কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র রাষ্ট্রমন্ত্রী রিজিজুর ফোন মুখ্যমন্ত্রীকে, আজ দিল্লীতে অবরোধ নিয়ে বৈঠক

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৭ জুলাই৷৷ জাতীয় সড়ক এবং রেলপথ অবরোধ আজ অষ্টম দিন অতিক্রান্ত৷ আইপিএফটির এই অবরোধ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজ্যে যেমন রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে তেমনি কেন্দ্রের সাথে অবরোাধাকারীদের বৈঠক নিয়েও চলছে চাপানউতোর৷
আজ রাজ্য সরকারের তরফে পাঠানো এক প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের সঙ্গে আজ সকালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র রাষ্ট্রমন্ত্রী কিরণে রিজিজুর কথা হয়৷ কিরেণ রিজিজু জানান, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিং কিরেণ রিজিজুকে আই পি এফ টি-এর প্রতিনিধি যাঁরা দিল্লিতে অবস্থান করছেন তাঁদের সাথে কথা বলার দায়িত্ব দিয়েছেন৷ কিরেণ রিজিজু ১৮ জুলাই বিকালে আই পি এফ টি দলের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনায় বসবেন বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানান৷
এদিকে, ভারতীয় মজদুর সংঘের পাঁচ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল আজ মহকারণে পরিবহণমন্ত্রী মানিক দে-র সঙ্গে সাক্ষাত করেন৷ আই পি এফ টি(এন সি) গোষ্ঠী কর্তৃক জাতীয় সড়ক ও রেল অবরোধের কর্মসূচীর দরুণ রাজ্যবাসীকে যে গভীর সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, এ বিষয়ে প্রতিনিধি দলটি অবিলম্বে জাতীয় সড়ক ও রেল অবরোধ মুক্ত করতে রাজ্য সরকারকে ব্যবস্থা নিতে দাবি জানান৷ এই প্রসঙ্গে পরিবহণমন্ত্রী বলেন, অবরোধের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে রাজ্য সরকারের আলোচনা হয়েছে৷ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে অবরোধ প্রত্যাহারের বারংবার আবেদনও করা হয়েছে৷ কিন্তু তাদের বক্তব্য-কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য তারা অপেক্ষমান৷ সেই আলোচনার পরই তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে৷ পরিবহনমন্ত্রী প্রতিনিধি দলটিকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্য সরকার জাতীয় সড়ক ও রেল অবরোধকারীদের রাজ্য ভাগের দাবিকে সমর্থন করেনা৷ জাতীয় সড়ক ও রেল অবরোধের কারণে রাজ্যবাসী যে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন এর পরিপ্রেক্ষিতে এই অবরোধ আন্দোলন প্রত্যাহারের পুনরায় আবেদন জানিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী৷
এদিকে, জাতীয় সড়ক এবং রেলপথ অবরোধ আজ অষ্টম দিনে স্থিতাবস্থা বজায় রয়েছে৷ তবে নতুন করে কিছু কর্মী সমর্থকের সামিল হওয়া এবং প্রচুর পরিমাণে গাড়ি দিয়ে খাদ্য সামগ্রী আসার ফলে এদের পেছনে কারা, এনিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ণ উঠতে শুরু করেছে৷ গতকাল দিনভর পৃথক রাজ্যের দাবীতে আইপিএফটির ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধ নিয়ে বিস্তর টানাপোড়ন চলে৷ কিন্তু সমস্যার কোন সুরাহা হয়নি এবং বিষয়টিতে রাজনৈতিক জটিলতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে৷ এই প্রথম সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার তার মৌনতা ভেঙ্গেছেন৷ কিন্তু তারপর আজ সকাল থেকে অবরোধ স্থল খামতিং বাড়িতে অবরোধ কর্মসূচি নতুন উদ্যমে শুরু হয়েছে৷ আজ সকাল থেকেই খামতিং বাড়িতে অবরোধকারীদের মধ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে গাড়ি বোঝাই করে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য সামগ্রী আসতে থাকে৷ পরবর্তী সময় নতুন করে বেশ কিছু আইপিএফটির সমর্থক অবরোধ স্থলে এসে হাজির হন৷ আইপিএফটিকে কারা এভাবে সাহায্য করছে এনিয়ে ইতিমধ্যেই বিস্তর বিতর্ক শুরু হয়েছে৷ রাজ্যের বিবদমান দুই রাজনৈতিক দল সিপিআইএম এবং বিজেপি একে অপরের বিরুদ্ধে আইপিএফটিকে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে৷ আজ সকালের ঘটনাক্রম এই বিতর্ককে আরও চাঙ্গা করে দিয়েছে৷ অন্যদিকে আইপিএফটির নেতারা আশা করছেন আজ দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী কিরেন রিজিজুর সঙ্গে তাদের প্রদিনিধিদের বৈঠক হবে৷ আর এই বৈঠকের পরেই অবরোধ প্রত্যাহার করা না করা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে আইপিএফটির সভাপতি এনসি দেববর্র্ম জানিয়েছেন৷