BRAKING NEWS

দেবী দুর্গার বিসর্জনে দু’দেশের ভক্তদের আবেগ জড়ানো কিছু মুহূর্ত

আগরতলা, ০১ অক্টোবর (হি.স.) বাংলাদেশে হিন্দুদের সংখ্যা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। কিন্তু সেদেশও এখনও আড়ম্বররেই হয় দুর্গাপূজা। দেশ ভাগ এবং তার পর নানা রাজনৈতিক ঘটনা ক্রমের মধ্য দিয়ে যারা ত্রিপুরায় এসে স্থায়ী বাসিন্দা হয়েছেন তদের ভাবাবেগের আর সীমা থাকেনা বিসর্জনের সময়। বিশেষ করে ধর্মপ্রাণ হিন্দু অধ্যুষিত দুদেশের সীমান্ত এলাকায়।

এক দিকে ভারতের পাহাড়ি রাজ্য ত্রিপুরার সীমান্ত শহর সাব্রুক। অন্যদিকে বাংলাদেশের খাগড়াছড়ির রামগড়।মাঝখানে শুধু নদী।দুই দেশের সীমান্ত স্পর্শকারী এই ফেনী নদীতে দুই দেশের হাজারো হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা অশ্রুসিক্ত চোখে বিসর্জন দিয়েছেন দেবী দুর্গাকে।

ফেনী নদীর ঘাটে এই বিসর্জন অনুষ্ঠানে দুদেশের জনগণের মধ্যে আবেগ আর হৃদয়ের টান কেউই হয়তো ভাষায় প্রকাশ করতে পারবেন না।এমনকি এক সময়ের একই পরিবারের একই রক্তের সম্পর্কের মানুষও সামিল হয়েছিলেন সীমান্তের উভয় দিক থেকে। একে অপরকে জড়িয়ে ধরা, পা ছুঁইয়ে প্রণাম করা,চোখের জলে একাকার হওয়া সবই হয়েছে।যদিও বিএসএফ সামনে থাকলেও এসবে তারা বাধা দেয়নি। যদিও এই মিলন মেলা দীর্ঘ স্থায়ী হয়নি।

যদিও ভারতীয় ভূখণ্ডের এই অংশে অনেক পূজা হয়েছে। কিন্তু সীমান্তের ওপাড়ে রামগড় দক্ষিণেশ্বরী কেন্দ্রীয় কালীবাড়িতেই উপজেলার একমাত্র সার্বজনীন দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সেখানকার বড়ুয়া বাড়িতে আয়োজন করা হয় পারিবারিক মণ্ডপ। বিজয়া দশমীর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয় বিসর্জনের সময়।

বাংলাদেশের তরফে বাঙ্গালি হিন্দুদের পাশাপাশি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাতে অংশ নেন সনাতন ধর্মাবলম্বী ত্রিপুরী জনজাতি যারা পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী-বাসিন্দা। বিজয়া দশমীতে ফেনী নদীর উভয় দিকে মুর্হুমুহু উলু ধ্বনি, ঢাক-ঢোল, শঙ্খ বাজিয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে দেবী দুর্গাসহ একেএকে প্রত্যেক প্রতিমাকে বিসর্জন দেয়া হয় নদীতে। এসময় সীমান্ত অতিক্রমও করে ফেলেন উভয় দিকের নরী পুরুষ। যদিও বেশিদূর যাননি কেউই। এক সময় নৌকায় চড়িয়ে দেবী দুর্গার এ বিসর্জন সম্পন্ন করা হত ফেনী নদীতে।

আবহাওয়া প্রতিকূল হওয়া সত্ত্বেও এ বছর বেশ জাঁকজমক ভাবে দুর্গোৎসব উদযাপিত হয় বাংলাদেশের রামগড়ে। বাংলাদেশের প্রান্তে উপজাতীয় শরণার্থী পুনর্বাসন সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান তথা বাংলাদেশের প্রতিমন্ত্রী মর্যাদা প্রাপ্ত যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ির এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন বলে জানাগেছে। অন্যদিকে ভারতীয় ভূখণ্ডের দিক থেকে বিএসএফের অধিকারিকেরা ছাড়াও ছিলেন পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *