নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ জুলাই৷৷ রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে বিরাট অশনী সংকেত অপেক্ষা করছে৷ সিপিএমের মতে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কাজ ও খাদ্যের অভাবের কারণে সমাজে ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়বে৷ তাতে, সামাজিক বন্ধন বিনষ্ট হবে৷ শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে এইভাবেই রাজ্য সরকারকে সতর্ক করল বিরোধী দল সিপিএম৷ পাশাপাশি, রেগা নিয়ে রাজ্য সরকার ভুল তথ্য দিচ্ছে, সঠিক প্রমাণ করার জন্য চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে সিপিএম৷
এদিন সিমনা বিধানসভা কেন্দ্রের পূর্ব সিমনা এডিসি ভিলেজের দাইগ্যাবাড়ি, শানখলা এডিসি ভিলেজের সোনাইজলা এলাকাগুলি সফর করেন সাংসদ শঙ্কর প্রসাদ দত্ত, এডিসি’র মুখ্য নির্বাহী সদস্য রাধাচরণ দেববর্মা, বিধানসভার প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ পবিত্র কর এবং সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক প্রণব দেববর্মা৷ সফরকালে তাঁদের অভিজ্ঞতা এদিন সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে তুলে ধরেন তাঁরা৷ তাঁদের কথায়, ওই এলাকাগুলিতে কাজ ও খাদ্যের ভীষণ অভাব দেখা দিয়েছে৷ গ্রামীণ অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়েছে৷ ফলে, বাজারে মন্দা দেখা দিয়েছে৷
শঙ্কর প্রসাদ দত্তের কথায়, রেগায় কাজকর্ম থেকে শুরু করে বাজারের অবস্থা খুবই করুণ৷ রেশনের চাল এখন বিক্রি হচ্ছে না৷ কারণ, মানুষ এখন ক্রয় ক্ষমতা হারিয়েছেন৷ তাই, রেশনের চালও বিক্রি হচ্ছে না, কটাক্ষের সুরে বলেন সাংসদ শ্রীদত্ত৷
সফরের অভিজ্ঞতা নিয়ে এডিসি’র মুখ্যনির্বাহী সদস্য রাধাচরণ দেববর্মাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷ তাঁর সাফ কথা, বিজেপি-আইপিএফটি জোট রাজত্বে গ্রামীণ অর্থনীতি বিপদের মুখে৷ তাঁর কথায়, সিমনা এলাকা কঙ্কাই বাঁশের জন্য সুপ্রসিদ্ধ৷ অথচ ওই বাঁশের এখন বাজার পড়ে গেছে৷ বাঁশ চাষীরা সঠিক দাম পাচ্ছেন না৷ সাথে তিনি যোগ করেন, সম্প্রতি রাজ্য সরকার দশটি ব্লকে বিনামূল্যে চাল দিয়েছে ঠিকই৷ কিন্তু, শুধু সিমনা এলাকাতেই ৬০-৬৫ পরিবার রেশন থেকে ন্যায্য চাল তুলতে পারছেন না৷ কারণ, আধার গন্ডগোলের কারণে অনেকেই রেশনের চাল কিনতে পারছেন না৷ তাঁর মতে, রেশনে অনলাইন ব্যবস্থায় ভীষণ সমস্যা সৃষ্টি করেছে৷ অথচ, মানুষ সাহস করে প্রতিবাদে এগিয়ে আসছেন না৷ সারা রাজ্যেই ভয়ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে রয়েছে৷ তাঁর মতে, রাজ্যের পরিস্থিতি যদি এমন থাকে, তবে বিরাট অশনী সংকেত অপেক্ষা করছে৷ তাঁর যুক্তি, মানুষ ভয়ঙ্কর খাদ্যাভাবে ভুগবে৷ চুরি, ডাকাতির উপদ্রব বাড়বে৷ তাতে সমাজে ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়বে৷ কারণ, এই পরিস্থিতির কারণে সমাজিক বন্ধন বিনষ্ট হবে৷ তাই তাঁর উপদেশ, সরকারের উচিৎ উৎসবে ব্যস্ত হওয়ার বদলে বাজার অর্থনীতি চাঙ্গা করুক৷
এদিন বিধানসভার প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ পবিত্র কর সফরের বর্ণনা দিতে রেগা নিয়ে রাজ্য সরকারের দাবিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন৷ তাঁর কথায়, সিমনাতে চার মাসে আড়াই দিন কাজ হয়েছে৷ অথচ গড়ে মাসে ৭-৮ দিন কাজ হওয়া প্রয়োজন ছিল৷ তাঁর বক্তব্য, অভিযোগ জানাতে হবে এর জন্য অভিযোগ তুলছি না৷ সরকার সরেজমিনে খতিয়ে দেখুক৷ তাঁর সাফ কথা, রেগায় বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার যে দাবি করছে তা লিখিত আকারে দেওয়া হোক৷ আধিকারীকদের দেওয়া রিপোর্টের বদলে পঞ্চায়েত মন্ত্রীকে ব্লকে ব্লকে সরেজমিনে রেগায় কাজের হিসেব নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন পবিত্রবাবু৷ রেগায় বাস্তব পরিস্থিতির সাথে সরকারী তথ্যের মিল খঁুজে বের করার জন্য রাজ্য সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন তিনি৷