কলকাতা, ২১ নভেম্বর, ( হি.স.): না,মমতার হেলিকপ্টারে নয় । শেষ পর্যন্ত মোদীর হেলিকাপ্টারেই উঠলেন এ বাংলার প্রিয়দা । রাজ্য সরকার চেয়েছিল, প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সীর শেষকৃত্য পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন করা হোক। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে রাজ্য সরকারই সব ব্যবস্থা করবে বলে চেষ্টা হয়েছিল । সেই মত বেহালা ফ্লাইং ক্লাবে তৈরি ছিল রাজ্য সরকারের ভাড়া করা প্রাইভেট হেলিকাপ্টারটি । কিন্তু বিপত্তি হয়, রাজ্য সরকারের হেলিকপ্টারটি ছোট । প্রিয়র দেহ ছাড়া সেটিতে শুধু স্ত্রী দীপা দাশমুন্সী ও ছেলে প্রিয়দীপ হরফে মিছিল যেতে পারবেন । তাহলে বাকি নেতারা যাবেন কি করে । আসরে নামেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ।
রাজ্য সরকার হেলিকপ্টারে করে প্রিয়রঞ্জনের দেহ কলকাতা থেকে রায়গঞ্জে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে । কিন্তু, প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব ও প্রিয়রঞ্জনের পরিবার নিজেরাই সব ব্যবস্থা করে নেওয়ার কথা জানিয়েছিল । তা নিয়ে কোনও আপত্তি তোলেনি প্রিয়র পরিবার । সেইমতো রাতের বিমানে প্রিয়র দেহ কলকাতায় নিয়ে আসার পরে পিস হাভেনে রাখা হয়েছিল । মঙ্গলবার সকালেও প্রদেশ নেতৃত্ব তাঁর দেহ কলকাতায় বিধান ভবনে নিয়ে আসেন ।
কিন্তু,বেহেলা ফ্লাইং ক্লাবে গিয়ে দেখা যায়, রাজ্য সরকারের হেলিকপ্টারটি ছোট । প্রিয়র দেহ ছাড়া সেটিতে শুধু স্ত্রী দীপা দাশমুন্সী ও ছেলে মিছিল যেতে পারবেন । তখনই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি একটি বড় হেলিকপ্টার চেয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমণকে ফোন করেন । বড় হেলিকপ্টার পেলে পরিবারের আরও কয়েকজন রায়গঞ্জে যেতে পারেন ।
অন্য একটি অসুবিধাও দেখা দেয়। রাজ্য সরকারের হেলিকপ্টারটি সিঙ্গল ইঞ্জিনের । সেটিকে রায়গঞ্জে যেতে হলে, মাঝে দুর্গাপুরে নেমে জ্বালানি ভরতে হত । তার জন্য বেশি সময়ও লাগত । পরে ঠিক হয়, বেহালা ফ্লাইং ক্লাব থেকে রাজ্য সরকারের হেলিকপ্টার নয়, কলকাতা বিমান বন্দর থেকেই সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে প্রিয়র দেহ নিয়ে যাওয়া হবে কালীয়াগঞ্জে । তাতে দেড় ঘণ্টার একটু বেশি সময় লাগবে । শেষপর্যন্ত,তাতেই প্রিয়রঞ্জনের দেহ যায় রায়গঞ্জ । অন্য একটি হেলিকপ্টারে করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ও আবদুল মান্নানের মতো কয়েকজন কংগ্রেস নেতাও উড়ে যান উত্তর দিনাজপুরে । প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘প্রিয়দা সবার নেতা। যাঁরাই ডানপন্থী রাজনীতি করছি, শাসক দলেও যাঁরা আছেন, তাঁরাও তো প্রিয়দার শিষ্য বা শিষ্যা। এটা তো অস্বীকার করার উপায় নেই’।
রাজ্য সরকারের হেলিকপ্টারে চড়া না হলেও, কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে প্রিয়রঞ্জনের মৃত্যু শাসক-বিরোধীদের এক মঞ্চে এনে দিল ।