ত্রিপুরা ও আসামে ছেয়ে গেছে প্লাস্টিক আটা, আতঙ্কে জনগণ, ময়দানে প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩০ মে ৷৷ কৃত্রিম প্লাস্টিক আটায় ছেয়ে গেছে অসম-ত্রিপুরা আন্তঃরাজ্য সীমান্তবর্তী এলাকা৷ এমন খবরে সীমান্তবর্তী দুই রাজ্যের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে৷ সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে চাউর হয়েছে, বিশেষ প্রযুক্তিতে তৈরি কৃত্রিম প্লাস্টিকের আটা বাজারজাত করা হয়েছে৷ এ ধরনের আটা পাওয়া যাচ্ছে ত্রিপুরার বিভিন্ন সরকারি সুলভমূল্যের দোকানে৷ তবে এ ধরনের কোনও দোকানে সন্দেহজনক আটার হদিশ পেলে তাৎক্ষণিক অসামরিক সরবরাহ দফতরের আধিকারিকদের জানাতে বলা হয়েছে৷ তাছাড়া এমন সন্দেহজনক আটা থেকে সকলকে সতর্ক থাকতেও সরকারিভাবে জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে৷ সন্দেহজনক আটাগুলি অসমের হাফলং থেকে সরবরাহ হয়েছে বলে খবর৷ অসম সীমান্তবর্তী উত্তর ত্রিপুরার কদমতলা, কুর্তি, বাঘবাসা, সরসপুর গ্রামের বাসিন্দা ফুলু নমশুদ্র, বাসন্তী দাস, তপন নাথ, জয়কুমার নাথ প্রমুখ আতঙ্কিত মানুষ জানান, খোলা বাজার থেকে কেনা আটায় এখন পর্যন্ত কোনও ভেজাল পাওয়া যায়নি৷ তবে খোদ ত্রিপুরা সরকার অনুমোদিত সুলভমূল্যের দোকান থেকে কেনা আটাকে কৃত্রিম বলে শনাক্ত করা হয়েছে৷ তাঁরা জানান, এ সব আটা দিয়ে রুটি বা অন্য কোনও খাদ্যসামগ্রী তৈরী করা যাচ্ছে না৷ এগুলোকে জলে মাড়ালে রবারের পিণ্ডে পরিণত হয়ে যায়৷  তাছাড়া রবারের টায়ার পোড়ার দুর্গন্ধও নাকে লাগে তাদের৷

এদিকে সংশ্লিষ্ট এলাকার বিভিন্ন রেশন দোকান মালিকদের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, এই আটাগুলো সরকারিভাবে অসমের ডি হাসাও  জেলার হাফলং থেকে আমদানি করা হয়েছে৷ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ধর্মনগরের অসামরিক খাদ্য ও সরবরাহ দফতর৷ সন্দেহজনক আটার নমুনা সংগ্রহ করে সেগুলো তাঁরা পরীক্ষাগারে পাঠিয়েছেন৷ পাশাপাশি এ ধরনের আটা বন্টন না করতেও সুলভমূল্যের দোকান মালিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে৷ এদিকে  ত্রিপুরার বিভিন্ন এলাকায় প্লাস্টিকের আটা বিক্রি হচ্ছে বলে যে খবর চাউর হয়েছে, তার প্রকৃত সত্যতা নিয়ে এখনও খাদ্য দফতর থেকে কোনও স্পষ্টীকরণ দেওয়া হয়নি৷ তবে ফটিকরায় এবং ধর্মনগরের একটি ন্যায্যমূল্যের দোকানে প্লাস্টিক আটা বিক্রি হচ্ছে অভিযোগ পেয়ে খাদ্য দফতরের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আটার নমুনা নিয়ে আসেন৷ প্রকৃত সত্যতা না জানা পর্যন্ত তা বিক্রি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে৷

এদিকে, বুধবার উদয়পুরের সোনামুড়া ভিলেজ রেশন দোকানেও মিলেছে প্লাস্টিকের আটা৷ রেশন ডিলার শিবু সাহা এদিন ভোক্তাদের মধ্যে আটা সরবরাহ করেন৷ মাসের অন্তিম দিন হওয়ায় রেশনে ভিড় ছিল৷ ভোক্তারা আটা সংগ্রহ করেই দেখতে পান এগুলি প্লাস্টিক মিশ্রিত৷ সাথে সাথেই উত্তেজনার সৃষ্টি হয়৷ খবর দেওয়া হয় মহকুমা প্রশাসনকে৷ এদিন সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাত হয়ে যায়৷ তাই আগামীকাল মহকুমা শাসক আটার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠাবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *