নয়াদিল্লি, ২ অক্টোবর (হি.স.): করাচির পর এবার লাহোরের আকাশসীমায়ও প্লেন চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করলো পাকিস্তানের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত লাহোরের আকাশসীমায় ২৯ হাজার ফুটের নিচে প্লেন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তারা। সরকারের নির্দেশেই বিমানের উপর এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি হওয়াতেই পাক সরকারের এই পদক্ষেপ বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল।
এর আগে করাচির আকাশসীমায় ৩৩ হাজার ফুটের নিচে প্লেন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। উরি হামলার পরে ভারতের প্রত্যাঘাত পাকিস্তানকে চাপে ফেলে দিয়েছে। সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর আরও আক্রমণের আশঙ্কা করছে পাক সরকার। সেই কারণেই প্রথমে করাচিতে ৩৩ হাজার ফুটের নীচ দিয়ে ওড়া বিমান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। এরপর লাহোরেও এই নিষেধাজ্ঞা জারি হল। প্রায় গোটা দেশেই বিমানের উপর বিধি-নিষেধ জারি করা হয়েছে।
আকাশসীমায় এমন কড়াকড়ির কারণে পাকিস্তানের ওপর দিয়ে উপসাগরীয় দেশ বা পশ্চিম অভিমুখী ফ্লাইটগুলো রুট সংকটে বিলম্বিত হতে পারে বলে মত বিশ্লেষকদের।বিশ্লেষকরা বলছেন, নিজেদের আকাশসীমায় যুদ্ধবিমানের মহড়ার জন্য সাধারণত এভাবে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়ে থাকে। এর অর্থ পাকিস্তানও তাদের আকাশসীমায় যুদ্ধবিমানের মহড়া চালাতে করাচির পর লাহোরের আকাশসীমায় আংশিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে কার্যত ভারতের উত্তর-পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চল থেকে পশ্চিমা ও উপসাগরীয় দেশগুলো অভিমুখে চলাচলকারী ফ্লাইটগুলো বেশি বেকায়দায় পড়ে গেছে। তারা আগে পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করে সেসব দিকে গেলেও এখন রুট বদলাতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে গুজরাটের আহমেদাবাদ হয়ে আরব সাগরের উপর দিয়ে যেতে হচ্ছে ফ্লাইটগুলোকে।
এর বাইরেও রুট আবিষ্কারের চিন্তা করছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। তারা চাইছে উত্তরের ফ্লাইটগুলোকে সরাসরি জম্মু-কাশ্মীরের ওপর দিয়ে চিনের আকাশ দিয়ে নিয়ে পশ্চিমে যেতে। এক্ষেত্রে চিন কেমন সহযোগিতা করে তার দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে নয়াদিল্লিকে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের সরকারি বিমানসংস্থাকে ভারতের আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি আর দেওয়া কি না, সে বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর।
১৮ সেপ্টেম্বর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখার (লাইন অব কন্ট্রোল) পাশে কাশ্মীরের উরি সেনাঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা এখন চরমে। এই উত্তেজনার ধারাবাহিকতায় দু’পক্ষের কূটনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও যোগাযোগকেন্দ্রিক সম্পর্ক একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। তারই নজির হিসেবে লাহোরের আকাশসীমা কার্যত ভারতের জন্য বন্ধ করে দিলো পাকিস্তান।-