নয়াদিল্লি, ৫ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : খাপ পঞ্চায়েত সমাজের স্ব-ঘোষিত নীতিরক্ষক হতে পারে না। সম্মান রক্ষার জন্য হত্যার নামে তারা আইন হাতে তুলে নিতে পারে না। দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক যখন বিয়ে করবে, তখন সেখানে নাক গলানোর কোনও অধিকার নেই খাপ পঞ্চায়েতের ৷ জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷ দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক যুবকযুবতী নিজেদের সহমতে বিয়ে করলে সেখানে কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ অনধিকার চর্চা হয়ে যাবে। সোমবার হরিয়ানার মতো কয়েকটি রাজ্যে খাপ পঞ্চায়েতের বাড়বাড়ন্ত এবং পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে বেড়ে চলা খুনের বিরুদ্ধে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দায়ের করা আবেদনের শুনানিতে এই নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র।
শীর্ষ আদালত আরও বলেছে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ যদি অপর একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাকে বিয়ে করেন, তাহলে তাঁদের বিয়ে বৈধ কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আদালত আছে। খাপ পঞ্চায়েত ওই দম্পতির উপর অত্যাচার চালাতে পারে না। সেইসঙ্গে ভিন ধর্ম, ভিন জাত বা অন্য কোনও সামাজিক বাধার বিরুদ্ধে যাঁরা বিয়ে করছেন বা ভবিষ্যতে করবেন, তাঁদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানাল শীর্ষ আদালত । এই কমিটি সংশ্লিষ্ট দম্পতিদের খাপ পঞ্চায়েত, বাবা-মা বা অন্যান্য আত্মীয়দের হামলা থেকে রক্ষা করবে।
খাপ পঞ্চায়েতের আইনজীবী অবশ্য আদালতে বলেন, এধরনের হত্যা কখনওই সমর্থন করে না খাপ পঞ্চায়েত। এদিন প্রধান বিচারপতি বলেন, খাপ পঞ্চায়েত নিয়ে শীর্ষ আদালত চিন্তিত নয়। আদালতের চিন্তা, দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক নারী–পুরুষের নিজস্ব মতে বিয়ে করার অধিকার নিয়ে।
এদিনই দিল্লির রাস্তায় মুসলিম বান্ধবীর পরিবারের হাতে নিজের বাড়ির সামনে ফোটোগ্রাফার অঙ্কিত সাক্সেনার হত্যার বিষয়টি আদালতে তোলা হয়। সে সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ওই মামলাটি এখনও সুপ্রিম কোর্টে আনা হয়নি। ফলে এনিয়ে তাঁরা কিছু বলবেন না।
উল্লেখ্য, একটি এনজিও শক্তি বাহিনী ২০১০ সালে প্রশাসনকে এই নিয়ে একটি আবেদনপত্র জমা দিয়েছিল৷ সেখানে বলা হয়েছিল, এই ‘অনার কিলিং’ নিয়ে যেন তারা যত দ্রুত সম্ভব কোনও ব্যবস্থা নেয়৷