BRAKING NEWS

রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর কোনও সময়সীমা নেই সরকারের হাতে, জানালেন রবিশঙ্কর

শিলচর , ২১ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : ভারতে বসবাসকারী ৪০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা শরণার্থীরা দেশের ‘নিরাপত্তার জন্য এক বিরাট হুমকি’ হিসেবে দেখলেও মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা এই সব শরণার্থীদের কবে ফেরত পাঠানো হবে সে সম্পর্কে নয়াদিল্লি এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। কেন্দ্রীয় আইন, বিচার ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ বৃহস্পতিবার শিলচরে এক সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানিয়ে বলেন, সে নিয়ে কেন্দ্র ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে একটি হলফনামা পেশ করেছে। তবে ঠিক কবে ভারতে আশ্রিত রোহিঙ্গিয়াদের দেশ থেকে বের করে দেওয়া সম্ভব হবে সে সম্পর্কে সরকার এখনও কিছু ভাবেনি।
কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের মন্ত্রী মনে করেন, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই কিংবা জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের সঙ্গেও এই রোহিঙ্গাদের অনেকের যোগসাজশ গড়ে উঠেছে। ফলে এরা দেশের নিরাপত্তার পক্ষে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কথা হলফনামাতেও বলা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরানোর ব্যাপারে আদালতই এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে প্রসাদ জানান।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনে করেন, রোহিঙ্গা সমস্যাটি আসলে মায়ানমার ও বাংলাদেশের নিজস্ব বিষয়। এতে ভারত মোটেই শরিক নয়। \”তবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ভাবে সমস্যাটি নিয়ে মায়ানমার সরকারের সঙ্গে কথা বলেছেন তা প্রশংসনীয়। আশা করা যায় দুই দেশ মিলে সমস্যার একটি সমাধান সূত্র বের করতে পারবে,\” বলেন প্রসাদ। তিনি বলেন, আসলে ভারতে কিছু মহল রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রশ্নে ধর্মীয় রং ছড়িয়ে রাজনীতি করতে চাইছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টিকে এ ভাবে দেখছে না। দেশের স্বার্থ ও নিরাপত্তার প্রশ্নকেই বড় করে দেখছে সরকার, বলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টে দাখিলীকৃত ১৬ পাতার হলফনামায় বলা হয়েছে জম্মু, দিল্লি, হায়দরাবাদ বা মেওয়াটের মতো এলাকায় বহু রোহিঙ্গা ভারত-বিরোধী জঙ্গি কার্যকলাপে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। তা ছাড়াও, আইএসআই বা আইএস-এর মতো বিভিন্ন সংস্থা তাদের ভারতে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানোর কাজে লাগাতে চাইছে এবং রোহিঙ্গারা অনেকেই জাল ভারতীয় পাসপোর্ট ও পরিচয়পত্রও জোগাড় করে ফেলেছে।
এ দিন অসমে বসবাসকারী বাঙালিদের নাগরিকত্ব সমস্যার সমাধান কবে হবে, সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে তা নিয়ে স্পষ্টভাবে কিছু জানাতে পারেননি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ। অসমে প্রায় তিন লক্ষ ডি (ডাউটফুল) ভোটারদের ভবিষ্যৎ কী হবে এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সন্দেহভাজন ভোটার বলে কিছু হতে পারে না। হয় ভোটার, নয়তো ভোটার নয়। মাঝখানে কিছু নয়। কিন্তু এই সন্দেহভাজন ভোটারদের (যাদের সবাই বাঙালি) সমস্যার সমাধান কীভাবে, তার কোনও জবাবই নেই কেন্দ্রীয় আইন, বিচার ও তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের মন্ত্রীর কাছে। বললেন, এই রাজ্যে যা হবে তা অসম চুক্তির ভিত্তিতে। ডি-ভোটারদের ভাগ্যে যে আধার কার্ড জুটছে না তা কার্যত স্পষ্ট করে গেলেন প্রসাদ।
১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের লক্ষ্যে ‘নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল, ২০১৬-এর’ ভাগ্য যে অসম চুক্তির আধারে স্থির হবে তা-ও সাফ জানিয়ে গেলেন নরেন্দ্র মোদি সরকারের এই মন্ত্রী। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও জানান, নাগরিকত্ব, ডি ভোটার, এনআরসি ইত্যাদি প্রশ্নে সরকার যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে রাজ্যে শরিক দল অসম গণ পরিষদের সঙ্গে অবশ্যই আলোচনা করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *