নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ নভেম্বর৷৷ পুলিশ প্রশাসনের উঁচু তলার আধিকারিকদের মগজে সত্যিই কিছু আছে কি, প্রশ্ণ

তুলেছেন জাস্টিস এবি পাল৷ কারণ, পুলিশ দায়বদ্ধতা কমিশনের চেয়ারম্যান থাকাকালীন যে অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর সেই থেকেই এই প্রশ্ণের সৃষ্টি বলে দাবি করেন তিনি৷ বৃহস্পতিবার সততার অগ্রগতিতে এবং দূর্নীতি নির্মূলে মানুষের অংশগ্রহণ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জাস্টিস এবি পাল রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকে এভাবেই এক হাত নিয়েছেন৷
পুলিশ দায়বদ্ধতা কমিশনের চেয়ারম্যান থাকাকালীন দীর্ঘ সাড়ে চার বছরের মেয়াদে যে অভিজ্ঞতা ছিল তা তুলেধরে জাস্টিস পাল বলেন, বহু মামলার সুরাহা করতে ব্যর্থ রয়েছে রাজ্য পুলিশ প্রশাসন৷ এর জন্য তিনি তাদের সক্রিয়তায় যথেষ্ট ঘাটতিকেই দায়ী করেছেন৷ অবশ্য পুলিশের উঁচু তলার আধিকারিকদের গাফিলতিই এর অন্যতম কারণ বলে তিনি মন্তব্য করেছেন৷ ফলে, পুলিশ প্রশাসনের উপর মানুষ এখন আর ভরসা রাখতে পারেন না বলে জাস্টিস পাল উষ্মা প্রকাশ করেছেন৷ তবে, এই অবস্থা কেবল এরাজ্যেরই নয়, গোটা দেশেই একই পরিস্থিতি পরিলক্ষিত হচ্ছে বলে তাঁকে যথেষ্ট উদ্বিগ্ণ দেখিয়েছে৷ জাস্টিস পাল বলেন, ২০১২ সালে যেখানে দূর্নীতির ক্ষেত্রে ভারত সারা বিশ্বে ৯৪ তম স্থানে ছিল তা এখন ১১৮ তে গিয়ে ঠেকেছে৷ তাতে দেশের গরিমা ক্রমশ তলানিতে যাচ্ছে বলে তিনি মনে করেন৷ উদাহরণ তুলে ধরে তিনি জানান, দূর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র হিসেবে ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক এবং নিউজিল্যান্ড নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য৷ অন্যদিকে, গোটা বিশ্বে আফগানিস্তান, সোমালিয়া এবং উত্তর কোরিয়াতে সর্বাধিক দূর্নীতি হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন৷
দূর্নীতির বাড়বাড়ন্তে দেশে সাজার হার ক্রমশ নিম্নমুখী৷ এই দাবি করে জাস্টিস পাল বলেন, গোটা দেশে ৯০ শতাংশ অভিযুক্ত খালাস হয়ে যাচ্ছে এবং কেবলমাত্র ১০ শতাংশ মামলায় সাজা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে৷ এর জন্য তিনি দূর্নীতি বেড়ে যাওয়াকেই দায়ী করেছেন৷ তাঁর মতে, মানুষ সজাগ ও সচেতন নন এজন্যই দূর্নীতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে৷ পূর্ত দপ্তরের বাস্তুকাররা এবং পুলিশ অফিসাররা উৎকোচ নিচ্ছেন, রাজনৈতিক নেতারাও তা সংগ্রহ করছে৷ কিন্তু এসব জেনেও মানুষ সহ্য করে চলেছেন৷ তাই দূর্নীতি দমনে এদিন জাস্টিস পাল পুলিশ ও জনগণের মধ্যে সেতু বন্ধনের যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে দাবি করেন৷

