রাজ্যে বাম শাসনের অবসানে বুদ্ধিজীবীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান অমিত শাহের

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ জানুয়ারি৷৷ রাজ্যে বাম শাসনের অবসানে রাজ্যের বুদ্ধিজীবীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানালেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ৷ শুধু ভোটার নয়, জনমত তৈরিতে একেকজনের মুখ্য ভূমিকা নিতে বলেছেন তিনি৷
আগরতলায় মুক্তধারা অডিটরিয়ামে মন্থন সামাজিক সংস্থা আয়োজিত বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে আলোচনাসভায় অমিত শাহ বলেন, দেশের ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে গত সাড়ে তিন বছরে৷ কিন্তু বামপন্থা যেখানে আছে, সেখানেই দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং রাজনৈতিক হিংসা রয়েছে৷ এ থেকে জনগণকে মুক্ত করতে বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা নিতে হবে৷ এতদিনের দুরবস্থার জন্য বুদ্ধিজীবীরাও কম দায়ী নন৷ এতদিন তাঁরা রুখে দাঁড়াননি৷
তিনি আরও বলেন, এখন সময় এসেছে জাগ্রত হওয়ার৷ এই রাজ্যে এমন সরকার রয়েছে যারা নিজেদের শ্রমিক শ্রেণির বলে দাবি করে৷ অথচ এখানে নূ্যনতম মজুরি ১৭০ টাকা৷ কেন্দ্রীয় সরকার ৩৪০ টাকা ধার্য় করে দিয়েছে তা বলবৎ করছে না বাম সরকার৷ তাই এ ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা বিশেষ প্রয়োজন৷ বিজেপি ক্ষমতায় এলেই প্রথম ক্যাবিনেট মিটিঙে তা কার্যকর করা হবে৷ তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, ত্রিপুরা এবং মেঘালয়ে এবার বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হবেই৷
কমিউনিস্টরা দেশের উন্নয়ন বিরোধী৷ কেরল, পশ্চিমবঙ্গ এবং ত্রিপুরায় কমিউনিস্ট শাসন থাকায় গোটা দেশে তিনটি রাজ্য পিছিয়ে গিয়েছে৷ সাম্প্রতিক কিছুদিন পূর্বে পশ্চিমবঙ্গে সরকার বদল হলেও একই অবস্থা চলছে৷ গত ২৪ বছরে ত্রিপুরায় কমিউনিস্টরা সঠিক উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বেকারত্ব থেকে বহু পিছিয়ে গিয়েছে৷ বিজেপি সরকার গঠন হলেই সু-শাসন প্রতিষ্ঠা হবে৷ রবিবার ‘মন্থন’ আয়োজিত ‘জাতি গঠনে প্রতিবন্ধকতা’ বিষয়ক আলোচনাচক্রে কমিউনিস্ট শাসনের এমনভাবেই তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ৷ আগরতলা মুক্তধারা অডিটরিয়াম হলে রাজ্যের বুদ্ধিজীবিদের নিয়ে আয়োজিত আলোচনাচক্রে রাজ্যের সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য সরকারকে তুলোধুনো করেছেন শ্রী শাহ৷
দেশ ও রাজ্য গঠনে বুদ্ধিজীবিদের একটা বিশেষ অবদান রয়েছে৷ ত্রিপুরায় কমিউনিস্ট শাসনে সবাইকে সক্রিয় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শ্রী শাহ৷ কেন্দ্র ১৩০ কোটি টাকার অনুমোদন দিয়ে ত্রিপুরাতে সুপার স্প্যাশালিষ্ট হাসপাতাল গড়ার পরিকল্পনা চাওয়া হয়েছিল৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সাড়া দেওয়া দূর, তিনি সদুত্তর দেয়নি৷ রাজ্যে বিজেপি সরকার গঠন হলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়নে কাজ করবে৷ প্রেক্ষিতে, নতুন সরকার গঠনের দ্বিতীয় দিন সপ্তম পে কমিশন চালু করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অমিত শাহ৷ পাশাপাশি রাজ্যে ১ বছরে ৭ জন দলীয় কার্যকর্তা খুন নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর তীব্র সমালোচনা মুখর হয়েছেন তিনি৷
তাঁর মতে, ত্রিপুরায় কমিউনিস্ট শাসনে আক্রান্ত গণতন্ত্র, লুন্ঠিত মানুষের অধিকার৷ সুবিচার পাওয়ার জন্য মানুষ মুখিয়ে রয়েছেন বিজেপি সরকার গঠন করতে৷ গত আড়াই দশকে সাড়ে ৭ লাখ বেকার কর্মসংস্থান আশায় দিশেহারা৷ কলকারখানা, শিল্প প্রতিষ্ঠান সংসৃকতি প্রসারে উদাসীন৷ গোটা দেশের সঙ্গে ত্রিপুরাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ পরিকল্পনা চালু করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অমিত শাহ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *