সাংবাদিক শান্তনু ভৌমিক ও সুদীপ দত্ত ভৌমিক হত্যা মামলায় সিবিআই তদন্তের দাবী মেনে নেয়ায় ১৭০ দিনের টানা আন্দোলন প্রত্যাহার

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১১ মার্চ ৷৷ সাংবাদিক হত্যার প্রতিবাদে টানা ১৭০ দিনের আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়েছে৷ নতুন সরকার রবিবার এই হত্যার বিষয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি মেনে নেওয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন৷ পাশাপাশি রাজ্যের নতুন সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সাংবাদিকরা৷ এউপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷

প্রথমে সাংবাদিক শান্তনু ভৌমিক এবং পরে সুদীপ দত্ত ভৌমিকের প্রতিকৃতিতে সাংবাদিকরা টানা ১৭০ দিন ধরে প্রতিদিন প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে আসছিলেন৷ ১৭১ দিনের মাথায় এই আন্দোলন কর্মসূচি রবিবার প্রত্যাহার করা হয়েছে৷ শনিবার রাজ্যের নবগঠিত বিজেপি পরিচালিত এনডিএ সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই ঘটনার তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়৷ এরপরই আন্দোলনরত সাংবাদিকরা এক বৈঠক করে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন৷

সেই অনুযায়ী রবীন্দ্র ভবনের কাছে শহীদ স্কোয়ারে এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব এবং আইন মন্ত্রী রতন লাল নাথ৷ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরা তাঁদের এতদিনের আন্দোলন কর্মসূচির বিস্তারিত বিবরণ দেন৷

এদিন বিপ্লব দেব তাঁর ভাষণে বলেন, নতুন সরকারকে এই জন্য ধন্যবাদ জানানোর প্রয়োজন নেই৷ কারণ এটা সরকারের কর্তব্য ছিল৷ তাঁর কথায় সরকার নিরপেক্ষ হয়ে কাজ করবে৷ কোন দলের হয়ে কাজ করবে না৷ মন্ত্রিসভার প্রত্যেকটি সদস্যকে মানুষের জন্য নিরপেক্ষ হয়ে কাজ করার কথাও বলেন তিনি৷ আগামীদিনে সরকারের যেকোনো ধরনের ত্রুটি বিচ্যুতি হলে তা সাংবাদিকদের সচেতন ভাবে ওয়াকিবহাল করার অনুরোধও তিনি করেন৷ এর আগে রাজ্যের আইনমন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, নির্মম এই হত্যাকান্ডের পর থেকে চলে আসা ঘটনাগুলির তিনি সাক্ষী ছিলেন৷ কিন্তু এত দিন দেরি হয়ে যাওয়াটা কাম্য ছিলনা৷ সিবিআই তদন্ত আরও আগেই দেওয়ার দরকার ছিল৷ কিন্তু তৎকালীন সরকার ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কাজ করেনি৷ উল্লেখ করা যেতে পারে, রাজধানী আগরতলার অদূরে মান্দাই এলাকায় ২০ সেপ্ঢেম্বর তরুণ সাংবাদিক শান্তনু ভৌমিক(২৮) এক রাজনৈতিক সংঘর্ষের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে পুলিশের ঘেরাটোপে নিহত হন৷ তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়েছিল৷ রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশ শান্তনুকে উদ্ধার করে আগরতলায় জিবি হাসপাতালে নিয়ে যায়৷ সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন৷ এরপর ২১ নভেম্বর ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস দ্বিতীয় বাহিনীর প্রধান কার্যালয়ের ভেতরে সাংবাদিক সুদীপ দত্ত ভৌমিককে(৫০) গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল৷ এই হত্যার অভিযোগ বাহিনীর কমাড্যান্ট তপন দেববর্মার বিরুদ্ধেই৷