শান্তি-সম্প্রীতি সৌভ্রাতৃত্বের বার্তা ছড়িয়ে মাতাবাড়ীতে দেওয়ালী উৎসবে দ্বিতীয় দিনে ব্যাপক লোকসমাগম

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩০ অক্টোবর৷৷ বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মাতাবাড়ীতে গতকাল সন্ধ্যায় ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দির প্রাঙ্গণে দুই দিনব্যাপী দেওয়ালী উৎসব শুরু হয়৷ ধন্যমাণিক্য মুক্ত মঞ্চে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে এর উদ্বোধন করেন অর্থ, তথ্য ও সংসৃকতি মন্ত্রী ভানুলাল সাহা৷ একই সাথে প্রদর্শনী মন্ডপের উদ্বোধন করেন ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্ব-শাসিত জেলা পরিষদের মুখ্য কার্যনিবাহী সদস্য রাধাচরণ দেববর্মা৷ উপজাতি সাংসৃকতিক মঞ্চে সাংসৃকতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন গ্রামোন্নয়ন মন্ত্র নরেশ জমাতিয়া৷
তথ্য সংসৃকতি মন্ত্র ভানুলাল সাহা এই উৎসবের উদ্বোধন করে বলেন, মাতাবাড়ীতে পরম্পরার দীপাবলী উপলক্ষ্যে এই উৎসব চলে আসছে৷ প্রতি বছর এই উৎসবের উৎকর্ষ বাড়ছে৷ বাড়ছে জনসমাগমও৷ এই মেলা কোন ধর্মের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই৷ এই উৎসবের মধ্য দিয়ে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, সবকিছু ভুলে গড়ে উঠে ঐক্য ও সম্প্রীতি৷ তিনি বলেন, এই মেলাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সাংসৃকতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে৷ সংসৃকতিক হচ্ছে মনের খোরাক, মানুষকে আনন্দ দান করে৷
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এ ডি সি-র মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য রাধাচরণ দেববর্মা বলেন, এই উৎসব সম্প্রীতির৷ জাতি উপজাতি মানুষের এই উৎসব প্রত্যেকের জীবনে নিয়ে আসুক সুখ ও শান্তি৷ স্মরণিকা প্রকাশ করে অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি পর্যটন মন্ত্রী রতন ভৌমিক বলেন, উৎসবের মাধ্যমে মানুষের মেলবন্ধন সুদৃঢ় হচ্ছে৷ দীপাবলি উৎসবও মানুষের মেলবন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে৷ তিনি বলেন, আমাদের রাজ্যে সব উৎসবে সব ধর্মের মানুষ একসঙ্গে মিলিত হচ্ছেন৷ এটাই আমাদের ঐতিহ্য৷ বিশেষ অতিথি গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী নরেশ জমাতিয়া বলেন, ধর্ম,যার যার, উৎসব সবার৷ মাতাবাড়ী দীপাবলী উৎস পরস্পরার৷ সকল ধর্মের ও জাতির মিলন মেলা৷ বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য৷ রক্ষা করাই আমাদের ঐতিহ্য৷ স্বাগত ভাষণে মেলা কমিটির চেয়ারম্যান বিধায়ক মাধব সাহা বলেন, এই মিলন মেলা আমাদের ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে৷ সকলের জীবনে এই উৎসব বয়ে নিয়ে আসুক শান্তি ও অগ্রগতি৷ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন গোমতী জিলা পরিষদের সভাধিপতি সুনীতি সাহা, গোমতী জেলার জেলা শাসক র্যাভেল হেমেন্দ্র কুমার প্রমুখ৷ অনুষ্ঠানের উপস্থিত ছিলেন উদয়পুর পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন সুব্রত দেব, এ ডি সি -র কার্যনির্বাহী সদস্য জয়বাহাদুর জমাতিয়া৷ ও এম ডি সি জয়কিশোর জমাতিয়া৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর শুরু হয় সাংসৃকতিক অনুষ্ঠান৷ রাজ্যের বিশিষ্ট শিল্পীরা সারারাত ব্যাপী সাংসৃকতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন৷ এদিকে, গতবারের প্রদর্শনী মন্ডপ সজ্জায় প্রথম হয়েছে মাতাবাড়ী ও কাকড়াবন ব্লক, দ্বিতীয় হয়েছে ত্রিপুরা গ্রামীণ জীবিকা মিশন এবং তৃতীয় হয়েছে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তর৷ এই সব সংস্থা ও দপ্তরকে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়৷ এ বছর মেলা উপলক্ষ্যে ৩০ টি উন্নয়নমূলক প্রদর্শনী মন্ডপ খোলা হয়েছে৷