কলকাতা, ২১ ফেব্রুয়ারি (হি স) : ভাষার স্বীকৃতির প্রতিটি আন্দোলনে সরকারী সমর্থন ও স্বীকৃতির দাবি জানালেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। বুধবার রাজ্য বিধানসভায় তিনি এই প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনার সময় এই দাবি তোলেন। এ দিন ভাষা শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে অধিবেশনে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
নীরবতা পালনের প্রস্তাব এনে পরিষদীয়মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এদিন অধিবেশনে বলেন, “যাঁরা বাংলা ভাষার জন্য আন্দোলন করে শহিদ হয়েছেন, তাঁদের শ্রদ্ধা জানানো দুই বাংলার অন্যতম কর্তব্য। অধ্যক্ষের অনুমতিসাপেক্ষে এই মহতী সভায় ভাষাশহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হোক।“এর প্রেক্ষিতে প্রস্তাবটিকে সমর্থন করলেও আব্দুল মান্নান বলেন, “কিছু ক্ষেত্রে ভাষা আন্দোলনকে বিচ্ছিন্নতাবাদী তকমা দেওয়ার চেষ্টা হয়। তা না করে আগামী দিনে প্রতিটি ভাষা আন্দোলনকে স্বীকৃতি দেওয়া হোক।”
বিধানসভায় সিপিএমের দলনেতা সুজন চক্রবর্তী অধিবেশনে এই আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, “বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম ভাষা এটি। দু’টি দেশের জাতীয় সঙ্গীত এই ভাষায় রচিত। ভাষা শহিদদের স্মৃতির প্রতি অধিবেশনে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন যথাযথ।” এই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, “কেবল অবিভক্ত বাংলার পূর্বাংশের পাঁচ শহিদকে স্মরণ না করে শিলচরের ভাষা শহিদদের ত্যাগকেও যথাযোগ্য মর্যাদা দেওয়া হোক।”
প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় সুজনবাবুর প্রস্তাবের যৌক্তিকতা স্বীকার করে অধিবেশনে বলেন, “নির্দিষ্ট কোনও ভাষাশহিদ নয়, সার্বিকভাবে বাংলা ভাষার আন্দোলনে যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন, তাঁদের প্রতি এটা আমাদের শ্রদ্ধা।“ মান্নানের প্রস্তাব সম্পর্কে পার্থবাবু বলেন, “ভাষার যে কোনও আন্দোলনকে তৃণমূল সরকার স্বীকৃতি দেয়। ইতিমধ্যে গত সাত বছরে ৬টি ভাষা স্বীকৃতি পেয়েছে। কোনও অঞ্চলে অন্তত ১০ শতাংশ মানুষ বিশেষ কোনও ভাষায় কথা বললে সেটিকে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়া আইনসিদ্ধ করা বিবেচনাধীন। এ নিয়ে একটি বিল তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন স্তরে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।“
ভাষা-সম্পর্কিত এই আলোচনার পর অধিবেশনে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এর পর দুই বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য ও রমেন্দ্রনাথ বিশ্বাস ২১ ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে কবিতাপাঠ করেন। অধ্যক্ষ এর পর বলেন, “আর কাউকে কবিতাপাঠের অনুমতি দেওয়া যাবে না। তাহলে কবিতাপাঠের আসর বসাতে হবে!“ পরে কংগ্রেসের অসিত পাত্র সংক্ষেপে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন।