BRAKING NEWS

২০১৮ রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থীদের অর্থ ব্যয়ের সীমা অতিক্রম হয়নি, এডিআর রিপোর্টে প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩০ এপ্রিল ৷৷ ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীই নির্বাচন কমিশন অনুমোদিত অর্থ ব্যয়ের সীমা অতিক্রম করেননি৷ এসোসিয়েশন ফর ডেমেক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর) এর রিপোর্টে তা প্রকাশি হয়েছে৷ এদিকে, ২০১৩ বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনে ভোটের হারে ৩ শতাংশ কমেছে৷ কিন্তু একই হারের ব্যবধানে এবছরও সরকার গঠিত হয়েছে৷ ২০১৩ বিধানসভা নির্বাচনে ভোটের হার ছিল ৯৪ শতাংশ৷ ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনে ৩ শতাংশ কমে তা দাড়িয়েছে ৯১ শতাংশ৷ কিন্তু, ২০১৩ বিধানসভা নির্বাচনে ৫৩  শতাংশ ভোট পেয়ে বামফ্রন্ট জয়ি হয়েছিল৷ এবছরও ৫৩ শতাংশ ভোট পেয়েই বিজেপি – আইপিএফটি জোট সরকার গঠিত হয়েছে৷ এসংক্রান্ত সমস্ত তথ্য এডিআর প্রকাশ করেছে৷

এবছর নির্বাচনে ১৬টি রাজনৈতিক দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে৷ নির্দল সহ মোট প্রার্থী ছিলেন ২৯৭ জন৷ ২০১৩ বিধানসভা নির্বাচনে ১৪ টি রাজনৈতিক দলের নির্দল সহ মোট প্রার্থী সংখ্যা ছিল ২৪৯জন৷ গত বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় এবছর ভোটের হার কমেছে ঠিকই কিন্তু বিজয়ী দলের প্রার্থীদের অধিকাংশদেরই ভোটের হার বেড়েছে৷ তাৎপর্য্য পূর্ণ বিষয় হলো, এবার ‘না’ ভোটার অনেক বেড়েছে৷ সবচেয়ে বেশি ‘না’  ভোট পড়েছে রাধাকিশোরপুর এবং ছাওমনু বিধানসভা কেন্দ্রে৷ ঐ দুটি কেন্দ্রে যথাক্রমে ২.১৩ শতাংশ এবং ১.২৮ শতাংশ ‘না’ ভোট পড়েছে৷

এবার জয়ের ব্যবধানের ক্ষেত্রে টাকারজলা কেন্দ্রে আইপিএফটি প্রার্থী এনসি দেববর্মা সবচেয়ে বেশি ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন৷ তাঁর জয়ের ব্যবধান ৫৭ শতাংশ৷ তিনি এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোটও পেয়েছেন৷ তাঁর প্রাপ্ত ভোটের হার ৬২ শতাংশ৷ এছাড়া টাউন বড়দোয়ালি কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী আশীষ কুমার সাহা এবং বনমালিপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী বিপ্লব কুমার দেব বেশি ভোট পেয়েছেন৷ তাঁরা শতাংশের হিসাবে যথাক্রমে ৬১.৯ শতাংশ এবং ৬১.৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন৷ জয়ের ব্যবধানের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন টাউন বড়দোয়ালি কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী আশীষ কুমার সাহা৷ শতাংশের হিসেবে তাঁর জয়ের ব্যবধান ৪৬ শতাংশ৷

এবারের নির্বাচনে মোট ৪৭ জন বিধায়ক ৫০ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়েছেন৷ এবং ১২ জন বিধায়ক ৫০ শতাংশের কম ভোট পেয়েছেন৷ এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে কম ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন সিপিএমের মবস্বর আলি৷ তিনি ৪৫.৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন৷ এছাড়া আইপিএফটির ধনঞ্জয় ত্রিপুরা ৪৭.৩ শতাংশ এবং সিপিএমের তপন চক্রবর্তী ৪৭.৯ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন৷ বিজেপি দলের চার জন প্রার্থী, সিপিএমের ছয় জন এবং আইপিএফটির দুই জন প্রার্থী ৫০ শতাংশের কম ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন৷

এদিকে, এডিআর প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাবও প্রকাশ করেছে৷ তাৎপর্য্য পূর্ণ বিষয় হলো, নির্বাচন কমিশন অনুমোদিত ব্যয়ের সীমার তুলনায় অনেক কম খরচ করেছেন প্রার্থীরা৷ ২৫ জন বিধায়ক ১০ লক্ষ টাকার কম নির্বাচনে ব্যয় করেছেন৷ এবারের নির্বাচনে গড় ব্যয়ের পরিমাণ ১১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা৷ এডিআর রিপোর্ট অনুযায়ী বিজেপির ৩৬ জন বিধায়কের গড় ব্যয় ১২ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা৷ সিপিএমের ১৬ জন বিধায়কের গড় ব্যয় ৭ লক্ষ ৬৮ টাকা এবং আইপিএফটির ৮ জন বিধায়কের গড় ব্যয় ১০ লক্ষ ৬৯ টাকা৷ এবারের নির্বাচনে শম্ভূুলাল চাকমা সবচেয়ে বেশি খরচ করেছেন৷ তাঁর নির্বাচনী ব্যয় বরাদ্দের ৯৯ শতাংশ তিনি খরচ করেছেন৷ এছাড়া প্রেম কুমার রিয়াং ৯৮ শতাংশ এবং বিশ্ববন্ধু সেন ৯৫ শতাংশ খরচ করেছেন৷

মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে সান্ত্বনা চাকমা নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি খরচ করেছেন৷ তিনি নির্বাচনে ১৬ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা খরচ করেছেন৷ এছাড়া বেশি খরচ করেছেন খাদ্য মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব৷ তাঁর খরচের পরিমান ১৫ লক্ষ ১৩ হাজার টাকার৷ এদিকে, সবচেয়ে কম খরচ করেছেন রাজস্ব মন্ত্রী এন সি দেববর্মা৷ তিনি মোট বররাদ্দের ৩৮ শতাংশ অর্থ নির্বাচনে খরচ করেছেন৷ এছাড়া কম খরচ করেছেন বন মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মন৷ তাঁদের দুজনেরই খরচের পরিমান যথাক্রমে মোট বরাদ্দের ৪৭ শতাংশ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *