মন্ত্রিসভার বৈঠকে গুচ্ছ সিদ্ধান্ত, রাজ্যের জেলা স্তর পর্যন্ত হবে ক্রাইম ব্রাঞ্চ, সর্বশিক্ষার শিক্ষকদের চাকুরীর মেয়াদ বৃদ্ধি

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা ২৯ মার্চ ৷৷ রাজ্যে সব ধরনের অপরাধ দমনে রাজ্য সরকার ক্রাইম ব্রাঞ্চ গঠন করতে চলেছে৷ এরই পাশাপাশি

বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ এবং কৃষিমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়৷

সর্বশিক্ষার শিক্ষকদের চাকুরির মেয়াদ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার৷ বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গুলি গৃহীত হয়েছে৷

এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ জানান, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পুরো নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজ্য সরকার সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে৷ অপরাধ মূলক ঘটনাকে প্রতিহত করতে, বিশেষ করে বিভিন্ন মাদক দ্রব্যের ব্যবহার বন্ধ করে যুব সমাজকে ধবংসের হাত থেকে রক্ষা করতে রাজ্যে পুলিশ ক্রাইম ব্রাঞ্চ স্থাপন করার সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে গৃহীত হয়েছে৷ এই ক্রাইম ব্রাঞ্চ জেলাস্তর পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে৷ শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, মুম্বাই এবং দিল্লির ক্রাইম ব্রাঞ্চের অনুকরণেএই রাজ্যের ক্রাইম ব্রাঞ্চ গঠন করা হবে৷ এক্ষেত্রে ঐ রাজ্যগুলি থেকে বিশেষজ্ঞরা এ রাজ্যে এসে ক্রাইম ব্রাঞ্চ গঠনে পরামর্শ দেবেন৷ শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে এ ধরনের ক্রাইম ব্রাঞ্চের গঠন প্রক্রিয়া ও কার্যপ্রনালী পর্যালোচনা করে দেখতে মুখ্যসচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ খুব দ্রুত সমস্ত প্রক্রিয়া সমাপ্ত করে ক্রাইম ব্রাঞ্চ গঠনে উদ্যোগ নেবে রাজ্য সরকার, জানান তিনি৷

এদিকে সর্বশিক্ষা প্রকল্পের শিক্ষকদের চাকুরির মেয়াদ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে গৃহীত হয়েছে৷ শিক্ষামন্ত্রী জানান, আগামী ৩১ মার্চ সর্বশিক্ষা অভিযান প্রকল্পে নিযুক্ত শিক্ষাক-শিক্ষিকাদের চাকুরির শেষ হচ্ছে৷ তাই মন্ত্রিসভায় আজ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সর্বশিক্ষা শিক্ষকদের কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে তাদের চাকুরির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হচ্ছে৷ ফলে, তাদের বেতন ভাতা রাজ্য সরকার বহন করবে৷ শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, কেন্দ্রের অর্থ মঞ্জুরির উপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে৷ ততদিন তাদের চাকুরি বহাল থাকবে৷ তবে, তাদের নিয়মিতকরণের দাবির বিষয়ে এদিন শিক্ষামন্ত্রী কিছুই জানাননি৷

এদিকে, সরকারী খাঁস জমি দখল করে কোন রাজনৈতিক দলের কার্যালয় রয়েছে কিনা তা চিহ্ণিত করতে আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ এবিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ জানান, কোনও সরকারি খাঁস জমি দখল করে রাজনৈতিক দলের কার্যালয় গড়ে উঠলে তা চিহ্ণিত করতে জেলা প্রশাসন ও জেলাস্তরের পুলিশ প্রশাসনকে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে৷ ১৫ দিনের মধ্যে এসংক্রান্ত রিপোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ পাশাপাশি গত ২৫ বছরে যে সমস্ত সংস্থা, সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানকে সরকারি খাঁস জমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে, সেগুলি বণ্টনের ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে বলে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, এই দায়িত্ব মুখ্যসচিবকে দেওয়া হয়েছে৷ অতিসত্বর তাঁকে এবিষয়ে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷

এছাড়া আগামী এপ্রিল মাস জুড়ে সারা রাজ্যে এনার্জি কনজারভেশন বিষয়ে জনসচেতনামূলক প্রচার চালানো হবে৷ এই প্রচারে বিদ্যালয় এবং মহাবিদ্যালয়গুলিকেও যুক্ত করা হবে৷ মন্ত্রিসভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ পাশাপাশি আগামী ১ মাসের মধ্যে এই রাজ্যকে হুকলাইন মুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে মন্ত্রিসভা৷ শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, এবিষয়ে জনগণের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে৷ বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে সবাইকে এলইডি ব্যবহার করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী আবেদন জানিয়েছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *