকের ভাণ্ডারের সন্ধান পায় এসটিএফ ।‌ মুর্শিদাবাদ থেকে প্রচুর জিলেটিন স্টিক, ডিটোনেটর,অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, ব্যবহৃত-অব্যবহৃত বোমার সকেট এবং টিফিন বাক্স উদ্ধার করা হয়। পরে হুগলি থেকে গ্রেফতার করা হয় আরও একজনকে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *