কলকাতা, ১৫ ডিসেম্বর (হি. স.):কলকাতায় দ্বিতীয় বিমানবন্দর তৈরী নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বর্তমান কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উপরে যেভাবে চাপ বাড়ছে, তাতে কলকাতায় দ্বিতীয় বিমানবন্দর দরকার। তা বিমানবন্দরের কাছকাছি করতে চায় এয়ারপোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়া।
মহারাষ্ট্রে মুম্বাইয়ে ছত্রপতি শিবাজি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট ছাড়াও তৈরী হয়েছে নভি মুম্বাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। আছে ওই রাজ্যে নাগপুরে ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। কর্ণাটকেও আছে একাধিক ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট- বাঙ্গালুরুর কেম্পেগৌরা এবং ম্যাঙ্গালোর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। চেন্নাইয়েও আছে মিনাম্ব্কম এবং রাজীব গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। দিল্লিতে সফদরজং ছাড়াও আছে ইন্দিরা গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট।
কলকাতায় দ্বিতীয় বিমানবন্দরের জন্য ইতিমধ্যে জমি চেয়েছে কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে এয়ারপোর্টস অথরিটির ডিরেক্টর গুরুপ্রসাদ মহাপাত্র রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় দে’র সঙ্গে বৈঠক করে কলকাতা বিমানবন্দর লাগোয়া এলাকায় জমি চেয়েছেন। তিনি মুখ্যসচিবকে বলেন, অন্তত ৭০০-১৫০০ একরের কাছাকাছি জমি দরকার। রাজ্য সরকার অন্ডালে বিমানবন্দর করার কথা বললেও তাদের বক্তব্য, কলকাতা থেকে অন্ডাল অনেক দূরে হয়ে যাবে। সেখানে হবে না।
২০১৬-’১৭ আর্থিক বছরে কলকাতা বিমানবন্দরে ১ লক্ষ ২৪ হাজার বিমান ওঠানামা করেছে। এত বিমান ওঠানামা করার জন্য পার্কিং য়ে’র সমস্যা হচ্ছে। কলকাতা বিমানবন্দরে দুটি রানওয়ে থাকলেও একসঙ্গে তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। তাই ভবিষ্যতের কথা ভেবে নতুন বিমানবন্দর করা দরকার। সে কারণেই জমির প্রয়োজন। একলপ্তে এত পরিমাণ জমি কোথায় পাওয়া যাবে, তার খোঁজ করছে রাজ্য সরকার।
উল্লেখ্য, ১৯২৪ সালে কলকাতা বিমানবন্দরে প্রথম বিমান ওঠানামা করে। ২০১৩ সালে নতুন টার্মিনাল বিল্ডিং উদ্বোধন হয়। বিমানবন্দরের ২৫-৩০ কিমি’র মধ্যে নতুন বিমানবন্দর করতে আগ্রহী এয়ারপোর্টস অথরিটি। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, টার্মিনালের সঙ্গে রানওয়ের সংযোগকারী অন্যতম প্রধান রাস্তা ট্যাক্সি ওয়ে। কলকাতা বিমানবন্দরে দ্বিতীয় রানওয়ে এবং তার সমান্তরাল ট্যাক্সি ওয়ের মধ্যে দূরত্ব ১১৬ মিটার। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী, এই দূরত্ব ন্যূনতম ১৮৩ মিটার হলে তবেই রানওয়ে এবং ট্যাক্সি ওয়ে একসঙ্গে ব্যবহার করা যায়। কলকাতায় তা কম থাকায় দ্বিতীয় রানওয়ে দিয়ে যখন বিমান ওঠা-নামা করছে, তখন বন্ধ রাখতে হচ্ছে ওই ট্যাক্সি ওয়ে ‘আলফা’।
দ্বিতীয় রানওয়েতে বিমান যখন নামছে, তখন আলফা-য় ঢোকানো যাচ্ছে না কোনও বিমানকেই। ‘অ্যারাইভাল’ বিমান নেমে আসার পর ‘ডিপারচার’ বিমান আলফায় ঢুকতে পারছে। আলফা পেরিয়ে সেই বিমান রানওয়ে পৌঁছতেও সময় নিচ্ছে। ফলে, দেরি হয়ে যাচ্ছে বিমান ছাড়তে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক ট্যাক্সি ওয়ে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ট্যাক্সি ওয়ে নিয়েও মুখ্যসচিবের সঙ্গে এয়ারপোর্টস অথরিটির ডিরেক্টর গুরুপ্রসাদ মহাপাত্রের কথা হয়েছে। নতুন বিমানবন্দরের জন্য জমি মিললে এখানকার ট্যাক্সি ওয়ে আধুনিকভাবে গড়ে তোলা হবে বলেও এয়ারপোর্টস অথরিটির ডিরেক্টর জানিয়েছেন।