BRAKING NEWS

লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ নির্মাণ কাজে দুর্নীতি, তদন্ত শুরু সিবিআই-এর

হাফলং (অসম), ০৩ সেপ্টেম্বর, (হি.স.) : লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ নির্মাণ কাজের দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত শুরু করল সিবিআই। ইতিমধ্যে শিলং থেকে সিবিআই-এর এক দল হাফলং এসে বহুচর্চিত লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ নির্মাণ কাজে সংঘটিত কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে।
দীর্ঘ ১৮ বছর প্রতীক্ষার পর ২০১৫ সালের ২১ নভেম্বর পাহাড় লাইনের ব্রডগেজে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ১৯৯৬ সালে লামডিং-শিলচর ব্রডগেজের শিলান্যাস হওয়ার প্রথমে কাজ এগোয়নি টাকার অভাবে। তবে ২০০৪ সালে কেন্দ্রীয় সরকার ওই প্রকল্পকে জাতীয় প্রকল্প হিসেবে ঘোষণা করার পর টাকার তেমন অভাব না হলে ওই প্রকল্পের কাজে ব্যাপক দুর্নীতি সংঘটিত হতে থাকে। প্রথমে এই প্রকল্পের জন্য ৬৪০ কোটি টাকার বাজেট ধার্য করা হলে ব্রডগেজ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হতে হতে পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি টাকা খরচ হয়। দেদার এই অর্থের জোগান পেয়ে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের নির্মাণ শাখার অফিসার ও ঠিকাদার সংস্থাগুলি ব্যাপক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠলেও রেলমন্ত্রক এতে তেমন গুরুত্বই দেয়নি। এতে রেলের নির্মাণ শাখার অফিসাররা অর্থ নয়ছয়ের সুযোগ পেয়ে যান।
বরাইলে জঙ্গি সমস্যার অজুহাতে কোটি কোটি টাকা হাপিস করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে রেলের অফিসার নির্মাণ সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে। ২০১৪ সালে কেন্দ্রে সরকার বদল হলে এই রেল সড়কের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। মূলত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে সে বছর (২০১৪) ১ অক্টোবর থেকে শতবর্ষ প্রাচীন মিটার গেজ রেলপথে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল ছয় মাসের মেগাব্লক করে দেয়। সে সময় পানীয় জল সাপ্লাইয়ের নামে আবার মোটা অঙ্কের দুর্নীতি হওয়ার অভিযোগ ওঠে। সেই সূত্রেই তদন্ত শুরু করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই।
সিবিআই-এর দুই সদস্যের এক দল নিউহাফলং স্টেশন-সহ ব্রডগেজের বিভিন্ন স্টেশনে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য সংগ্রহ করছেন। পানীয় জল সরবরাহকারী ঠিকাদারদের হাফলং আবর্ত ভবনে ডেকে পাঠিয়ে প্রাথমিক তদন্তের কাজ শুরু করেছেন তাঁরা। জানা গিয়েছে পানীয় জল সরবরাহ নিয়ে সংঘটিত কয়েক কোটি টাকার কেলেংকারির ক্লু হাতে পেয়েছে সিবিআই। এমন-কি এই কেলেংকারিতে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের অনেক অফিসার ও ঠিকাদারের নামও জড়িয়ে পড়েছে। তবে সিবিআই তদন্তে শুধু পানীয় জল সরবরাহই নয়, এই পুরো প্রকল্পে যে বড়সড় কেলেংকারি সংঘটিত হয়েছে তাও সিবিআই তদন্তে বেরিয়ে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কেননা অনেকেই মনে করছেন, মেগাব্লক চলাকালীন লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ প্রকল্পের কাজে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে।
কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরই অর্ধসমাপ্ত একটি প্রকল্পের তড়িঘড়ি উদ্বোধন করা হয়। আর কেন্দ্রের চাপে পড়েই রেলের নির্মাণ শাখা নিম্নমানের কাজ করে। এমন-কি লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ প্রকল্পের কাজে দুর্নীতি হওয়ার অভিযোগ এনে সিবিআই তদন্তের দাবি করেছিল অবিসা নামের এক অরাজনৈতিক সংগঠন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *